দিনে বিক্রি হয় ৫০০ প্যাকেট, কুকারস সেভেনের খিচুড়ির এত জনপ্রিয়তার রহস্য কী?
Published: 15th, August 2025 GMT
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন সংবিধানের জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি নিয়ে এগোবে এনসিপি
ফ্রিডম পার্টি যেমন স্বৈরশাসক জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে ‘আপস’ করেছিল কিংবা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) যেভাবে ‘হঠকারিতার’ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, সে ধরনের কোনো পথে যেতে চায় না জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নিজেদের লক্ষ্যে ‘পরিষ্কার ও সৎ’ থেকে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের এজেন্ডাকে সামনে রেখে কাজ করবে দলটি।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দুই দিন ধরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সাধারণ সভা হয়। প্রায় দেড় শ নেতার এ সভার আলোচনায় এনসিপির এই রাজনৈতিক চিন্তা উঠে এসেছে। দুই দিনে প্রায় ১৭ ঘণ্টার আলোচনায় জুলাই মাসজুড়ে সারা দেশে পদযাত্রার পর্যালোচনা, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা, এনসিপির রাজনৈতিক অবস্থান ও আগামীর পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
কক্সবাজার সফর নিয়ে আলোচনা
গত জুলাই মাসে দেশের ৬০টি জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচি করেছে এনসিপি। কোন জেলায় কর্মসূচি কেমন হলো, কোথায় আরও ভালো করা যেত—এসব বিষয় নিয়ে সাধারণ সভায় আলোচনা হয়। গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা ঘিরে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার পর মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে পদযাত্রা করেনি এনসিপি। আর ২১ জুলাই উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পর ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে পদযাত্রা হয়নি। এই পাঁচ জেলায় শিগগিরই পদযাত্রা আয়োজনের ব্যাপারে সভায় আলোচনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে কোনো তারিখ ঠিক হয়নি।
৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসে প্রকাশিত জুলাই ঘোষণাপত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সভায় সমালোচনা করা হয়। বলা হয়, এই ঘোষণাপত্রে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি।
৫ আগস্ট এনসিপির পাঁচ নেতার কক্সবাজার সফর ঘিরে সৃষ্ট বিতর্ক নিয়েও সভায় দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা হয়। আলোচনায় নেতাদের অনেকে বলেছেন, ৫ আগস্টের মতো ঐতিহাসিক একটি দিনে এমন সফরে যাওয়ার ক্ষেত্রে এনসিপির ওই নেতাদের সতর্ক থাকা উচিত ছিল। তবে বিষয়টি নিয়ে যেভাবে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ হয়েছে, যেভাবে এনসিপি নেতাদের ওপর অযাচিত গোয়েন্দা নজরদারি করা হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার কথাও বলেছেন নেতাদের অনেকে।
‘আপসকামিতা বা হঠকারিতা নয়’
সাধারণ সভায় অংশ নেওয়া এনসিপির চারজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা বলেন, এনসিপি নির্বাচন পেছাতে চায়—বিভিন্ন পক্ষের পরিচালিত এমন প্রচারণা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়। তবে এনসিপি এমন কোনো তৎপরতায় যাবে না। পরবর্তী নির্বাচন নয়, বরং সংস্কারের জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়টি এ মুহূর্তে দলের প্রধান অগ্রাধিকার। এর জন্য রাজনৈতিক চাপ তৈরি করবে এনসিপি।
এনসিপি ফ্রিডম পার্টির মতো আপসকামী যেমন হবে না, তেমনি জাসদের মতো হঠকারীও হবে না—এটি আলোচনায় বেশ জোরালোভাবে উঠে আসে বলে জানিয়েছেন এনসিপির একজন দায়িত্বশীল নেতা। তিনি বলেন, এনসিপির নিজেদের লক্ষ্যে পরিষ্কার ও সৎ থেকে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের জন্য কাজ করবে।
নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়ন করতে হলে আমলাতন্ত্র, ব্যবসায়ী সমাজ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনতে হবে—এমন কথাও তোলা হয় আলোচনায়। পরে বলা হয়, সামনের দিনে এনসিপি এটি নিয়েও রাজনৈতিকভাবে কাজ করবে।
প্রথমে বুধবার বিকেল পাঁচটা থেকে রাত তিনটা পর্যন্ত সভা করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। সেই রাতে বৈঠক মুলতবি হয়। পরে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে আবার বৈঠক শুরু হয় বাংলামোটরের দলীয় কার্যালয়ে। চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। সভা শেষে এনসিপির নেতারা ‘এবার চায় জনগণ, গণপরিষদ নির্বাচন’, ‘বাংলাদেশের সমাধান, নতুন এক সংবিধান’ বলে স্লোগান দেন।
নেতারা জানান, বর্তমান সংবিধান কেন আর চলতে পারে না, কেন নতুন সংবিধান প্রয়োজন—এসব বিষয়ে সভায় দীর্ঘ আলোচনা হয়। এনসিপি নতুন সংবিধানের জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিকে সামনে রেখে এগোতে চায়।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই দিনব্যাপী সাধারণ সভায় মূলত আমাদের আগামীর রাজনৈতিক লাইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিচার, মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে জুলাই সনদ, নতুন সংবিধান ও গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক পরিকল্পনা ও কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়ও আলোচনায় এসেছে।’