ফিলিস্তিনি কবিতা সবার পড়া উচিত
Published: 26th, September 2025 GMT
সম্প্রতি ‘জেরুজালেম’ নামের একটি রান্নার বই পড়তে গিয়ে ভূমিকায় বইটার সহলেখকদের একটি পর্যবেক্ষণ দেখে অভিভূত হয়েছি। বইটির একজন শেফ ইসরায়েলি, অন্যজন ফিলিস্তিনি। ইয়োতাম অটোলেঙ্গি ও সামি তামিমি লিখেছেন, জেরুজালেমে ‘মনে হয় খাবারই একমাত্র সংযোগকারী শক্তি’। মানে এ কারণেই শহরটাকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দুই দেশ রাজধানী হিসেবে দাবি করে। তাদের রান্নার ঐতিহ্যের ইতিহাস সরল নয়। তবু এই শেফরা খাবার তৈরিকে মনে করেন একটি অনন্য মানবিক কাজ। একটা না–বলা ভাষার মতো, যা এমন দুজনের ভেতরে সংক্রমিত হয়ে পড়ে, যারা অন্যথায় শত্রু হতে পারত।
মধ্যপ্রাচ্যের খবরের আপডেট না ঘেঁটে আমার তাই ‘জেরুজালেম’ বইটা ওলটাতে ভালো লাগছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, মূলধারার গণমাধ্যমের মার্কিন কভারেজ, এমনকি বাস্তব জীবনের আলাপচারিতাও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ ও হারানো প্রাণগুলোকে বিমূর্ত করে ফেলছে। এমনিতেও যখনই কর্মক্ষেত্রে বা বন্ধুদের আলোচনায় গাজার নিত্যদিনের মানবিক সংকটের কথা আসে, আমি চুপচাপ উঠে চলে যাই। কারণ, মৃত্যুকে আড্ডার বিষয় করতে ভালো লাগে না। আমি নিজেও ফিলিস্তিনি অভিবাসীর সন্তান, গাজায় আমার পরিবারের সদস্যরা থাকেন। কিন্তু আমি ফিলিস্তিনের কষ্টের মুখপাত্র হতে চাই না।
ফিলিস্তিনের সহিংসতার পাঠ আমাকে যত ব্যথা আর হতাশা দিক, কবিতা তেমন নয়। কবিতা আমাকে সেই ভূমির বিস্ময় ও জটিলতার গভীরে নিয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিলিস্তিনি কবিতা ভাগাভাগি করা মানুষের সংখ্যা যেভাবে হু হু করে বাড়ছে, তাতে বোঝা যায়, শুধু আমি নই, বিশ্বজুড়ে পাঠকদের জন্যও তা সত্য।কিন্তু ফিলিস্তিনের সহিংসতার পাঠ আমাকে যত ব্যথা আর হতাশা দিক, কবিতা তেমন নয়। কবিতা আমাকে সেই ভূমির বিস্ময় ও জটিলতার গভীরে নিয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিলিস্তিনি কবিতা ভাগাভাগি করা মানুষের সংখ্যা যেভাবে হু হু করে বাড়ছে, তাতে বোঝা যায়, শুধু আমি নই, বিশ্বজুড়ে পাঠকদের জন্যও তা সত্য। মাহমুদ দারবিশ, মুসআব আবু তোহা, লেনা খালাফ তুফফাহা এবং অন্য ফিলিস্তিনি কবিদের কবিতা টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং এক্সে (সাবেক টুইটার) ভাইরাল হচ্ছে, অজস্র শেয়ার হচ্ছে। টিকটকে #palestinianpoetry হ্যাশট্যাগের ভিউ ২ লাখ ৬ হাজারের বেশি, আর #mahmouddarwishpoetry-এর ভিউ ১৭ দশমিক ৮ মিলিয়নের বেশি। পোয়েট্রি ফাউন্ডেশন ও একাডেমি অব আমেরিকান পোয়েটস ফিলিস্তিনি কবিদের কাজ শেয়ার করছে, আমার পরিবার ও আমার পরিচিত লোকজনের সাহিত্য চক্রের অসংখ্য পোস্টের কথা নাই–বা বললাম।
আমি নিজে কবি বলে ধারণা করি, কবিতার জনপ্রিয়তা বাড়ার অনেক কারণ আছে। কবিতা বিভ্রান্তি ও কষ্ট প্রকাশ করতে পারে এ কারণেই যে কবিতা কোনো সমস্যা সমাধানের মাধ্যম নয়। কবিতা কেবল মানবতাকে উৎসর্গ করতে, রাজনৈতিক খবরের আড়াল ভেদ করতে এবং ঐতিহাসিক উত্তেজনার মুহূর্তকে স্মরণীয়, শেয়ারযোগ্য পঙ্ক্তি রচনা করতে পারে। একটা পঙ্ক্তি কবিতার পূর্ণাঙ্গ রূপ দেখায় না, কেবল একটা ঝলক দেখায়। সেই কবিতায় যদি কোনো যুক্তি থাকেও এ ধরনের লাইন পুরো কবিতার যুক্তিকে প্রশ্রয় দেয় না। তবে সেই কয়েকটি সযত্নে বাছাই করা শব্দে কবিতা এমন বিদ্যুৎ সৃষ্টি করতে পারে, যা পাঠকের মনে আকাঙ্ক্ষা জাগায় আর পুঁতে দেয় কৌতূহল, ব্যথা ও সহানুভূতি। এ মুহূর্তে এমন কবিতার সঙ্গেই পাঠকদের যুক্ত করা সবচেয়ে জরুরি, যা উপর্যুক্ত আবেগের জন্ম দেয়।
ফিলিস্তিনি কবি নুর হিন্দি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফায়ারফক্সে আসছে এআই উইন্ডো
কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা বা এআইকেন্দ্রিক ব্রাউজারের বাজার দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যেই ফায়ারফক্সে নতুন এআই উইন্ডো নামের বিশেষ সুবিধা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মজিলা। সুবিধাটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় প্রয়োজন অনুসারে একটি সমন্বিত এআই সহকারীর সাহায্য নিতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াই থাকবে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণে।
এক ব্লগ বার্তায় মজিলা জানায়, এআই উইন্ডো ব্রাউজিংয়ে ক্ষেত্রে এআই নির্দেশনা ও ব্যক্তিগত সহায়তার সুবিধা দেবে। সুবিধাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় থাকবে না। আগ্রহী ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজে থেকেই চালু করবেন। যেকোনো সময় বন্ধ করা যাবে। এআইনির্ভর এই সুবিধা ওপেন সোর্স প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে।
ফিচারটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ কিছু ব্যবহারকারীর কাছে উপলব্ধ হয়েছে। মজিলা জানিয়েছে, যে কেউ চাইলে আগের মতোই ফায়ারফক্স ব্যবহার করে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতা পাবেন। আরও বেশি গোপনীয়তা চাইলে প্রাইভেট উইন্ডো ব্যবহার করতে পারবেন। এআই উইন্ডো ব্রাউজিংকে আরও ব্যক্তিগত উপায়ে ব্যবহারের সুযোগ দেবে।
এআই চালিত ব্রাউজারের ব্যবহার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এখন সার্চবারের জায়গায় চ্যাটবট যুক্ত করা বা সম্পূর্ণ এআইনির্ভর ব্রাউজার তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস বা পারপ্লেক্সিটির কমেট পুরোপুরি এআই এজেন্টকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।
ভবিষ্যতে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলনির্ভর ব্রাউজারের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতার মধ্যেও ভিন্ন অবস্থান তৈরি করতে চেষ্টা করছে মজিলা। তারা বলছে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা—এই তিন নীতি সামনে রেখে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবকে সবার জন্য উন্মুক্ত, মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চায় মজিলা। মজিলার ভাষ্য অনুযায়ী, ফায়ারফক্সে কোনো একক ইকোসিস্টেমে ব্যবহারকারীকে আটকে রাখা হবে না। এআই ব্যবহারের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতাও থাকবে না। কখন, কীভাবে বা আদৌ এটি ব্যবহার করবেন কি না, এমন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যবহারকারীর।
এ বছরের জুনে ফায়ারফক্সের অ্যাড্রেসবারে থাকা ইউনিফায়েড সার্চ সুবিধায় সরাসরি পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের মাধ্যমে অনুসন্ধানের অপশন যুক্ত করে মজিলা। নতুন এআই উইন্ডো ফিচার যুক্ত হলে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস