জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টিতে আজ বুধবার (০১ অক্টোবর) মাত্র ৩ রানের রুদ্ধশ্বাস জয়ে রংপুরকে হারাল খুলনা বিভাগ। রোমাঞ্চে ভরপুর এই ম্যাচে শেষ ওভার পর্যন্ত দোলাচলে থেকেও শেষ হাসি হাসল খুলনা। দলের জয়ের নায়ক জিয়াউর রহমান পান ম্যাচসেরার পুরস্কার।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ধীরগতির শুরু করে খুলনা। ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও ইমরানউজ্জামান মিলে ৪৩ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। তবে ইমরান ২৫ বলে ১৭ রানের ইনিংস খেলেই বিদায় নেন। আফিফ হোসেনও দ্রুত আউট হয়ে ফেরেন মাত্র ৫ রানে। ওপেনার বিজয় ৩৪ বলে ৩৫ রান করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি।

আরো পড়ুন:

অনায়াস জয়ে রাজশাহীকে হারাল চট্টগ্রাম

আলাউদ্দিনের ফাইফার, অনিকের ছোট্ট ক্যামিও

মাঝে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুনের ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ২৫ রান। তবে আসল মোড় ঘুরে যায় শেষ দিকে। নাহিদুল ইসলাম অপরাজিত থাকেন ১৮ বলে ২০ রান করে। আর অভিজ্ঞ জিয়াউর রহমান খেলেন চোখধাঁধানো ইনিংস। ২২৫ স্ট্রাইক রেটে মাত্র ১৬ বলে চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে ৩৬ রানের ঝড়ো ক্যামিওতে তিনি দলের সংগ্রহ দাঁড় করান ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৪৯ এ।

বল হাতে রংপুরের মো.

আবু হাসিম ৪ ওভারে ২০ রানে ২টি উইকেট নেন।

জবাবে রান তাড়ায় নেমে রংপুরের শুরুটা মন্দ হয়নি। ওপেনার তানবীর হায়দার অবিচল থেকে ৪৭ বলে খেলেন অপরাজিত ৬০ রানের ইনিংস। তবে মাঝের সারিতে ধস নামায় ম্যাচ হাতছাড়া হয় তাদের। অনিক সরকার ২৩ বলে ২৮ রান করে জিয়ার শিকার হলে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। অধিনায়ক আকবর আলী ২০ বলে ১৯ আর নাঈম ইসলাম ৭ বলে ১১ রান করলেও জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয় দল।

শেষ ওভারে রংপুরের দরকার ছিল ১৩ রান। কিন্তু খুলনার বোলারদের শৃঙ্খলিত বোলিংয়ে তারা তুলতে পারে মাত্র ৯ রান। ফলে ১৪৬ রানে থেমে যায় তাদের ইনিংস, খুলনা পায় শ্বাসরুদ্ধকর ৩ রানের জয়।

বল হাতে খুলনার রবিউল হক ৩ ওভারে ৩২ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। ব্যাট হাতে অপরাজিত ৩৬ ও বল হাতে ৩ ওভারে ১৯ রানে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন খুলনার জিয়াউর রহমান।

এই জয়ে ৪ ম্যাচের ২টিতে জিতে, ১টিতে হেরে ও ১টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে ৫ পয়েন্ট নিয়ে খুলনা আছে টেবিলের তৃতীয় স্থানে। সমান ম্যাচ থেকে ৭ পয়েন্ট করে নিয়ে ঢাকা বিভাগ শীর্ষে ও চট্টগ্রাম বিভাগ আছে দ্বিতীয় স্থানে।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালিকে হারিয়ে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপে নরওয়ে

আরলিং হালান্ড যেন নিজেই ইতিহাস লিখে চলেছেন। দুই মিনিটের ব্যবধানে তার দুর্দান্ত দুই গোল ইতালিকে সান সিরোতে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে নরওয়েকে নিয়ে গেল ১৯৯৮ সালের পর তাদের প্রথম বিশ্বকাপে। ম্যানচেস্টার সিটির এই সুপারস্টারের গ্রুপপর্বে গোলসংখ্যা দাঁড়াল ১৬। যা পোল্যান্ডের রবার্ট লেভানদোভস্কির রেকর্ডের সমান।

‘গ্রুপ–আই’ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোয়ালিফাই করতে নরওয়ের সামনে ছিল শুধু গণিতের হিসাব মেলানোর অপেক্ষা। তাদের বাদ দিতে ইতালির দরকার ছিল অবাস্তব এক নয় গোলের ব্যবধান। যা মাঠে সম্ভব হয়নি। তাই দীর্ঘ ২৮ বছর পর বিশ্বমঞ্চে ফিরতে যাচ্ছে নরওয়ে। আত্মবিশ্বাসও আকাশছোঁয়া।

আরো পড়ুন:

আসিফের মন্তব্যে বাফুফের কাছে বিসিবি সভাপতির দুঃখ প্রকাশ

অদম্য স্পেন বিশ্বকাপের দোরগোড়ায়

গত জুনে ইতালিকে ৩–০ গোলে হারানো ম্যাচটাই শেষ পর্যন্ত লুচিয়ানো স্পালেত্তির চাকরি শেষ করে দেয়। তার উত্তরসূরি জেনারো গাত্তুসো এবার প্লে-অফের প্রস্তুতি নেবেন।

গাত্তুসো তার সেরা খেলোয়াড়দেরই দলে ফেরান। মোলদোভার বিপক্ষে খেলা দলে কেবল জিয়ানলুকা মানচিনি টিকে থাকেন। অন্যদিকে নরওয়ের একমাত্র পরিবর্তন, এস্তোনিয়ার বিপক্ষে খেলা অস্কার ববের জায়গায় নামেন ক্রিস্টিয়ান থরস্টভেট।

প্রথমার্ধজুড়ে ইতালি ছিল আধিপত্যে। ফেদেরিকো দিমারকোর ভলিটি সামান্য বাইরে গেলে ১১তম মিনিটে আলো ছড়ান মাত্র ২০ বছর বয়সী ফ্রানচেস্কো পিও এসপোসিতো। দুর্দান্ত টার্ন আর নিখুঁত ফিনিশ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলেন তিনি।

এরপর এসপোসিতো আরেকটি হেড বাইরে পাঠালেও দুই দলই তেমন পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। মাঝপথে রেফারির সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে গাত্তুসো কার্ডও দেখেন।

বিরতির পর যেন নতুন উদ্যমে মাঠে নামে নরওয়ে। আলেকজান্ডার সর্লোথের শট বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপর চুলের অনন্য সাজে পরিচিত জুলিয়ান রাইয়েরসনও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি।

অবশেষে ৬৩তম মিনিটে গোল মেলে। সর্লোথের পাস থেকে দারুণ ড্রাইভে দূর কোণে বল পাঠান আন্তোনিও নুসা। জিয়ানলুইজি দোনারুম্মা নিকটের পোস্টে চেষ্টা করেও আটকাতে পারেননি।

এরপর নুসার আরেকটি নিশ্চিত গোল দোনারুম্মা ঠেকালেও ম্যাচের মঞ্চ তখন তৈরি হালান্ডের জন্য। মানচিনির ঘন পাহারা ভেদ করেই তিনি নিজের ছন্দ খুঁজে নেন।

৭৮ মিনিটে বদলি নেমে চমৎকার ফুটওয়ার্কে বল এগিয়ে দেন অস্কার বব। সেখান থেকেই ভলিতে দুর্দান্ত ফিনিশ করেন হালান্ড। মাত্র এক মিনিট পর থরস্টভেটের ডান দিকের ক্রসে আবার গোল। ঠিক জায়গায় ঠিক সময়ে পৌঁছে সহজ ট্যাপ-ইনে বল জালে জড়ান।

শেষ দিকে মাতেও পোলিতানোর শট অল্পের জন্য বাইরে গেলেও ইতালির আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না। যোগ করা সময়ে উলভসের ইয়র্গেন স্ট্র্যান্ড লার্সেন ডান দিক দিয়ে দারুণ দৌড়ে মানচিনিকে কাটিয়ে বক্রশটে দোনারুম্মাকে পরাস্ত করলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-১।

রাতটা তাই নরওয়ের। হালান্ডের জোড়া গোলের উৎসবে তারা ফিরল বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে, দুই যুগের বেশি সময় পর।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ