পাহাড়ি ছড়া থেকে সিলিকা বালু উত্তোলন, ৭ জনের জেল-জরিমানা
Published: 22nd, October 2025 GMT
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযানে পাহাড়ি ছড়া থেকে অবৈধভাবে সিলিকা বালু উত্তোলনের অভিযোগে সাতজনকে কারা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের বদরগাজী ও হলহলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
আরো পড়ুন:
ধামরাইয়ে অটো রাইস মিলে জরিমানা
ঝিনাইদহে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাংস বিক্রি, ২ ব্যবসায়ীকে জরিমানা
অভিযান শেষে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
ভ্রাম্যমাণ আদালত দেউন্দি গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে জসিম উদ্দিন (৪০), কাঠালবাড়ির সিরাজ মিয়ার ছেলে খয়ের মিয়া (৩১), আব্দুল গনির ছেলে আবু সায়েম (৪৭) ও হলদিউড়া গ্রামের ডেঙ্গু খানের ছেলে রউফ খানকে (৪৫) ১ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডের আদেশ দেন।
এছাড়া হলহলিয়া গ্রামের ইন্তাজ উল্যার ছেলে ফারুক মিয়া (৫৫), কাঁঠালবাড়ী গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে তাউজ মিয়া (৪১) এবং দেউন্দির আইয়ুব আলীর ছেলে আলী হায়দরকে (৫৮) ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন।
জানা যায়, পাহাড়ি ছড়া থেকে ড্রেজার মেশিনে দেদারসে বালু উত্তোলন চলছে। ছড়ার তলদেশ খুঁড়ে বালু তোলায় সরু ছড়াটি পরিণত হয়েছে গভীর খাদে। বছরের পর বছর অনিয়ন্ত্রিত বালু তোলায় হুমকির মুখে পড়েছে পুরো এলাকা। নিয়মিত বালু তোলায় ছড়ার দুই তীরও ভেঙে পড়ছে, তৈরি হয়েছে ঘরবাড়ি ধসের ঝুঁকি।
হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবল উপজেলার কোনো পাহাড়ি ছড়ায় সিলিকা বালুর মহাল ইজারা দেওয়া হয়নি। তবুও এসব এলাকায় চলছে অবাধ বালু উত্তোলন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে একাধিক বালু লুটের চক্র। তাদের নামে কথা বললেই হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।
ইউএনও মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “বুধবার ভোর থেকে অভিযান শুরু হয়। দীর্ঘ অভিযানে আটক সাতজনের মধ্যে চারজনকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং তিনজনকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।”
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “দণ্ডপ্রাপ্তদের বিকেলে কঠোর নিরাপত্তায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
ঢাকা/মামুন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশালে সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিসি-ইউএনওর সামনে হামলা–ভাঙচুর
বরিশালের মুলাদীতে একটি সেতুর নাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়।
আজ শনিবার সকালে মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর নির্মিত একটি সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। অনুষ্ঠানের জন্য সেখানে উপস্থিত জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সামনেই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা সেতুর নামফলক, সভামঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করেন এবং অনুষ্ঠানস্থলে বিছানো লালগালিচা তুলে নিয়ে যান। পরে মুলাদী ও পার্শ্ববর্তী মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী কাচিচর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. খায়রুল আলম, ইউএনও মো. গোলাম সরওয়ার, মুলাদী থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলামসহ অন্য কর্মকর্তারা সেতুর পশ্চিম প্রান্তে উপস্থিত হন। সকাল ১০টার দিকে নাজিরপুর ও রামারপোল গ্রামের লোকজন সেতুর পূর্ব পাশ থেকে ‘উদ্বোধন মানি না’ স্লোগান দিতে দিতে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। এরপর জেলা প্রশাসকসহ কর্মকর্তাদের সামনেই নামফলক, মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, সেতুটির পূর্বনির্ধারিত নাম ছিল ‘নাজিরপুর–রামারপোল সৌহার্দ্য সেতু’। স্থানীয় লোকজনের মতামত উপেক্ষা করে নাম পরিবর্তন করে ‘৩৬ জুলাই সেতু’ নামে উদ্বোধনের চেষ্টা করা হচ্ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকার সঙ্গে নাজিরপুর এলাকার যোগাযোগ উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৪ সালে আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর ‘নাজিরপুর–রামারপোল সৌহার্দ্য সেতু’ নামে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার পর চলতি বছর মূল সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়। তবে সংযোগ সড়কের কাজ অসম্পূর্ণ থাকা অবস্থায় মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে সেতুটির নাম পরিবর্তন করে ‘৩৬ জুলাই সেতু’ রাখা হয় এবং ৬ ডিসেম্বর উদ্বোধনের দিন নির্ধারণ করা হয়।
মুলাদী থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কিছু লোকের হামলা ও ভাঙচুরের কারণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে গেছে।
মুলাদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. গোলাম সরওয়ার বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সেতুটির নাম পরিবর্তন করে ‘৩৬ জুলাই সেতু’ নামে উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে নাম পরিবর্তন নিয়ে স্থানীয়রা আগেই আপত্তি জানিয়ে অভিযোগ দিয়েছিলেন, যা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছিল।