খাগড়াছড়িতে জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা অবরোধ তুলে নিলেই ১৪৪ ধারাও প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল খন্দকার। একই সঙ্গে জেলার গুইমারার রামেসু বাজারে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘খাগড়াছড়ির চলমান পরিস্থিতি আলোচনার টেবিলে বসে সমাধান করতে চাই। অবরোধ আহ্বানকারীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। তাঁদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। জুম্ম ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে যে ৮টি দাবি দিয়েছে তার মধ্যে সাতটি অ্যাড্রেস করা হয়েছে। সহিংসতার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। সদস্যদের নাম পরে জানানো হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করতে চাই। তবে অবরোধ প্রত্যাহার করতে হবে। ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়ার সঙ্গে অবরোধের বিষয়টি সম্পর্কিত।’

পাহাড়ি এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা সড়ক অবরোধ চলাকালে গত রোববার রণক্ষেত্র হয়ে উঠে গুইমারার রামেসু বাজার। বাজার এলাকার প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি ও ৪০টির মতো দোকান আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় গুলিতে নিহত হন ৩ জন। তাঁরা সবাই পাহাড়ি। আহত হন সেনাবাহিনীর মেজরসহ অন্তত ২০ জন।

আজ দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন জেলা প্রশাসক। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার কাজ করেছে বলেও জানান তিনি। জেলা প্রশাসক বলেন, আহত ব্যক্তিদের যাতে সুচিকিৎসা নিশ্চিত হয় তার জন্য প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের পাশে থাকবে প্রশাসন। এই ক্ষতি অপূরণীয় হলেও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তা করা হবে।

আরও পড়ুনখাগড়াছড়িতে আজও অবরোধ চলছে, স্থবির জনজীবন৬ ঘণ্টা আগে

ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান জেলা প্রশাসক। এ জন্য সময় প্রয়োজন বলে জানান তিনি। অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, খাগড়াছড়িতে যে সহিংসতা, সংঘর্ষ—এ ঘটনায় মামলা হবে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবার মামলায় অনাগ্রহী হলে পুলিশ মামলা করবে।

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে গত শনিবার খাগড়াছড়িতে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় ‘জুম্ম-ছাত্র জনতা’। এরপর খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

আরও পড়ুন‘ওরা আমার নতুন বইও পুড়িয়ে দিল’১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ম ম ছ ত র জনত ১৪৪ ধ র র ঘটন অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়কে ‌‌পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে নিন্দা জানিয়েছেন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায়ের পর প্রকাশিত পাঁচ পৃষ্ঠার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নিস্ক্রিয় করে দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি পন্থা হচ্ছে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া।”

আরো পড়ুন:

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি

এই রায়ে কষ্ট পেয়েছি: শেখ হাসিনার আইনজীবী

ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা এর আগে এ বিচার প্রক্রিয়াকে ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।

তিনি বলেন, “এমন একটি ট্রাইব্যুনাল যেখানে ন্যায্যভাবে অভিযোগ যাচাই ও পরীক্ষা করা হয়, সেখানে অভিযোগকারীদের মুখোমুখি হতে আমি ভয় পাই না।”

তিনি আরো যোগ করেন, তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, এই অভিযোগগুলো হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নিয়ে যেতে।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, তিনি তার মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংক্রান্ত রেকর্ড নিয়ে অত্যন্ত গর্বিত।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রায় ঘোষণার কার্যক্রম শুরু হয়। ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়ে ছয়টি অংশ রয়েছে।

রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত। দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হওয়ায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি অনলাইন

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ