দেশের বাজারে লেনেভোর তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির নতুন ল্যাপটপ এনেছে গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসি। ‘লেনেভো ইয়োগা ৭আই টু ইন ওয়ান’ মডেলের ল্যাপটপটিতে ইন্টেলের কোর আলট্রা ৫-২২৮ভি প্রসেসরের পাশাপাশি কোপাইলট চ্যাটবট ব্যবহারের সুযোগ থাকায় দ্রুত বিভিন্ন কাজ করা যায়। আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উইন্ডোজ ১১ হোম অপারেটিং সিস্টেম চলা ১৪ ইঞ্চি ওএলইডি পর্দার ল্যাপটপটিতে ৩২ গিগাবাইট ডিডিআরফাইভএক্স র‍্যাম রয়েছে। এক টেরাবাইট ধারণক্ষমতাযুক্ত ল্যাপটপটিতে ইন্টেল আর্ক জিএফএক্স গ্রাফিকস কার্ড থাকায় সহজে উচ্চ রেজল্যুশনের গেম খেলা যায়।

দুই বছরের বিক্রয়োত্তর সেবাসহ ল্যাপটপটিতে ডলবি স্পিকার থাকায় স্বচ্ছন্দে অনলাইন বৈঠক করার পাশাপাশি গানও শোনা যায়। ওয়াই-ফাই ৭ এবং ব্লুটুথ ৫.

৪ সুবিধাও রয়েছে ল্যাপটপটিতে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল য পটপট ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘বোরিং পারসন’ মুশফিকুর স্ত্রীর প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ

‘‘এরকম করে তার সামনে কখনো বলা হয় না। ওইটা নিয়ে অভিযোগও আছে।’’ - ঠোঁটের কোণে মুশফিকুরের লাজুক হাসিটা বাকি গল্পটা বলে দিচ্ছিল। দুষ্ট-মিষ্টি ভালোবাসায় জড়ানো সংসার জীবনে ক্রিকেটটাও বড় অংশ জুড়ে ছিল তা স্পষ্ট হয়ে যায় মুশফিকুরের ওই কথায়। যেখানে স্ত্রী জান্নাতুল কিয়াফাত, ক্রিকেটার মুশফিকুরের গড়ে উঠার পেছনের বড় ভূমিকা রেখেছেন। সামনাসামনি স্ত্রীকে কখনো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে না পারা মুশফিকুর শততম টেস্টের মঞ্চে কথার ঝাঁপি খুলে দিলেন। 

২০১৩ সালে মাহমুদউল্লাহর মাধ্যমেই মুশফিকুরের সঙ্গে পরিচয় হয় জান্নাতুলের। এরপর মনের দেয়া–নেয়া। ২০১৪ সালে সেই ভালোবাসার চিরস্থায়ী রূপ দেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। ঘরে নিয়ে আসেন জান্নাতুল কিফায়াতকে। তাদের দাম্পত্য জীবন রাঙিয়ে তুলেছেন মায়ান ও সেহার।

পরিশ্রম, একাগ্রতা, নিবেদনে মুশফিকুর অনন‌্য, অসাধারণ। সবার আগে অনুশীলনে আসা, সবার পর মাঠ ত‌্যাগ করার ঘটনা রয়েছে অহরহ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীলন করে মুশফিকুর নিজেকে তৈরি করেছেন। সেই তৈরি করার পেছনে ছায়া হয়ে ছিলেন স্ত্রী। পারিবারিক সব সব সামলে মুশফিকুরকে ফ্রি করে দিয়েছিলেন তিনি। অনুশীলন, ম‌্যাচ পরিকল্পনা, ঘুম, রুটিন ওয়ার্ক সবকিছুতে যেন পর্যাপ্ত সময় পান এজন‌্য সব চাপ নিয়েছিলেন জান্নাতুল। তার নিসঙ্গ লড়াইটাকেই মুশফিকুর বলছেন, ‘‘সবচেয়ে বড় ত‌্যাগ।’’

সেই গল্পগুলোই আজ শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে করলেন মুশফিকুর, ‘‘আমার মনে হয় সবচেয়ে বড় স্যাক্রিফাইস….আমার যে সাপোর্টটা আমার স্ত্রী দিয়েছে। সত‌্যি বলতে আমার স্ত্রী। আপনারাও জানেন, হয়তো বা দেখেন যে, আমি হয়তো বা অন্যদের তুলনায় বেশি অনুশীলন করি। এটা সম্ভব কখনোই হতো না যদি আমার ঘরে এরকম একটা পরিবেশ না থাকতো।’’

‘‘আপনারা ক'জন জানেন জানি না, আমরা জয়েন্ট ফ্যামিলি থেকে বিলং করি। দেখা যায় যে, আমার স্ত্রীর উপর যে প্রত‌্যাশাটা আছে এবং সবাইকে ওইভাবে ম্যানেজ করা… কিছু হলেই ওকে ফোন দিয়ে এটা সমস‌্যা বা ওটা। যতটুক ইমার্জেন্সি আমার দিক থেকে না আসা পর্যন্ত ও যদি সবকিছু করতে পারে সেগুলো ম্যানেজ করা। এটা বিরাট কিছু। এটা আমি বলবো যে, আমার এটা অনেক বড় স্যাক্রিফাইস।’’

মুশফিকুর আরো বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ, যদিও ওই সময়গুলো হয়তোবা আমি পাবো না, কারণ আমার দুটো বাচ্চা আছে…সেই সময়গুলো। তারপরে ধরেণ, রাতে স্বাভাবিক ছোট বাচ্চারা সারা রাত ঘুমায় না। কিন্তু আমাকে কখনো নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়নি। কারণ, ম্যাক্সিমাম সময় না, পুরোটা সময় সে রাত জেগে বাচ্চাদেরকে মানুষ করেছে এবং আমাকে ওই টেনশন থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেছে। সেজন‌্য আমি তার কাছে সারাজীবনের জন‌্য কৃতজ্ঞ। কখনোই এরকম করে তার সামনেও বলা হয় না। ওইটা নিয়েও অভিযোগ আছে। কিন্তু সত‌্যি বলতে আমি অনেক ভাগ‌্যবান। কারণ এটা (স্ত্রী) একটা হিউজ পার্ট। অলমোস্ট আমার ১১ বছর মতো হয়েছে সংসার লাইফ। ক্রিকেটে ইমপ্যাক্ট যদি, আপনারা ২০১৪ সালের পর থেকে দেখেন, ইটস এ হিউজ পার্ট ইন মাই লাইফ। এজন‌্য তাকে অনেক ধন‌্যবাদ।’’

পারফরম‌্যান্সও সেই কথাই যেন বলছে। বিয়ের আগে ৪০ ম‌্যাচে ৭৫ ইনিংসে মুশফিকুরের রান ছিল ২১৫২। সেঞ্চুরি ৩টি, ফিফটি ১৩টি। গড় ৩০.৬। বিয়ের পরে ৬০ ম‌্যাচে ১০৮ ইনিংসে রান ৪১০৫। গড় ৪১.৮৮। সেঞ্চুরি ১০টি, ফিফটি ১৪টি। স্ত্রী তার জীবনে আর্শীবাদ হয়ে এসেছেন বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে পারফরম‌্যান্সের এই ধারাবাহিকতার জন‌্য অনুশীলনের বিকল্প কিছু দেখেন না তিনি,

‘‘খোলাখুলিভাবে একটা কথা বলি, আমি আসলে একজন বোরিং পারসন। আমি প্রত্যেকদিনের অনুশীলন নিয়ে যদি বলেন, আমি ঠিক একই কাজটা ওভার অ‌্যান্ড ওভার করতে পারব। এটা এমন না যে, ২০ বছর ধরে করেছি বলেই সবশেষ। আমি ৪০ বছর ধরে একই কাজ করবো। যদি এটা দলের এবং আমার নিজের প্রয়োজন হয়।’’- যোগ করেন তিনি। 

বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলছেন মুশফিকুর। বিশ্বের এগারতম ক্রিকেটার মুশফিকুর যিনি শততম টেস্টে পেয়েছেন সেঞ্চুরির স্বাদ। এই অর্জনকে মুশফিকুর উৎসর্গ করেছেন তার দাদা-দাদী ও নানা-নানিকে, ‘‘আমার দাদা-দাদি আর নানা-নানিকে (উৎসর্গ করতে চাই)। কারণ তারা আসলে আমার সবচেয়ে বড় ফ্যান ছিল, যখন তারা বেঁচে ছিলেন। আমার এখনো মনে আছে, আমার দাদা-দাদি বলেন বা নানা-নানি, সবাই বলেছিলেন যে, ভাই তোমার খেলা দেখার জন্য হলেও আমি আরও কয়েকটা দিন বেঁচে থাকতে চাই। এটা বিরাট কিছু। খুব কম নাতি বা নাতনিদের কপালে, ভাগ‌্যে চোটে এরকম। তাদের আর্শীবাদেই আমি আজকে এতদূর। আরও অনেক মানুষ আছে। কিন্তু স্পেশাল ম‌্যাচটা আমি তাদের চারজনকে উৎসর্গ করতে চাই।’’

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ