বৃষ্টি বিঘ্নতায় থেমে থাকা জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টি অবশেষে আজ শুক্রবার থেকে সিলেটে ফিরলো রঙিন আবহ নিয়ে। আর ফিরেই পেলো রোমাঞ্চে ভরা এক ম্যাচ। যেখানে সৌম্য সরকার ও আফিফ হোসেনের দারুণ ফিফটি হার মানলো রাজশাহীর নাজমুল হোসেন শান্ত-হাবিবুর রহমান সোহানের ঝড়ের কাছে।

আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৮ উইকেটের দাপুটে জয়ে মাঠ ছাড়ে রাজশাহী বিভাগ। খুলনার করা ১৭১ রানের বড় সংগ্রহকেও তারা পরিণত করেছে মামুলি টার্গেট।

আরো পড়ুন:

বৃষ্টির বাধা কাটিয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে মাঠে ফিরছে এনসিএল

খারাপ আবহাওয়ায় স্থগিত হলো এনসিএল টি-টোয়েন্টি

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনার ইনিংস শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। স্কোরবোর্ডে মাত্র ১৩ রান, আর ততক্ষণে সাজঘরে তিন ব্যাটার! এমন বিপর্যয়ে যখন হতাশা ঘনাচ্ছে, তখন ভরসা জুগিয়েছেন সৌম্য সরকার ও আফিফ হোসেন।

চতুর্থ উইকেটে এই দুজন গড়লেন ৭২ বলে ১১৭ রানের বিশাল জুটি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে সৌম্য হাঁকান চারটি ছক্কা আর ছয়টি চার, খেলেন ৩৪ বলে ৬৩ রানের ঝড়ো ইনিংস। তবে শান্তর বলেই তার বিদায় ঘটে। অন্যপ্রান্তে আফিফও পৌঁছান অর্ধশতকে—৪৫ বলে ৫০ রান করে শফিকুল ইসলামের বলে আউট হন তিনি।

শেষ দিকে মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাহিদুল ইসলাম চেষ্টা করলেও বড় কোনো ঝড় তুলতে পারেননি। নির্ধারিত ২০ ওভারে খুলনার সংগ্রহ থামে ৭ উইকেটে ১৭১ রানে।

খুলনার ইনিংস শেষ হওয়ার পর ম্যাচের আসল গল্প লেখা শুরু হয় রাজশাহীর ওপেনারদের ব্যাটে। শান্ত ও সোহান যেন আগুনে ঝড় তুললেন। উদ্বোধনী জুটিতেই ১২.

৪ ওভারে দলকে পৌঁছে দেন ১৪৮ রানে!

সোহান ছিলেন সবচেয়ে বিধ্বংসী। মাত্র ৪৫ বলে ১০ চার ও ৬ ছক্কার ফোয়ারায় খেললেন ৯৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। সেঞ্চুরির পথে মাত্র ৬ রান দূরে থাকতে থামতে হয় তাকে। তবে তার ব্যাটিংয়েই জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই।

অপরপ্রান্তে নাজমুল হোসেন শান্ত খেললেন স্বস্তিদায়ক অথচ কার্যকর ইনিংস। ৩৯ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৬৫ রানে। সাব্বির হোসেন ২ রানে ফিরলেও শান্ত দলকে ২৩ বল হাতে রেখেই জয় এনে দেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা: ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭১ (সৌম্য ৬৩, আফিফ ৫০)।
রাজশাহী: ১৭.১ ওভারে ২ উইকেটে ১৭২ (সোহান ৯৪, শান্ত ৬৫*)
ফল: ৮ উইকেটে রাজশাহীর জয়।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালিকে হারিয়ে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপে নরওয়ে

আরলিং হালান্ড যেন নিজেই ইতিহাস লিখে চলেছেন। দুই মিনিটের ব্যবধানে তার দুর্দান্ত দুই গোল ইতালিকে সান সিরোতে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে নরওয়েকে নিয়ে গেল ১৯৯৮ সালের পর তাদের প্রথম বিশ্বকাপে। ম্যানচেস্টার সিটির এই সুপারস্টারের গ্রুপপর্বে গোলসংখ্যা দাঁড়াল ১৬। যা পোল্যান্ডের রবার্ট লেভানদোভস্কির রেকর্ডের সমান।

‘গ্রুপ–আই’ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোয়ালিফাই করতে নরওয়ের সামনে ছিল শুধু গণিতের হিসাব মেলানোর অপেক্ষা। তাদের বাদ দিতে ইতালির দরকার ছিল অবাস্তব এক নয় গোলের ব্যবধান। যা মাঠে সম্ভব হয়নি। তাই দীর্ঘ ২৮ বছর পর বিশ্বমঞ্চে ফিরতে যাচ্ছে নরওয়ে। আত্মবিশ্বাসও আকাশছোঁয়া।

আরো পড়ুন:

আসিফের মন্তব্যে বাফুফের কাছে বিসিবি সভাপতির দুঃখ প্রকাশ

অদম্য স্পেন বিশ্বকাপের দোরগোড়ায়

গত জুনে ইতালিকে ৩–০ গোলে হারানো ম্যাচটাই শেষ পর্যন্ত লুচিয়ানো স্পালেত্তির চাকরি শেষ করে দেয়। তার উত্তরসূরি জেনারো গাত্তুসো এবার প্লে-অফের প্রস্তুতি নেবেন।

গাত্তুসো তার সেরা খেলোয়াড়দেরই দলে ফেরান। মোলদোভার বিপক্ষে খেলা দলে কেবল জিয়ানলুকা মানচিনি টিকে থাকেন। অন্যদিকে নরওয়ের একমাত্র পরিবর্তন, এস্তোনিয়ার বিপক্ষে খেলা অস্কার ববের জায়গায় নামেন ক্রিস্টিয়ান থরস্টভেট।

প্রথমার্ধজুড়ে ইতালি ছিল আধিপত্যে। ফেদেরিকো দিমারকোর ভলিটি সামান্য বাইরে গেলে ১১তম মিনিটে আলো ছড়ান মাত্র ২০ বছর বয়সী ফ্রানচেস্কো পিও এসপোসিতো। দুর্দান্ত টার্ন আর নিখুঁত ফিনিশ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলেন তিনি।

এরপর এসপোসিতো আরেকটি হেড বাইরে পাঠালেও দুই দলই তেমন পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। মাঝপথে রেফারির সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে গাত্তুসো কার্ডও দেখেন।

বিরতির পর যেন নতুন উদ্যমে মাঠে নামে নরওয়ে। আলেকজান্ডার সর্লোথের শট বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপর চুলের অনন্য সাজে পরিচিত জুলিয়ান রাইয়েরসনও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি।

অবশেষে ৬৩তম মিনিটে গোল মেলে। সর্লোথের পাস থেকে দারুণ ড্রাইভে দূর কোণে বল পাঠান আন্তোনিও নুসা। জিয়ানলুইজি দোনারুম্মা নিকটের পোস্টে চেষ্টা করেও আটকাতে পারেননি।

এরপর নুসার আরেকটি নিশ্চিত গোল দোনারুম্মা ঠেকালেও ম্যাচের মঞ্চ তখন তৈরি হালান্ডের জন্য। মানচিনির ঘন পাহারা ভেদ করেই তিনি নিজের ছন্দ খুঁজে নেন।

৭৮ মিনিটে বদলি নেমে চমৎকার ফুটওয়ার্কে বল এগিয়ে দেন অস্কার বব। সেখান থেকেই ভলিতে দুর্দান্ত ফিনিশ করেন হালান্ড। মাত্র এক মিনিট পর থরস্টভেটের ডান দিকের ক্রসে আবার গোল। ঠিক জায়গায় ঠিক সময়ে পৌঁছে সহজ ট্যাপ-ইনে বল জালে জড়ান।

শেষ দিকে মাতেও পোলিতানোর শট অল্পের জন্য বাইরে গেলেও ইতালির আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না। যোগ করা সময়ে উলভসের ইয়র্গেন স্ট্র্যান্ড লার্সেন ডান দিক দিয়ে দারুণ দৌড়ে মানচিনিকে কাটিয়ে বক্রশটে দোনারুম্মাকে পরাস্ত করলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-১।

রাতটা তাই নরওয়ের। হালান্ডের জোড়া গোলের উৎসবে তারা ফিরল বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে, দুই যুগের বেশি সময় পর।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ