উদিনের আকাশে বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে যেন ফুটবল নাটকের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর অধ্যায় লেখা হলো। উয়েফা সুপার কাপে টটেনহ্যাম প্রায় স্পর্শ করেছিল শিরোপা। ৮৪ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থাকা অবস্থায় এমনটা ভাবাটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু লুইস এনরিকের প্যারিস সেন্ত জার্মেই (পিএসজি) সেই গল্পে লিখল অবিশ্বাস্য এক মোড়। যা শেষ পর্যন্ত ইতিহাসে জায়গা করে নিল ‘রূপকথার প্রত্যাবর্তন’ হিসেবে।

ম্যাচের শেষ ৫ মিনিটে শুরু হলো পিএসজির প্রত্যাবর্তনের যাত্রা। ৮৫ মিনিটে ভিতিনিয়ার নিখুঁত পাসে জাল খুঁজে নিলেন দক্ষিণ কোরিয়ান তারকা লি কাং-ইন। সময় গড়াল, যোগ হলো ইনজুরি টাইম। আর সেই সময়ের চতুর্থ মিনিটে উসমান দেম্বেলের বাঁ দিক থেকে তোলা দারুণ ক্রসে গনসালো রামোসের হেড ছুঁয়ে বল ঠাঁই নিলো জালে। মুহূর্তেই ২-২ সমতা, আর স্টেডিয়াম যেন হয়ে উঠল লাল-নীল উল্লাসের সাগর।

ফলে খেলা গড়াল টাইব্রেকারে। যেখানে শুরুটা পিএসজির জন্য ভালো ছিল না। প্রথম শটেই পোস্টে লেগে বল বাইরে চলে যায় ভিতিনিয়ার। কিন্তু নতুন গোলরক্ষক লুকাহ শুভালিয়ে দ্রুতই ফেরালেন আত্মবিশ্বাস। মিকি ফন দে ভেনের শট দুর্দান্তভাবে ঠেকিয়ে। এরপর টটেনহামের মাথিয়াস তেলও লক্ষ্যভ্রষ্ট হন। ভিতিনিয়ার ব্যর্থতা সত্ত্বেও টানা চারটি শট নিখুঁতভাবে জালে পাঠিয়ে ৪-৩ ব্যবধানে জিতে নেয় পিএসজি। এই ম্যাচ দিয়েই লুকাহ শুভালিয়ে প্রমাণ করলেন, জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মার উত্তরসূরি হিসেবে তার আগমন নিছক কাকতালীয় নয়।

আরো পড়ুন:

ট্রেবল জয়ের নায়ককেও বিদায় জানালো পিএসজি, দোন্নারুম্মার অধ্যায়ের সমাপ্তি

এমবাপ্পের ঝলকে মৌসুম শুরুর আগে রিয়ালের দুর্দান্ত জয়

টটেনহ্যামের হয়ে অধিনায়ক হিসেবে এটি ছিল আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান রোমেরোর প্রথম ম্যাচ। পাশাপাশি নতুন কোচ টমাস ফ্র্যাঙ্কেরও প্রতিযোগিতামূলক অভিষেক। কিন্তু যাত্রার শুরুতেই রূপকথার মতো এক প্রত্যাবর্তনের শিকার হয়ে হাতছাড়া হলো ট্রফি।

পুরো ম্যাচে ৭৪ শতাংশ সময় বলের দখল ছিল পিএসজির, যারা ১২ শট নিয়েছে পোস্টে, যার মধ্যে ৩টি সরাসরি লক্ষ্যে। টটেনহাম ১৩ শট নিলেও ৫টি ছিল লক্ষ্যে। ৩৯ মিনিটে ভ্যান দে ভেনের গোলে এগিয়ে যায় তারা। আর বিরতির পরই রোমেরো মাথা ছুঁইয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ফরাসি জায়ান্টদের তাণ্ডবে সবকিছু ভেসে যায়।

উদিনের রাত তাই শুধু একটি শিরোপা জয়ের গল্প নয়, এটি ছিল এক অনবদ্য প্রত্যাবর্তনের, যা ইউরোপিয়ান ফুটবলের স্মৃতিতে রয়ে যাবে অনেকদিন।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল প এসজ প এসজ

এছাড়াও পড়ুন:

ফায়ারফক্সে আসছে এআই উইন্ডো

কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা বা এআইকেন্দ্রিক ব্রাউজারের বাজার দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যেই ফায়ারফক্সে নতুন এআই উইন্ডো নামের বিশেষ সুবিধা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মজিলা। সুবিধাটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় প্রয়োজন অনুসারে একটি সমন্বিত এআই সহকারীর সাহায্য নিতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াই থাকবে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণে।

এক ব্লগ বার্তায় মজিলা জানায়, এআই উইন্ডো ব্রাউজিংয়ে ক্ষেত্রে এআই নির্দেশনা ও ব্যক্তিগত সহায়তার সুবিধা দেবে। সুবিধাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় থাকবে না। আগ্রহী ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজে থেকেই চালু করবেন। যেকোনো সময় বন্ধ করা যাবে। এআইনির্ভর এই সুবিধা ওপেন সোর্স প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে।

ফিচারটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ কিছু ব্যবহারকারীর কাছে উপলব্ধ হয়েছে। মজিলা জানিয়েছে, যে কেউ চাইলে আগের মতোই ফায়ারফক্স ব্যবহার করে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতা পাবেন। আরও বেশি গোপনীয়তা চাইলে প্রাইভেট উইন্ডো ব্যবহার করতে পারবেন। এআই উইন্ডো ব্রাউজিংকে আরও ব্যক্তিগত উপায়ে ব্যবহারের সুযোগ দেবে।

এআই চালিত ব্রাউজারের ব্যবহার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এখন সার্চবারের জায়গায় চ্যাটবট যুক্ত করা বা সম্পূর্ণ এআইনির্ভর ব্রাউজার তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস বা পারপ্লেক্সিটির কমেট পুরোপুরি এআই এজেন্টকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।

ভবিষ্যতে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলনির্ভর ব্রাউজারের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতার মধ্যেও ভিন্ন অবস্থান তৈরি করতে চেষ্টা করছে মজিলা। তারা বলছে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা—এই তিন নীতি সামনে রেখে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবকে সবার জন্য উন্মুক্ত, মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চায় মজিলা। মজিলার ভাষ্য অনুযায়ী, ফায়ারফক্সে কোনো একক ইকোসিস্টেমে ব্যবহারকারীকে আটকে রাখা হবে না। এআই ব্যবহারের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতাও থাকবে না। কখন, কীভাবে বা আদৌ এটি ব্যবহার করবেন কি না, এমন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যবহারকারীর।

এ বছরের জুনে ফায়ারফক্সের অ্যাড্রেসবারে থাকা ইউনিফায়েড সার্চ সুবিধায় সরাসরি পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের মাধ্যমে অনুসন্ধানের অপশন যুক্ত করে মজিলা। নতুন এআই উইন্ডো ফিচার যুক্ত হলে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ