গাজায় ইসরায়েলি হামলা: ‘আমার হাতে যা ছিল, তা নিয়েই পালিয়েছি’
Published: 25th, September 2025 GMT
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে গাজায় আবারও ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গতকাল বুধবার ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৮৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা আগের দিনের তুলনায় দ্বিগুণ।
গতকাল রাতে গাজার নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরের আল-আহলি স্টেডিয়ামে এক বিমান হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাতজন নারী ও দুটি শিশু। স্টেডিয়ামটি বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
গাজা সিটি থেকে পালিয়ে আসা এক নারী নাজওয়া আল–জাজিরাকে বলেন, ‘আমার হাতে যা ছিল, তা নিয়েই পালিয়েছি। আমাদের ভয় লাগছে। পরিবহনের খরচ অনেক বেশি, আমাদের পক্ষে বাড়ি থেকে জিনিসপত্র আনা সম্ভব নয়।’
আরও পড়ুনআরও অনেক দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে: ফ্রান্সের দূত১২ ঘণ্টা আগেরাতভর তীব্র হামলার পর জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরীর সাধারণ মানুষের মধ্যে ‘আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন’ এবং লাখো মানুষকে দক্ষিণে পালাতে বাধ্য করছেন।
তবে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান আইয়াল জামির দাবি করেন, গাজা সিটির বেশির ভাগ মানুষ নিরাপত্তার জন্য দক্ষিণে চলে গেছেন এবং সেনারা ‘পদ্ধতিগত ও সুসংগঠিত অগ্রযাত্রা’ অব্যাহত রাখবেন। জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন এ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ৬৫ হাজার ৪১৯ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে হামলায় ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হওয়ার পর ইসরায়েল গাজায় হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
মার্কিন ‘আগ্রাসনের’ হুমকি, জরুরি অবস্থা জারি করতে প্রস্তুত ভেনেজু
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘আগ্রাসনের’ হুমকির প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে প্রস্তুত।
সাম্প্রতিক সময়ে ভেনেজুয়েলার সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক প্রাণঘাতী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সোমবার এ মন্তব্য করেন। খবর আলজাজিরার।
আরো পড়ুন:
ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করল ওরেগন
যুক্তরাষ্ট্রে গির্জায় বন্দুক হামলা, নিহত ৪
মাদুরো এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “আমেরিকান সাম্রাজ্য ভেনেজুয়েলায় সামরিক হামলা চালালে, যাতে আমাদের জনগণ এবং দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করা যায়, সে লক্ষ্যে সংবিধানের আলোকে একটি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে আজ আমরা পরামর্শ প্রক্রিয়া শুরু করেছি।”
এর আগে ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ বিদেশি কূটনীতিকদের বলেন, “প্রেসিডেন্ট মাদুরো একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের মাতৃভূমিকে আক্রমণ করার দুঃসাহস দেখায়, তবে এই ডিক্রি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তাকে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ‘বিশেষ ক্ষমতা’ প্রদান করবে।”
এই ডিক্রি মাদুরোকে সারা দেশে সৈন্য মোতায়েনের অনুমতি দেবে এবং জনসেবা ও তেল শিল্পের ওপর সামরিক কর্তৃত্ব দেবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভেনেজুয়েলর উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটটি যুদ্ধজাহাজ, একটি পরমাণু শক্তি চালিত সাবমেরিন ও এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন এই অভিযানকে মাদক পাচার মোকাবিলার একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দাবি করলেও, বিশ্লেষকদের মতে এটি মাদুরোর ওপর চাপ তৈরির কৌশল।
সাম্প্রতিক সময়ে ভেনেজুয়েলার আন্তর্জাতিক জলসীমায় কমপক্ষে তিনটি নৌযানে বোমা হামলা চালিয়েছে মার্কিন সেনাবাহিনী। দাবি করেছে, সবগুলো নৌকা ‘অবৈধ মাদক পাচার করছিল’।
এসব হামলায় ভেনেজুয়েলার কমপক্ষে ১৭ নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ভেনেজুয়েলা বলছে যে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। মাদুরোর নেতৃত্বধীন ভেনেজুয়েলা সরকার দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ‘সাম্রাজ্যবাদের’ বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে আসছে।
আলজাজিরা জানিয়েছে, বিদ্যমান পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা ‘ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে মাদক পাচারকারীদের লক্ষ্যবস্তু’ করার লক্ষ্যে বিমান হামলার পরিকল্পনা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারে ভেনেজুয়েলার বড় ভূমিকা থাকার মার্কিন দাবি প্রত্যাখ্যান করে মাদুরো বলেছেন, তিনি চান দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ‘ঐতিহাসিক এবং শান্তিপূর্ণ’ হোক।
ঢাকা/ফিরোজ