শীতকাল ইনফ্লুয়েঞ্জার (শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ) মৌসুম, এটাই ধারণা করা হয়। তবে রোগতত্ত্ববিদেরা বলছেন, তা এখন বদলে গেছে। এখন এটি সবচেয়ে বেশি দেখা দিচ্ছে গরম ও বর্ষাকাল মিলিয়ে। এ বছর ইনফ্লুয়েঞ্জার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি অ্যাভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু মানুষের মধ্যে শনাক্ত হয়েছে। এটাকে নতুন ধরনের ঝুঁকি বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদেরা।
ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুম বদলে যাওয়া প্রসঙ্গে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত নজরদারিতে দেখতে পাচ্ছি, ছয় মাস ইনফ্লুয়েঞ্জা বেশি থাকে। এপ্রিল মাসে তা বাড়তে থাকে, সেপ্টেম্বর থেকে কমতে থাকে। সবচেয়ে বেশি ইনফ্লুয়েঞ্জা থাকে জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে, অর্থাৎ গরমকালে। আর শীতকালে সবচেয়ে কম।’
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলেন, পাঁচ ধরনের মানুষের ইনফ্লুয়েঞ্জার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি—বয়স্ক মানুষ, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, সহরোগগ্রস্ত (কোমরবিড) মানুষ, গর্ভবতী ও স্বাস্থ্যকর্মী।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে দূরে থাকা যায়, এর টিকাও আছে। জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারি মাসে টিকা নিলে বেশ কয়েক মাস সুরক্ষা পাওয়া যায়। তবে টিকা নিতে হবে প্রতিবছর।এ এইচ এম আলমগীর, জনস্বাস্থ্যবিদকী দেখেছে আইইডিসিআর
আইইডিসিআর ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) যৌথভাবে ২০০৭ সাল থেকে দেশের ১৯টি সরকারি হাসপাতালে ইনফ্লুয়েঞ্জা পর্যবেক্ষণ করে আসছে। এর মধ্যে ৯টি জেলা হাসপাতাল এবং ১০টি তৃতীয় স্তরের হাসপাতাল। ইনফ্লুয়েঞ্জা পরিস্থিতি জানার জন্য এসব হাসপাতালে নিয়মিতভাবে রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে বার্ড ফ্লু বা অন্য রোগও শনাক্ত হয়।
২০০৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি ইনফ্লুয়েঞ্জার রোগী শনাক্ত হয়। এই মাসে গড়ে ৩০ দশমিক ৮৫ শতাংশ নমুনায় ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হয়। এই ১৭ বছরের তথ্যে দেখা গেছে, এপ্রিল মাস থেকে শনাক্তের হার (১১.
ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্তের হার সবচেয়ে কম থাকে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে। এই দুই মাসে যথাক্রমে ২ শতাংশ ও ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ নমুনায় ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হয়।
ওই ১৯ হাসপাতালের চলতি বছরের তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসে ২ শতাংশ, ফেব্রুয়ারি মাসে ৩ শতাংশ এবং মার্চ মাসে ৪ শতাংশ নমুনায় ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হয়েছে। এপ্রিল মাসে শনাক্তের হার বেড়ে হয় ৭ শতাংশ এবং মে মাসে আরও বেড়ে হয় ১২ শতাংশ। আর জুন মাসে ২৯ শতাংশ নমুনায় ইনফ্লুয়েঞ্জা ছিল। এ বছর জুলাই মাসে ৬৭ শতাংশ নমুনায় তা শনাক্ত হয়। আগস্ট মাসে কিছুটা কমে হয় ৬২ শতাংশ। সেপ্টেম্বর মাসে ১৬ শতাংশ নমুনায় ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হয়।আইইডিসিআরের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, অক্টোবর মাসে শনাক্তের হার আরও কমে আসবে।
আইইডিসিআর ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) যৌথভাবে ২০০৭ সাল থেকে দেশের ১৯টি সরকারি হাসপাতালে ইনফ্লুয়েঞ্জা পর্যবেক্ষণ করে আসছে।নতুন ঝুঁকি
১৯টি হাসপাতালে শত শত নমুনা পরীক্ষার সময় ৪টি নমুনায় অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু (এইচ৫এন১) শনাক্ত হয়েছে। এ বছর নমুনার মধ্যে প্রথম বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয় ফেব্রুয়ারি মাসে। এরপর এপ্রিল ও মে মাসে বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত দুজন শনাক্ত হন। সর্বশেষ আগস্টের একটি নমুনায় বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বার্ড ফ্লু বা অ্যাভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জার অন্যতম উৎস হাঁস–মুরগির খামার বা বাজার। ধরে নেওয়া যায়, চারজন মানুষই আক্রান্ত হয়েছেন হয় খামার থেকে, না হয় বাজার থেকে। এর অর্থ, সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার পাশাপাশি অ্যাভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জার ভাইরাসের উপস্থিতি আছে।
অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুটি ভাইরাস পাশাপাশি বা একসঙ্গে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ। দুই ধরনের ভাইরাসের মিউটেশন বা রূপান্তরের ফলে নতুন ভাইরাস দেখা দেওয়ার ঝুঁকি থাকে। আমরা সেই ঝুঁকির মধ্যে নেই, এটা বলা যাবে না। এই ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, কারও সর্দি–কাশি হলে তাঁকে পৃথক (আইসোলেশন) করে রাখতে হবে। মাস্ক পরতে হবে, নিয়মিত হাত ধুতে হবে, হাঁচি শিষ্টাচার মানতে হবে, ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে।করণীয়
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, কারও সর্দি–কাশি হলে তাঁকে পৃথক (আইসোলেশন) করে রাখতে হবে। মাস্ক পরতে হবে, নিয়মিত হাত ধুতে হবে, হাঁচি শিষ্টাচার মানতে হবে, ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে।
জনস্বাস্থ্যবিদ এ এইচ এম আলমগীর বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোতে শীতকালে ইনফ্লুয়েঞ্জা বেশি, বাংলাদেশে এর মৌসুম মনসুন বা গ্রীষ্ম–বর্ষা কালজুড়ে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে দূরে থাকা যায়, এর টিকাও আছে। জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারি মাসে টিকা নিলে বেশ কয়েক মাস সুরক্ষা পাওয়া যায়। তবে টিকা নিতে হবে প্রতিবছর।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অ য ভ য় ন ইনফ ল য় ঞ জ ইনফ ল য় ঞ জ র ত হয় ছ আগস ট সবচ য় ধরন র বলছ ন বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
গণভোটের ব্যালট পেপার হবে রঙিন
এর আগে গতকাল দুপুরে গণভোট অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণভোট অধ্যাদেশের বিষয়বস্তু এবং এ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব আখতার আহমেদ ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
এর আগে ১৩ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর ওই ভাষণের আগে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন করা হয়। পরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এ আদেশ জারি করেন। তাতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট একই দিনে করার কথা জানানো হয়। এর মধ্য দিয়ে জুলাই জাতীয় সনদ আইনি ভিত্তি পায়।
এর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ আলোচনায় ছয়টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি প্রস্তাব নিয়ে তৈরি করা হয় জুলাই জাতীয় সনদ। এর মধ্যে ৪৮টি প্রস্তাব সংবিধান-সংক্রান্ত। তবে বেশ কিছু প্রস্তাবে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের ভিন্নমত আছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য হয়। কিন্তু সনদ ও গণভোটের আইনি ভিত্তি, সময় ও পথ-পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ভিন্নমত থেকে যায়। গত ২৮ অক্টোবর সনদ বাস্তবায়নে দুটি বিকল্প সুপারিশ সরকারকে দিয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেখানে গণভোটের সময় নিয়ে সিদ্ধান্তের ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
এখন গণভোট আয়োজনের লক্ষ্যে এ–সংক্রান্ত নতুন অধ্যাদেশ জারি করল সরকার।
গণভোটে প্রশ্ন কী হবে
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাদেশের বিষয়বস্তু তুলে ধরে আইন উপদেষ্টা বলেন, চার বিষয়ে গণভোটে প্রশ্ন থাকবে একটি। প্রশ্নটি হলো ‘আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার–সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?’ যাঁরা সম্মতি জানাবেন তাঁরা ‘হ্যাঁ’ ভোট দেবেন এবং যাঁরা সম্মতি জানাবেন না তাঁরা ‘না’ ভোট দেবেন।
যে চারটি বিষয়ের ওপর গণভোট হবে সেগুলো হলো:
ক. নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
খ. আগামী জাতীয় সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট। সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
গ. সংসদে নারী প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও কয়েকটি সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে, সেসব বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।
ঘ. জুলাই জাতীয় সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।
অধ্যাদেশে জুলাই সনদ অনুসারে যে ৩০টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো তফসিল আকারে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের বিষয়ে বলা হয়েছে একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী পদে যত মেয়াদ বা যতবারই হোক, সর্বোচ্চ ১০ বছর থাকতে পারবেন, এ জন্য সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদগুলোর প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে। এ রকম ঐকমত্য হওয়া অন্যান্য প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে।
আরও যেসব বিধান আছে
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হবে, সেগুলোতেই গণভোট হবে। সংসদ নির্বাচনের জন্য তৈরি করা ভোটার তালিকাই হবে গণভোটের ভোটার তালিকা। সংসদ নির্বাচনের সময়ই হবে গণভোটের সময়। তবে গণভোটের ব্যালট জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট থেকে পৃথক হবে। গণভোটের ব্যালট হবে ভিন্ন রঙের; যাতে কেউ বিভ্রান্ত না হয়।
আসিফ নজরুল বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বা পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে, তাঁরা গণভোটেও দায়িত্ব পালন করবেন।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, যদি কোনো কারণে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মনে করেন ভোট নেওয়া যাচ্ছে না, তাহলে তিনি তা স্থগিত করতে পারবেন। এ–সংক্রান্ত অন্যান্য নিয়মকানুন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই থাকবে।
গণভোট এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল একই দিনে হবে বলে জানান উপদেষ্টা। আর গণভোট নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানো হবে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা।
ভোটের মহড়া শনিবার
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের প্রস্তুতির তথ্য তুলে ধরেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, এখন ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তাঁর ধারণা, সব ঠিকমতো চললে আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটার তালিকা সম্পন্ন হয়ে যাবে। সেই তালিকা অনুযায়ী তাঁরা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ অন্যান্য প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন তিনি।
ইসি সচিব বলেন, দুই ধরনের ব্যালট পেপার থাকবে, দুই রঙের ব্যালট পেপার হবে। প্রথাগতভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যালট পেপার হয় সাদা-কালো। এ ক্ষেত্রে গণভোটের জন্য একটা রঙিন কাগজ ব্যবহার করা হবে।
যে চার শ্রেণির নাগরিকেরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন, তাঁরা হলেন প্রবাসী, সরকারি চাকরিজীবী যাঁরা কর্মসূত্রে নিজের নির্বাচনী এলাকার বাইরে দাপ্তরিক দায়িত্ব পালন করেন, যাঁরা আইনি হেফাজতে আছেন এবং যাঁরা নির্বাচনের দিন দায়িত্ব পালন করেন।
গণভোটের কারণে ভোটকেন্দ্র বাড়াতে হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ২৯ নভেম্বর শনিবার একটা রিহার্সাল (মহড়া) করবেন। তারপর সিদ্ধান্তে আসতে পারবেন ভোটকেন্দ্র বাড়াতে হবে কি না।
প্রসঙ্গত, ইসি আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য সারা দেশে ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র এবং ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি ভোটকক্ষ (বুথ) নির্ধারণ করেছে। ইসি এবার গড়ে ৩ হাজার ভোটারের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র এবং ৫০০ পুরুষ ভোটারের জন্য একটি করে ও ৪০০ নারী ভোটারের জন্য একটি করে ভোটকক্ষ নির্ধারণ করেছে।
ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষের হিসাব করা হয়েছিল শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য। গণভোট ও সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করতে ভোটকেন্দ্র না হলেও ভোটকক্ষ বা বুথের সংখ্যা বাড়াতে হতে পারে। কারণ, দুটি ভোট দিতে সময় বেশি লাগবে। ভোটকেন্দ্র বা ভোটকক্ষ বাড়ানো হলে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার সংখ্যাও বাড়াতে হবে।