‘আমরা এহন কী নিয়া বাঁচমু। ও বাজান, বাজান রে, আমাগো রাইখা কই চইলা গেলি রে।’ বাড়ির বারান্দায় বসে বিলাপ করে যাচ্ছিলেন পানিতে ডুবে মারা যাওয়া সোয়াদের মা ইয়াসমিন বেগম। পাশেই বিলাপ করছিলেন শিশুটির বাবা শরিফউদ্দিন মৃধা। মুখোমুখি আরেকটি বাড়িতে অঝোরে কাঁদছিলেন আরেক শিশু তৌসিফের মা–বাবা।

ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ভাসানচরে গতকাল বৃহস্পতিবার মালেকা বেগম (৬৮) এবং তাঁর দুই নাতি সোয়াদ (৬) ও তৌসিফ (৭) বাড়ির পাশের কুমার নদে ডুবে যায়। সন্ধ্যার দিকে মালেকা ও তৌসিফের লাশ ভেসে ওঠে। আজ শুক্রবার সকালে পাওয়া যায় সোয়াদের লাশ। এরপর সকাল ৯টার লাশটি নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামটির মৃধাবাড়িতে। পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। এদিকে আজ দুপুরে সোয়াদের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

আজ বেলা ১১টার দিকে মৃধাবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের তিন সদস্যকে হারিয়ে একযোগে কান্না করছেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা। তাঁদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে অনেকেই শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ছিলেন। মৃধাবাড়ির আঙিনায় মুখোমুখি অবস্থানে জহিরুল ইসলাম মৃধা ও তাঁর ভাই শরিফউদ্দিন মৃধার বাড়ি। এই দুই ভাইয়ের সন্তান ও মা পানিতে ডুবে মারা গেছেন।

আরও পড়ুনকুমার নদে দুই নাতিকে উদ্ধার করতে যান দাদি, পরে তিনজনের লাশ উদ্ধার৩ ঘণ্টা আগে

পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জহিরুল ইসলামের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে তৌসিফ ছোট। অন্যদিকে শরিফউদ্দিনের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সোয়াদও ছোট।

দুর্ঘটনার বিবরণ দিয়ে সোয়াদের খালাতো বোন শারমীন আক্তার বলেন, গতকাল দুপুরে মালেকা বেগম বাড়ির সবার অজান্তে মগ নিয়ে কুমার নদে গোসল করতে যান। তখন তৌসিক ও সোয়াদও নদীর ঘাটে যায়। তারা ঘাটে দাদিকে দেখে উৎসাহিত হয়ে পানিতে নামে। তবে কেউই সাঁতার জানত না। একপর্যায়ে দুই ভাই পানিতে তলিয়ে গেলে মালেকা তাদের বাঁচাতে গিয়ে নদে নামেন। পরে তিনিও তলিয়ে যান।

নিজ ঘরে বসে অঝোরে কেঁদে যাচ্ছিলেন তৌসিকের মা মিনা বেগম। বলছিলেন, ‘ছেলেকে বড় করমু, মানুষ করমু; সব আশা শেষ হইয়া গেল। আমার বাজান নাই, এ কথা একবারের জন্য ভাবতে পারছি না। আমারে ছাইড়া কোথায় গেলি রে। ফিরা আয় বাবা, আমার কাছে ফিরা আয়।’

অম্বিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাইদ চৌধুরী বলেন, মৃধাবাড়ির পাশেই তাঁর বাড়ি। মর্মান্তিক এ ঘটনায় এলাকার মানুষ শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কৃষিবিদ সিডের ৬ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে এসএমই প্ল্যাটফর্মে বিবিধ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কৃষিবিদ সিড লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৬ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ১ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারের বিপরীতে ০.১০ পয়সা নগদ লভ্যাংশ পাবেন শেয়ারহোল্ডাররা।

২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

মনোস্পুলের প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে ৪.৩৮ শতাংশ

এনার্জিপ্যাকের লভ্যাংশ ঘোষণা

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে রবিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তথ্য মতে, ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় হাইব্রিড প্ল্যাটফর্মে। ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে বিতরণে রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ ডিসেম্বর।

২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.৬৮ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.৬৭ টাকা।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২.৪৫ টাকা।

এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্য সীমা থাকবে না।

ঢাকা/এনটি/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ