কখনো পরিবার, কখনো সমাজ—সবাই চেয়েছে তাকে নির্দিষ্ট ছাঁচে ঢালতে। কিন্তু বাঁধন ভেঙেছেন সেই ছাঁচ। হ্যাঁ, তিনি ব্যর্থ হয়েছেন ‘প্রত্যাশিত নারী’ হতে, অথচ সেই ব্যর্থতাকেই এখন মনে করছেন জীবনের বড় সাফল্য।
রবিবার (৫ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে নিজেকে ‘সমাজ আর একজন অস্বস্তিকর নারী’ আখ্যায়িত করেছেন বাঁধন। সেখানে তিনি খোলামেলা স্বীকার করেছেন নিজের ব্যর্থতার কথাও।
আরো পড়ুন:
আলোচনায় নুহাশ হুমায়ূনের ফেসবুক পোস্ট
বাগদানের পরও রাশমিকার প্রথম বিয়ে কেন ভেঙেছিল?
বাঁধন লিখেছেন, “আমি এমন একজন মেয়ে হতে চেয়েছিলাম, যে সবাইকে খুশি রাখবে। অনুগত, বাধ্য, শান্তভাবে মানিয়ে নেওয়া মেয়ে। কিন্তু আমি পারিনি। আমি ব্যর্থ হয়েছি। চেষ্টা করেছিলাম পরিবারের প্রত্যাশিত মেয়ে হতে, সমাজের বানানো ‘নারী’ হয়ে বাঁচতে। কিন্তু পারিনি। আর আজ, সেই ব্যর্থতার জন্যই আমি নিজেকে ধন্যবাদ জানাই।”
ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিয়ে এ অভিনেত্রী লেখেন, “আমি অন্য কারো স্ক্রিপ্টে বাঁচার জন্য জন্মাইনি। আমার কথা হয়তো অনেকের কাছে অস্বস্তিকর, আমার কাজ হয়তো অনেকের স্বস্তি ভেঙে দেয়। আমি সহজ নই, কিন্তু নির্মমও নই। আমি কাউকে আঘাত করি না, অসম্মানও করি না—যদিও অনেকেই আমার প্রতি তা করে।”
কয়েক দিন পরই ৪২ বছরে পা দেবেন এই অভিনেত্রী। বয়সের এ পর্যায়ে তিনি খুঁজে পেয়েছেন ভেতরের শান্তি। বাঁধনের ভাষায়, “চল্লিশের পর আমি নিজের সঙ্গে শান্তিতে আছি। এখন আমি বাঁচি আমার মতো করে—স্বাধীনভাবে, সৎভাবে, বিনা ক্ষমাপ্রার্থনায়। কেউ কষ্ট পেলে উপেক্ষা করুক, ব্লক করুক, ঘৃণা করুক—আমার কিছু যায় আসে না। কারণ, যত মানুষ আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে, তার চেয়েও অনেক বেশি মানুষ আমাকে ভালোবাসে, বোঝে, আমার সত্যে শক্তি খুঁজে পায়। আর সবচেয়ে বড় কথা—আমি নিজেকে ভালোবাসি।”
তার পোস্টের শেষ লাইনগুলোতে উঠে এসেছে আত্মসম্মান আর আত্মবিশ্বাসের এক দৃঢ় উচ্চারণ, “আমি ভাঙা নই। আমি শুধু এমন এক পৃথিবীর কাছে অস্বস্তিকর, যে পৃথিবী এখনো আসল নারীকে ভয় পায়। ভালোবাসি তোমায়, আজমেরী হক বাঁধন। তুমি যে নারী হতে চেয়েছিলে, শেষ পর্যন্ত তুমি সেই নারীই হয়েছো।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র স বস ত
এছাড়াও পড়ুন:
নিজের প্রতি ‘অবহেলার অভ্যাস’ কাটিয়ে উঠুন
আপনি হয়তো মনে প্রাণে একজন সুপার মা, সুপার স্ত্রী, সুপার পেশাজীবী কিংবা সুপার নারী হতে চাচ্ছেন। সবকিছুতে পারফেক্ট হতে গিয়ে হয়তো নিজের দিকেই খেয়াল করার সময় পাচ্ছেন না। নিজেকে অবহেলা করা হয়তো আপনার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে! ভেবে দেখেছেন কী—আপনি যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে কী হবে? সব কিছু থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া ছাড়া আপনার হাতে আর কোনো উপায়ই অবশিষ্ট থাকবে না। তাই ঘর গুছিয়ে নেওয়ার আগে নিজেকে একটু গুছিয়ে নিন। ব্যায়াম করার জন্য সময় ও সুযোগ বের করুন। মাঝে মধ্যে নিজের শখগুলোকে প্রাধান্য দিন। কখনও একটি আইসক্রিম শুধু নিজের জন্য কিনুন। নিজেকে ভালোবাসতে ভুল করবেন না যেন! আপনি যদি মানসিক এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন—দেখবেন আর কোথাও ‘পারফেকশনিজম’ টিকিয়ে রাখতে পারছেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলেন. ‘পারফেকশনিজম’ আপনার মনের ভীতি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
আরো পড়ুন:
পাখি কেন ভি আকারে ওড়ে
ছোট মগে নাকি বড় মগে কফি পান করা ভালো?
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় ও উইসকনসিনের স্টেটস অব ওয়েলনেস কাউন্সেলিংয়ের একজন সাইকোথেরাপিস্ট শ্যানন গার্সিয়া বলেছেন, ‘‘পারফেকশনিজম হলো এক ধরনের উদ্বেগ। এটি এলো এমন একটি প্রক্রিয়া যা আপনার ক্যারিয়ারে এগিয়ে যাওয়ার বদলে পিছিয়ে দিতে পারে। দেখা যায়, আপনি হয় ভয়ে কাজগুলো এড়িয়ে চলতে শুরু করেছেন—এই ভেবে যে, হয়তো নিখুঁতভাবে কাজটি আর করাই হয়ে উঠবে না। কিংবা আপনি কোনো একটি কাজ নিখুঁত করার চেষ্টায় অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে ফেলবেন।’’
নিউজার্সি-ভিত্তিক সাইকোথেরাপিস্ট অ্যাঞ্জেলা ক্ল্যাক বলেন, ‘‘পারফেকশনিস্ট মানসিকতায় আপনি যখন আপনার লক্ষ্যে পৌঁছান, তখন আপনার পরবর্তী চিন্তা থাকে শুধু, এর পরে কী আসবে? সেই বিষয়ে।’’
পারফেকশনিস্টরা তাদের প্রতিযোগীদের দিকে তাকিয়ে আরও পরিশীলিত, আরও নিখুঁত হতে চায়। যার ফলে, তারা কখনই তাদের জয়ের মুহূর্তগুলোও উপভোগ করতে পারেন না।’’
এর ফলে মানসিক অবসাদ তৈরি হয়। দেখা দিতে পারে মাথাব্যথা, অনিদ্রা, ডিপ্রেশনসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা। তাই সবার কাছে, সব কাজে পারফেকশনিস্ট হতে যাবেন না। এতে নিজের প্রতি অবহেলা বাড়তে পারে।
আর নিজের প্রতি অবহেলা করার মধ্যে ‘সত্যিকার অর্থ ভালো কিছু নেই।’ নিজের চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আনুন, নিজের যত্ন নিন। সবার আগে, সবকিছুর আগে নিজের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিন!
ঢাকা/লিপি