কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে কুবিতে বিক্ষোভ
Published: 5th, October 2025 GMT
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল কর্তৃক কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা অবমাননাকারীর সর্ব্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
রবিবার (৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানে হত্যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আল-কুরআনের অপমান, সইবে না’রে মুসলমান’, ‘কুরআন অবমাননাকারীর কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই, অপূর্বের ফাঁসি চাই’, ‘ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই, কুরআন অবমাননাকারীর ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে লোক প্রশাসন বিভগের শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, “পবিত্র কুরআন পুরো মানবজাতির জন্য আলোর দিশারী। সেই কুরআন অবমাননার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই। যারা এ ধরনের কাজ করছে, তারা সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা আদর্শিক দিক থেকে আমাদের সাথে পেরে না উঠে কুরআন অবমাননার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটাচ্ছে। সরকারে উচিত এসব ন্যাক্কারজনক ঘটনার পেছনে কারা ইন্ধন দিচ্ছে, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী গোলাম মুস্তফা বলেন, “গতকাল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল যে পবিত্র কুরআনে লাথি দিয়েছে, সে যেন আমাদের হৃদয়ে লাথি দিয়েছে। কিছুদিন পর পর আমরা এ ধরনের ঘটনা দেখতে পাই, যার সবচেয়ে বড় কারণ হলো সুনির্দিষ্ট আইন না থাকা। সরকারে উচিত অতিদ্রুত আইন প্রণয়ন করে এ ধরনের ধর্ম অবমাননাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা।”
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি গোল চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে গিয়ে শেষ হয়।
শনিবার (৪ অক্টোবর) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল কুরআন অবমাননা করেন। সেই অবমাননার ভিডিও নিজের ফেসবুকে পোস্ট। বিষয়টি ভাইরাল হলে সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। ইতোমধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে ভাটরা থানা পুলিশ।
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে সাংবাদিক হায়াত উদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের মানববন্ধন
বাগেরহাটে বিএনপি নেতা ও সাংবাদিক এ এস এম হায়াত উদ্দিনকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। শনিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাব আয়োজিত মানববন্ধনে সংবাদকর্মী ছাড়াও বিএনপির নেতারা একাত্মতা জানিয়ে অংশ নেন।
মানববন্ধনে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক তরফদার রবিউল ইসলাম, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হক, সাংবাদিক এস এম রাজ, আহাদ উদ্দিন হায়দার, হেদায়েত হোসেন, ইয়ামিন আলী, কামরুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বলেন, একজন সংবাদকর্মীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হলো। অথচ পুলিশ এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার না করলে সংবাদকর্মীরা কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
মানববন্ধনে একাত্মতা জানিয়ে অংশ নেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ ফরিদুল ইসলাম, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন, খান মনিরুল ইসলাম, মাসুদ রানা, ফকির তারিকুল ইসলাম, শাহেদ আলী, মাহবুবুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। তাঁরা বলেন, হায়াত উদ্দিন শুধু সাংবাদিক ছিলেন না; তিনি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী একজন সৈনিক ছিলেন। তিনি বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর হত্যাকারী যত শক্তিশালী হোক, তাঁকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের হাড়িখালি এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হায়াত উদ্দিনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ছিলেন। তাঁর বাড়ি বাগেরহাট পৌর শহরের উত্তর হাড়িখালি এলাকায়। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাগেরহাট পৌর বিএনপির সম্মেলনে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন করেছিলেন হায়াত উদ্দিন। তবে পরাজিত হন। এর আগে তিনি পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসা, ঠিকাদারি কাজের মান, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব ছিলেন হায়াত উদ্দিন। তবে তাঁর বিরুদ্ধেও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। হায়াত উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা আছে। কয়েক মাস আগেও তাঁর ওপর একবার হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে হায়াতের মরদেহ বাগেরহাটে নিয়ে আসা হয়। হাড়িখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে জানাজা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
হায়াত উদ্দিনের স্ত্রী ও দুটি মেয়ে আছে। ছোট মেয়ে মারজিয়া ও বড় মেয়ে হিয়া মনি এখনো বুঝতে পারছে না, তাদের বাবা আর ফিরবেন না। স্ত্রী ফাতেমা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘শুধু সত্য কথা লেখার কারণেই আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।’
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের পুলিশ প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করেছে। তাঁদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ দেয়নি। তাঁরা এজাহার দিলে মামলা করা হবে।