বন্দরে যোগাযোগ মাধ্যমে সম্মানহানি, থানায় অভিযোগ
Published: 5th, October 2025 GMT
চোর অপবাদ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল করে সম্মানহানির ঘটনায় কবি কবির সোহেলের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
গত শনিবার (৪ অক্টোবর) ভূক্তভোগী যুবকের বড় ভাই সোয়াইব হোসেন বাদী হয়ে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এর আগে গত শুক্রবার (৩ অক্টোবর) চোর অপবাদ দিয়ে ওই ভিডিওটি ভাইরালের ঘটনা ঘটে।
অভিযোগের তথ্য সূত্রে ও বাদী গণমাধ্যমকে জানায়, গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় বন্দর থানার বক্তারকান্দীস্থ আরমান সুমন এর হোটেলের সামনে পাকা রাস্তার উপর অভিযোগের বাদী ছোট ভাই মোঃ সায়েম (২০) এবং তার বন্ধু মোঃ অন্তর (২০) খেলাধুলা করার সময় দুর্ঘটনাবশত অন্তর (২০) কুনুইয়ের আঘাতে আমার ছোট ভাই মোঃ সায়েম (২০) বাম চোখের নীচে রক্তাক্ত কাটা জখম হয়।
ওই সময় আশেপাশের লোকজন আমার ভাইয়ের মাথায় পানি দিয়ে তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করে। সে সময় চৌরাপাড়া এলাকার কবি ও সাংবাদিক পরিচয় দানকারি কবি কবির সোহেল উক্ত ভিডিও ধারন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে Bandar Press নামক পেইজ যাহার আইডি লিংক Mtps.
বিবাদীর এহেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অপবাদের কারণে সমাজে আমার ভাই এবং আমাদের পরিবারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বিবাদী উক্ত ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আমাদের মানহানি করেছে। আমার ভাই বর্তমানে আকিজ ফ্লাওয়ার মিলসে কর্মরত আছে। বিবাদীর এহেন ঘৃন্য কর্মকান্ডে আমার ভাই তার কর্মস্থলে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
বিবাদীকে এ বিষয়ে বুঝিয়ে বলে উক্ত ভিডিও ডিলিট করার কথা বললে বিবাদী একই আইডি হতে ভিডিওটি পুনরায় শেয়ার করে এবং আমরা যদি এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করি তাহলে আমাদের দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করে। উল্লেখ্য যে, বিবাদী একজন তথাকথিত নামধারী সাংবাদিক।
সমাজের সাধারন, নিরীহ ও অসহায় মানুষদের হেনস্তা করাই বিবাদীর কাজ। বিবাদী একজন আইন অমান্যকারী খারাপ প্রকৃতির লোক। অভিযোগটি সঠিক ভাবে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভূক্তভোগী পরিবার।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ফ সব ক ন র য়ণগঞ জ আম র ভ ই অপব দ
এছাড়াও পড়ুন:
জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা মামলায় ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন হত্যা মামলায় দুইজন সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দীন তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আরো পড়ুন:
সখীপুরে মেয়েকে হত্যার পর নিজেকে শেষ করলেন মা
নেত্রকোণায় চালককে হত্যা করে মোটরসাইকেল ছিনতাই
সাক্ষীরা হলেন, জবি শিক্ষার্থী সৈকত হোসেন এবং সালাউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াহিদুর রহমান। সৈকত নিহত জোবায়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই এবং ডা. ওয়াহিদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বর্ষার মামা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফ হোসেন সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আবেদন করেন।
জবানবন্দিতে সৈকত বলেন, “আমি জবির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও জোবায়েদ ভার্সিটির বড় ভাই। আমি জোবায়েদ ভাইয়ের ক্লোজ ছোট ভাই হওয়াতে বর্ষা আমার নাম্বার জোবায়েদ ভাই থেকে নেয়। মাঝে মাঝে হোয়াটসঅ্যাপ হাই, হ্যালো কথাবার্তা হত। ২-৩ মাস আগে বর্ষা আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। তখন থেকে বর্ষার সঙ্গে আমার আর যোগাযোগ হয়নি। জোবায়েদ ভাই প্রায় ১ বছর ধরে বর্ষাকে বাসায় টিউশন পড়াত।”
তিনি বলেন, “ভার্সিটি এলাকায় থাকাকালে গত ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টা ৫৮ মিনিটের দিকে বর্ষা তাকে ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ দেয়, ‘ভাইয়া কই তুমি?’ আমি জানাই ক্যাম্পাসে। বর্ষা বলে, ‘স্যারের আম্মুর নাম্বার আছে?’ কারণ জানতে চাইলে বর্ষা বলে, ‘লাগবে।’ ভাইয়ের কিছু হয়ছে কি না জানতে চাইলে বর্ষা বলে, ‘ভাইরে (জোবায়দে) কে জানি মাইরা ফেলছে।’ আমি বলি, মাইরা ফেলছে বলতে? বর্ষা বলে, ‘খুন করে ফেলছে।’ তখন বর্ষাকে কল দেওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। এরপর বিষয়টি বড় ভাইদের জানাই।”
ডা. ওয়াহিদুর রহমান জবানবন্দিতে বলেন, “গত ১৯ অক্টোবর সাপ্তাহিক নৈশ্যকালীন ডিউটি থাকায় বাসায় অবস্থান করছিলাম এবং ড্রইং রুমে বসে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ আমার স্ত্রীকে দ্বিতীয় তলার চাচাতো ভাই ফোন করে জানায়, সিঁড়িতে কোনো একজন লোক পড়ে আছে। আমরা তখন সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলে দেখি সিঁড়ির মাঝামাঝি একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।”
তিনি বলেন, “তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে বাড়ির লোকজন জড় হয়ে যায় এবং সেখানে শনাক্ত হয় যে, আমার ভাগ্নি বর্ষার প্রাইভেট টিউটর জুবায়েদের মরদেহ। তাৎক্ষণিক ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে অবহিত করি।”
বর্ষার মামা জানান, পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন তার ভাগ্নি বর্ষার সঙ্গে মাহির নামক এক ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং জোবায়েদ মাস্টারের সঙ্গেও বর্ষার প্রেম ছিল। এই দ্বন্দ্বের কারণে মাহির রহমান, জোবায়েদ মাস্টারকে হত্যা করে ঘটনার দিন দৌড়ে পালিয়ে যায়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, মো. জোবায়েদ হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করতেন। প্রতিদিনের মতো গত ১৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বংশাল থানাধীন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে নুর বক্স লেনের ১৫ নম্বর হোল্ডিং রৌশান ভিলায় বর্ষাকে পড়ানোর জন্য যান।
সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটের দিকে ওই ছাত্রী জোবায়েদ হোসেনের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই সৈকতকে ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে জানায়, “জোবায়েদ স্যার, খুন হয়ে গেছে। কে বা কারা জোবায়েদ স্যারকে খুন করে ফেলছে।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. কামরুল হাসান ৭টার দিকে জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেনকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্যটি জানান। এনায়েত তার শ্যালক শরীফ মোহাম্মদকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থল রৌশান ভিলায় পৌঁছান। ভবনের নিচতলা থেকে ওপরে ওঠার সময় সিঁড়ি এবং দেয়ালে রক্তের দাগ দেখতে পান। ওই ভবনের তৃতীয় তলার রুমের পূর্ব পার্শ্বে সিঁড়িতে জোবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ উপুড় অবস্থায় দেখতে পান।
ঘটনার দুইদিন পর ২১ অক্টোবর জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেন বংশাল থানায় মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে জোবায়েদকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার ডান পাশে আঘাত করে হত্যা করেছে।
মামলায় বর্ষা, তার প্রেমিক মো. মাহির রহমান, মাহিরের বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লান ২১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছে।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী