মাহফুজ-সারজিসরা নন, গণ–অভ্যুত্থানের প্রকৃত নায়ক ছিলেন সাধারণ মানুষ: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম
Published: 9th, October 2025 GMT
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের প্রকৃত নায়ক মাহফুজ–সারজিসরা নন, প্রকৃত নায়ক দেশের সাধারণ মানুষেরা, যাঁরা জীবনের মায়া ছেড়ে বুলেটের মুখে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘মাহফুজ সারজিসরা গণ–অভ্যুত্থানের নায়ক নন। গণ–অভ্যুত্থানের নায়ক হলেন হাজার হাজার মানুষ, যাঁরা রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ইতিহাসের অন্যান্য সময়ের মতো যাঁরা নায়ক, তাঁদের বঞ্চিত করে একটা অংশ। তাঁদেরও ভূমিকা ছিল, আমি অস্বীকার করছি না। কিন্তু তাঁরা সেটাকে হাইজ্যাক করে নিয়ে গেছেন।’
সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে আয়োজিত এক স্মরণসভায় এ কথা বলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
আন্দোলনের নায়ক দাবি করা পক্ষটি ৫ আগস্টের পর আন্দোলনের মুখপাত্র হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, ‘তাঁরা বলেছেন, “আর রাজনৈতিক দলগুলোকে তো পাইনি।” কিন্তু ১৬ বছর ধরে যে সংগ্রাম চলল, সেই সংগ্রামের ফসল এবং চূড়ান্তভাবে জনগণের ভূমিকার ভেতর দিয়ে কিন্তু এই গণ–অভ্যুত্থান তাঁর সফলতা অর্জন করেছিল।’
মোহাম্মদ ফরহাদ প্রসঙ্গে সিপিবির এই নেতা বলেন, দেশের যেকোনো সংকটে মোহাম্মদ ফরহাদ প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেন। তাঁর জীবদ্দশায় সংবিধান, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে সৃষ্টি হওয়া যেকোনো জটিল পরিস্থিতিতে তিনি পথ দেখাতে পারতেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম প্রসঙ্গে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সাংবিধানিক বিষয়াবলি নিয়ে গণভোট শুধু অপ্রয়োজনীয়, তা–ই নয়, এর তেমন কোনো আইনগত গুরুত্ব নেই। তিনি মনে করেন, ঐকমত্য না হওয়া বিষয়ে জনমত যাচাইয়ের এখতিয়ার সরকারের নেই। বরং নিরপেক্ষ নির্বাচন করাই এই সরকারের দায়িত্ব।
বৈষম্যহীন সমাজের কথা বললেও চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পরে দেশে মুক্তিযুদ্ধ ও নারীদের নতুন করে বৈষম্যের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া মোসলেম।
ফৌজিয়া মোসলেম বলেন, ‘হাসিনাবিরোধী আন্দোলন ছিল, তাঁকে উৎখাতের প্রয়োজন ছিল, সবই ঠিক আছে। সেই আন্দোলনে আমরাও আপনাদের সঙ্গে আছি, একমত। কিন্তু আমি একটা জায়গায় দেখি, এই যে জুলাই আন্দোলন আপনারা এটাকে বলছেন, সেই আন্দোলনের মূল কেন্দ্রটা কী, আপনারা ভেবে দেখেছেন কি না। আমি একজন মহিলা সংগঠক হিসেবে দেখি, আন্দোলনের ভিত্তিটা দাঁড়িয়েছে, একটা বৈষম্যহীনের কথা বলে একটা বৈষম্য সৃষ্টির জন্য তাঁরা আন্দোলনটা শুরু করেছেন। সেই বৈষম্য তাঁরা কোথায় সৃষ্টি করেছেন? মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে বৈষম্য, নারী জাতির সঙ্গে বৈষম্য।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল উল্লেখ করে ফৌজিয়া মোসলেম বলেন, এর নেপথ্যে ছিলেন মোহাম্মদ ফরহাদ।
সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া মোসলেম। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম জ হ দ ল ইসল ম স ল ম ল ম বল ন
এছাড়াও পড়ুন:
পোস্টাল ব্যালটের গোপনীয়তা অটুট থাকবে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য পোস্টাল ব্যালট তিনটি খামে হবে। যেখানে প্রবাসীদের ভোট প্রদান নিরাপদ হবে এবং গোপনীয়তা অটুট থাকবে।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ডাক অধিদপ্তরে বিশ্ব ডাক দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ কথা বলেন।
ডাক বিভাগ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, বাংলাদেশ ডাক দেশের অন্যতম প্রাচীন ও জনগণের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ৯ হাজার ৮৪৮টি ডাকঘরের মাধ্যমে সারা দেশে প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিচ্ছেন। ডাকঘরগুলো থেকে বর্তমানে প্রায় ২০ ধরনের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ডাক এখন শুধু বার্তা বিনিময়ের মাধ্যম নয়; বরং ডিজিটাল যুগের এক আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। ডাকযোগে ভূমি, পাসপোর্ট, স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স সেবা এখন নাগরিকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে।
ডাক বিভাগে ই-কমার্স সেবা সম্প্রসারণ ও দ্রুত ডেলিভারি ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও অটোমেশন সংযোজনের মাধ্যমে সেবার মানোন্নয়ন এবং সেন্ট্রাল লজিস্টিকস ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম চালু করা হবে বলেও জানান ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী আরও বলেন, নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার পাইলট প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে সেন্ট্রাল লজিস্টিক ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ই-কমার্সের জালিয়াতি রোধ করা হবে। আগামী মাস নাগাদ প্রকল্পটি চালু হবে। এআই ও অটোমেশন সংযোজন করে ডাক–সেবার গতি ও মান বাড়ানো হবে। এ ছাড়া ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তির পথ সুগম হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আব্দুন নাসের খান, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এস এম শাহাবুদ্দিনসহ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।