প্রায় তিন বছর ধরে ডেঙ্গুর চার ধরনের মধ্যে ধরন (ভেরিয়েন্ট)-২-এ বেশি মানুষ আক্রান্ত হতেন। চলতি বছর এর সঙ্গে ধরন-৩-এ আক্রান্ত বেড়ে যাচ্ছে। এই ধরনে বেশি আক্রান্তের ঘটনা ঘটছে রাজধানীতে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। নতুন এ ধরনের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রোগীর ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা। এখন পর্যন্ত রাজধানীতে রোগ অনুপাতে ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার আগের দুই বছরের চেয়ে বেশি।

জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক মুশতাক হোসেন বলেন, নতুন ধরনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াটা একটা বিপৎসংকেত। আগের ধরন-২ আক্রান্ত রোগী আবার ধরন-৩–এ আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকেন। আর যদি দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হন, তবে তাঁর মৃত্যুঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়।

এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের ২৬ শতাংশ ঢাকা মহানগরীর। কিন্তু মোট মৃত্যুর ৬৩ শতাংশই হয়েছে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে। এসব রোগী যে ঢাকারই, তা কিন্তু নয়। অনেক রোগী ঢাকার বাইরের। কিন্তু জটিলতা নিয়ে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তির পর মৃত্যু হয়েছে।

ডেঙ্গুর ১, ২, ৩ ও ৪ নামে চারটি ধরন আছে। এর মধ্যে ২০২৩ সাল থেকে ধরন-২ ছিল বেশি। চলতি বছরের শুরুর দিকেও এ ধরনের প্রকোপ বেশি ছিল। কিন্তু জুন মাসে বরগুনায় ডেঙ্গুর ব্যাপক বিস্তারের পর সেখানে জরিপ করে আইইডিসিআর জানায়, সেখানে আক্রান্তদের মধ্যে ৪৬ শতাংশ ধরন-৩–এ আক্রান্ত। রাজধানীর বাইরে চলতি বছর এখন পর্যন্ত বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

তবে শুধু বরগুনাতেই নয়, এখন রাজধানীতেও ধরন-৩–এর প্রকোপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমীনা শিরিন। গতকাল তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ধরন-২–এর প্রাধান্য বেশি। কিন্তু ঢাকায় এর পাশাপাশি ধরন-৩–এ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এটা মাসখানেক হলো আমরা দেখছি। দেশের অন্য এলাকার তুলনায় ঢাকায় ধরন-৩–এ সংক্রমণের হার বেশি। নতুন ধরনের আক্রান্ত বেড়ে যাওয়ায় সংক্রমণ পরিস্থিতি জটিল হয়ে যেতে পারে।’

ডেঙ্গু রোগী.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ধরন র র ধরন

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালিকে হারিয়ে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপে নরওয়ে

আরলিং হালান্ড যেন নিজেই ইতিহাস লিখে চলেছেন। দুই মিনিটের ব্যবধানে তার দুর্দান্ত দুই গোল ইতালিকে সান সিরোতে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে নরওয়েকে নিয়ে গেল ১৯৯৮ সালের পর তাদের প্রথম বিশ্বকাপে। ম্যানচেস্টার সিটির এই সুপারস্টারের গ্রুপপর্বে গোলসংখ্যা দাঁড়াল ১৬। যা পোল্যান্ডের রবার্ট লেভানদোভস্কির রেকর্ডের সমান।

‘গ্রুপ–আই’ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোয়ালিফাই করতে নরওয়ের সামনে ছিল শুধু গণিতের হিসাব মেলানোর অপেক্ষা। তাদের বাদ দিতে ইতালির দরকার ছিল অবাস্তব এক নয় গোলের ব্যবধান। যা মাঠে সম্ভব হয়নি। তাই দীর্ঘ ২৮ বছর পর বিশ্বমঞ্চে ফিরতে যাচ্ছে নরওয়ে। আত্মবিশ্বাসও আকাশছোঁয়া।

আরো পড়ুন:

আসিফের মন্তব্যে বাফুফের কাছে বিসিবি সভাপতির দুঃখ প্রকাশ

অদম্য স্পেন বিশ্বকাপের দোরগোড়ায়

গত জুনে ইতালিকে ৩–০ গোলে হারানো ম্যাচটাই শেষ পর্যন্ত লুচিয়ানো স্পালেত্তির চাকরি শেষ করে দেয়। তার উত্তরসূরি জেনারো গাত্তুসো এবার প্লে-অফের প্রস্তুতি নেবেন।

গাত্তুসো তার সেরা খেলোয়াড়দেরই দলে ফেরান। মোলদোভার বিপক্ষে খেলা দলে কেবল জিয়ানলুকা মানচিনি টিকে থাকেন। অন্যদিকে নরওয়ের একমাত্র পরিবর্তন, এস্তোনিয়ার বিপক্ষে খেলা অস্কার ববের জায়গায় নামেন ক্রিস্টিয়ান থরস্টভেট।

প্রথমার্ধজুড়ে ইতালি ছিল আধিপত্যে। ফেদেরিকো দিমারকোর ভলিটি সামান্য বাইরে গেলে ১১তম মিনিটে আলো ছড়ান মাত্র ২০ বছর বয়সী ফ্রানচেস্কো পিও এসপোসিতো। দুর্দান্ত টার্ন আর নিখুঁত ফিনিশ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলেন তিনি।

এরপর এসপোসিতো আরেকটি হেড বাইরে পাঠালেও দুই দলই তেমন পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। মাঝপথে রেফারির সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে গাত্তুসো কার্ডও দেখেন।

বিরতির পর যেন নতুন উদ্যমে মাঠে নামে নরওয়ে। আলেকজান্ডার সর্লোথের শট বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপর চুলের অনন্য সাজে পরিচিত জুলিয়ান রাইয়েরসনও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি।

অবশেষে ৬৩তম মিনিটে গোল মেলে। সর্লোথের পাস থেকে দারুণ ড্রাইভে দূর কোণে বল পাঠান আন্তোনিও নুসা। জিয়ানলুইজি দোনারুম্মা নিকটের পোস্টে চেষ্টা করেও আটকাতে পারেননি।

এরপর নুসার আরেকটি নিশ্চিত গোল দোনারুম্মা ঠেকালেও ম্যাচের মঞ্চ তখন তৈরি হালান্ডের জন্য। মানচিনির ঘন পাহারা ভেদ করেই তিনি নিজের ছন্দ খুঁজে নেন।

৭৮ মিনিটে বদলি নেমে চমৎকার ফুটওয়ার্কে বল এগিয়ে দেন অস্কার বব। সেখান থেকেই ভলিতে দুর্দান্ত ফিনিশ করেন হালান্ড। মাত্র এক মিনিট পর থরস্টভেটের ডান দিকের ক্রসে আবার গোল। ঠিক জায়গায় ঠিক সময়ে পৌঁছে সহজ ট্যাপ-ইনে বল জালে জড়ান।

শেষ দিকে মাতেও পোলিতানোর শট অল্পের জন্য বাইরে গেলেও ইতালির আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না। যোগ করা সময়ে উলভসের ইয়র্গেন স্ট্র্যান্ড লার্সেন ডান দিক দিয়ে দারুণ দৌড়ে মানচিনিকে কাটিয়ে বক্রশটে দোনারুম্মাকে পরাস্ত করলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-১।

রাতটা তাই নরওয়ের। হালান্ডের জোড়া গোলের উৎসবে তারা ফিরল বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে, দুই যুগের বেশি সময় পর।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ