কিলিয়ান এমবাপ্পের জাদুকরী হ্যাটট্রিকে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে কায়রাত আলমাটিকে উড়িয়ে দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়নস লিগে ফ্রেঞ্চ সুপারস্টারের এটি চতুর্থ হ্যাটট্রিক, আর তার সুবাদেই কাজাখস্তানের মাঠে ৫-০ গোলের দাপুটে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লস ব্লাঙ্কোসরা।

মাদ্রিদের ডার্বিতে আটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে ৫-২ গোলে ভরাডুবির পর ১৩ ঘণ্টার ক্লান্তিকর ভ্রমণ শেষে রিয়ালের জন্য এই ম্যাচটা ছিল একরকম মান-সম্মান ফেরানোর লড়াই। এদিন অবশ্য শুরুর একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছিলেন কোচ জাবি আলোনসো। তবে আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে ভরসা রেখেছিলেন এমবাপ্পেকেই। আর সেই আস্থার যোগ্য মর্যাদা দিয়েছেন ফরাসি তারকা। একটি পেনাল্টি ও দুটো চোখধাঁধানো ফিনিশিংয়ে পূর্ণ করেন হ্যাটট্রিক।

আরো পড়ুন:

এমবাপ্পের জোড়া গোলে রিয়ালের বড় জয়

এমবাপ্পের দুর্দান্ত গোলে এস্পানিওলকে হারিয়ে শীর্ষে রিয়াল

ইনজুরিতে থাকা কারভাহালের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ছিল ভিনিসিউস জুনিয়রের হাতে। ম্যাচের শুরুতেই গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনিই। তবে বল জালে জড়াতে পারেননি। এরপর আর্দা গুলারের শট পোস্ট ছুঁয়ে বাইরে যায়। একের পর এক আক্রমণে কাঁপছিল কায়রাতের রক্ষণ। অবশেষে ভুল করে বসেন তাদের গোলরক্ষক শেরখান কালমুরজা। সতীর্থের ব্যাকহেড ভুলভাবে সামলাতে গিয়ে ফাউল করেন মাদ্রিদের তরুণ মাস্তান্তোনোর ওপর। আর সেখান থেকেই পেনাল্টি। ২৫ মিনিটে নিখুঁত স্পট কিকে এমবাপ্পে তুলে দেন প্রথম গোল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বাড়তি আত্মবিশ্বাসে খেলতে থাকে রিয়াল। ৫২ মিনিটে কুর্তোয়ার লম্বা কিক থেকে দুর্দান্ত চিপ শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এমবাপ্পে। যদিও পরে একেবারে সহজ এক সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। তবে সেটা আড়াল করে দেয় তার তৃতীয় গোল। ৭৩ মিনিটে রদ্রিগো ও গুলারের সমন্বয়ে আসা বল প্রথম ছোঁয়াতেই জালে পাঠিয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। এটা ছিল চলতি মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় রিয়ালের জার্সিতে তার ১৫তম গোল।

শেষদিকে আরও দুই গোল পায় রিয়াল। ৮৩ মিনিটে বদলি নামা কামাভিঙ্গা হেডে করেন চতুর্থ গোল। আর যোগ করা সময়ে ব্রাহিম দিয়াজের শটে বড় জয় নিশ্চিত হয় লস ব্লাঙ্কোসের।

ডার্বির হতাশা ঝেড়ে ফেলে ইউরোপীয় মঞ্চে দুর্দান্ত ফুটবল খেলল রিয়াল মাদ্রিদ। আর এই দাপুটে জয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন নিঃসন্দেহে কিলিয়ান এমবাপ্পে। যিনি আবারও প্রমাণ করলেন, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে রিয়ালের ভরসার নাম তিনি-ই।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল চ য ম প য়নস ল গ এমব প প র ন এমব প প

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালিকে হারিয়ে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপে নরওয়ে

আরলিং হালান্ড যেন নিজেই ইতিহাস লিখে চলেছেন। দুই মিনিটের ব্যবধানে তার দুর্দান্ত দুই গোল ইতালিকে সান সিরোতে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে নরওয়েকে নিয়ে গেল ১৯৯৮ সালের পর তাদের প্রথম বিশ্বকাপে। ম্যানচেস্টার সিটির এই সুপারস্টারের গ্রুপপর্বে গোলসংখ্যা দাঁড়াল ১৬। যা পোল্যান্ডের রবার্ট লেভানদোভস্কির রেকর্ডের সমান।

‘গ্রুপ–আই’ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোয়ালিফাই করতে নরওয়ের সামনে ছিল শুধু গণিতের হিসাব মেলানোর অপেক্ষা। তাদের বাদ দিতে ইতালির দরকার ছিল অবাস্তব এক নয় গোলের ব্যবধান। যা মাঠে সম্ভব হয়নি। তাই দীর্ঘ ২৮ বছর পর বিশ্বমঞ্চে ফিরতে যাচ্ছে নরওয়ে। আত্মবিশ্বাসও আকাশছোঁয়া।

আরো পড়ুন:

আসিফের মন্তব্যে বাফুফের কাছে বিসিবি সভাপতির দুঃখ প্রকাশ

অদম্য স্পেন বিশ্বকাপের দোরগোড়ায়

গত জুনে ইতালিকে ৩–০ গোলে হারানো ম্যাচটাই শেষ পর্যন্ত লুচিয়ানো স্পালেত্তির চাকরি শেষ করে দেয়। তার উত্তরসূরি জেনারো গাত্তুসো এবার প্লে-অফের প্রস্তুতি নেবেন।

গাত্তুসো তার সেরা খেলোয়াড়দেরই দলে ফেরান। মোলদোভার বিপক্ষে খেলা দলে কেবল জিয়ানলুকা মানচিনি টিকে থাকেন। অন্যদিকে নরওয়ের একমাত্র পরিবর্তন, এস্তোনিয়ার বিপক্ষে খেলা অস্কার ববের জায়গায় নামেন ক্রিস্টিয়ান থরস্টভেট।

প্রথমার্ধজুড়ে ইতালি ছিল আধিপত্যে। ফেদেরিকো দিমারকোর ভলিটি সামান্য বাইরে গেলে ১১তম মিনিটে আলো ছড়ান মাত্র ২০ বছর বয়সী ফ্রানচেস্কো পিও এসপোসিতো। দুর্দান্ত টার্ন আর নিখুঁত ফিনিশ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলেন তিনি।

এরপর এসপোসিতো আরেকটি হেড বাইরে পাঠালেও দুই দলই তেমন পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। মাঝপথে রেফারির সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে গাত্তুসো কার্ডও দেখেন।

বিরতির পর যেন নতুন উদ্যমে মাঠে নামে নরওয়ে। আলেকজান্ডার সর্লোথের শট বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপর চুলের অনন্য সাজে পরিচিত জুলিয়ান রাইয়েরসনও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি।

অবশেষে ৬৩তম মিনিটে গোল মেলে। সর্লোথের পাস থেকে দারুণ ড্রাইভে দূর কোণে বল পাঠান আন্তোনিও নুসা। জিয়ানলুইজি দোনারুম্মা নিকটের পোস্টে চেষ্টা করেও আটকাতে পারেননি।

এরপর নুসার আরেকটি নিশ্চিত গোল দোনারুম্মা ঠেকালেও ম্যাচের মঞ্চ তখন তৈরি হালান্ডের জন্য। মানচিনির ঘন পাহারা ভেদ করেই তিনি নিজের ছন্দ খুঁজে নেন।

৭৮ মিনিটে বদলি নেমে চমৎকার ফুটওয়ার্কে বল এগিয়ে দেন অস্কার বব। সেখান থেকেই ভলিতে দুর্দান্ত ফিনিশ করেন হালান্ড। মাত্র এক মিনিট পর থরস্টভেটের ডান দিকের ক্রসে আবার গোল। ঠিক জায়গায় ঠিক সময়ে পৌঁছে সহজ ট্যাপ-ইনে বল জালে জড়ান।

শেষ দিকে মাতেও পোলিতানোর শট অল্পের জন্য বাইরে গেলেও ইতালির আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না। যোগ করা সময়ে উলভসের ইয়র্গেন স্ট্র্যান্ড লার্সেন ডান দিক দিয়ে দারুণ দৌড়ে মানচিনিকে কাটিয়ে বক্রশটে দোনারুম্মাকে পরাস্ত করলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-১।

রাতটা তাই নরওয়ের। হালান্ডের জোড়া গোলের উৎসবে তারা ফিরল বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে, দুই যুগের বেশি সময় পর।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ