১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে ইরানের ধর্মীয় নেতারা সবচেয়ে ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি হচ্ছেন। দেশে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ এবং স্থগিত পারমাণবিক চুক্তির ফলে দেশটি আরো বিচ্ছিন্ন ও বিভক্ত হয়ে পড়েছে। রবিবার রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলমান অচলাবস্থার সমাধানে তেহরান এবং ইউরোপীয় শক্তি ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির মধ্যে শেষ আলোচনা সম্প্রতি ব্যর্থ হয়। এরপরে জাতিসংঘ শনিবার ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেছে।

পশ্চিমাদের সাথে আলোচনায় অগ্রগতি না হলে ইরানের অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতা আরো তীব্র হবে, যা জনসাধারণের ক্ষোভকে আরো বাড়িয়ে তুলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন চারজন ইরানি কর্মকর্তা এবং দুজন দেশীয় ব্যক্তি।

পশ্চিমাদের দাবি মেনে নেওয়ার ফলে শাসকগোষ্ঠী ভেঙে পড়ার এবং ‘পশ্চিমা চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার’ তেহরানের অটল অবস্থান ইসলামী প্রজাতন্ত্রের বিপ্লবী বিশ্বাসকে পাশ কাটানোর ঝুঁকি রয়েছে।

একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “ধর্মীয় নেতারা পাথর এবং কঠিন জায়গার মধ্যে আটকা পড়েছে। ইসলামী প্রজাতন্ত্রের অস্তিত্ব বিপদের মধ্যে রয়েছে। আমাদের জনগণ আরো অর্থনৈতিক চাপ বা অন্য কোনো যুদ্ধ সহ্য করতে পারবে না।”

এই উত্তেজনার সাথে আরো যোগ হচ্ছে পারমাণবিক কূটনীতি ব্যর্থ হলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলাতে ইসরায়েলি সম্ভাব্য পুনর্বার হামলা নিয়ে তেহরানের উদ্বেগ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরান যদি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুনরায় শুরু করে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাব্য পথ, তাহলে তারা আবারো ইরানে আঘাত করতে দ্বিধা করবে না।

আইন প্রণেতা গোলামালি জাফরজাদে ইমেনাবাদী বৃহস্পতিবার ইরানি মিডিয়াকে বলেছেন, “আমি মনে করি ইসরায়েলের আক্রমণাত্মক মনোভাব এবং বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে দেশটি যে শক্তিশালী সমর্থন পাচ্ছে তা বিবেচনা করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্য।”

ইরানের শাসকরা অর্থনৈতিক দুর্দশার তীব্রতরতার জন্য ক্রমবর্ধমান জনরোষের মুখোমুখি হচ্ছে, যা তেহরানের চ্যালেঞ্জগুলোকে আরো জটিল করে তুলছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শিমার মতো অনেক ইরানি আশঙ্কা করছেন যে, জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরুজ্জীবিত হলে অর্থনীতি আরো পঙ্গু হয়ে যাবে। কারণ দেশটি ইতিমধ্যেই বছরের পর বছর ধরে নিষেধাজ্ঞা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে আরো খারাপ চাপের মধ্যে রয়েছে।

দুই সন্তানের জননী ৩৬ বছর বয়সী শিমা তেহরান থেকে টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই জীবিকা নির্বাহের জন্য লড়াই করছি। আরো নিষেধাজ্ঞার অর্থ আরো অর্থনৈতিক চাপ। আমরা কীভাবে টিকে থাকব?”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ফায়ারফক্সে আসছে এআই উইন্ডো

কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা বা এআইকেন্দ্রিক ব্রাউজারের বাজার দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যেই ফায়ারফক্সে নতুন এআই উইন্ডো নামের বিশেষ সুবিধা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মজিলা। সুবিধাটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় প্রয়োজন অনুসারে একটি সমন্বিত এআই সহকারীর সাহায্য নিতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াই থাকবে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণে।

এক ব্লগ বার্তায় মজিলা জানায়, এআই উইন্ডো ব্রাউজিংয়ে ক্ষেত্রে এআই নির্দেশনা ও ব্যক্তিগত সহায়তার সুবিধা দেবে। সুবিধাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় থাকবে না। আগ্রহী ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজে থেকেই চালু করবেন। যেকোনো সময় বন্ধ করা যাবে। এআইনির্ভর এই সুবিধা ওপেন সোর্স প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে।

ফিচারটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ কিছু ব্যবহারকারীর কাছে উপলব্ধ হয়েছে। মজিলা জানিয়েছে, যে কেউ চাইলে আগের মতোই ফায়ারফক্স ব্যবহার করে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতা পাবেন। আরও বেশি গোপনীয়তা চাইলে প্রাইভেট উইন্ডো ব্যবহার করতে পারবেন। এআই উইন্ডো ব্রাউজিংকে আরও ব্যক্তিগত উপায়ে ব্যবহারের সুযোগ দেবে।

এআই চালিত ব্রাউজারের ব্যবহার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এখন সার্চবারের জায়গায় চ্যাটবট যুক্ত করা বা সম্পূর্ণ এআইনির্ভর ব্রাউজার তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস বা পারপ্লেক্সিটির কমেট পুরোপুরি এআই এজেন্টকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।

ভবিষ্যতে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলনির্ভর ব্রাউজারের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতার মধ্যেও ভিন্ন অবস্থান তৈরি করতে চেষ্টা করছে মজিলা। তারা বলছে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা—এই তিন নীতি সামনে রেখে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবকে সবার জন্য উন্মুক্ত, মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চায় মজিলা। মজিলার ভাষ্য অনুযায়ী, ফায়ারফক্সে কোনো একক ইকোসিস্টেমে ব্যবহারকারীকে আটকে রাখা হবে না। এআই ব্যবহারের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতাও থাকবে না। কখন, কীভাবে বা আদৌ এটি ব্যবহার করবেন কি না, এমন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যবহারকারীর।

এ বছরের জুনে ফায়ারফক্সের অ্যাড্রেসবারে থাকা ইউনিফায়েড সার্চ সুবিধায় সরাসরি পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের মাধ্যমে অনুসন্ধানের অপশন যুক্ত করে মজিলা। নতুন এআই উইন্ডো ফিচার যুক্ত হলে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ