রোজার আগে খেজুরের শুল্ক কমানোর সুপারিশ ট্যারিফ কমিশনের
Published: 11th, November 2025 GMT
আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে গত বছরের মতো এবারও খেজুরের আমদানি শুল্ক ও অগ্রিম কর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে ট্যারিফ কমিশন। রোজায় খেজুরের দাম সহনীয় রাখতে পণ্যটির আমদানি শুল্ক ২৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ এবং উৎসে করহার ১০ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। এ ছাড়া খেজুর আমদানিতে বিদ্যমান ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে।
রোজা উপলক্ষে খেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর ও শুল্কায়ন যৌক্তিকীকরণ নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। প্রতিবেদনটি ইতিমধ্যে বাণিজ্যসচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে ট্যারিফ কমিশন আরও বলেছে, খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত সব ধরনের শুল্কছাড় আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বহাল রাখা যেতে পারে।
শুল্ক কমানোর প্রস্তাবের পাশাপাশি খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে আমদানিকারকের নাম, ঠিকানা ও ইটিআইএন, বিআইএন লিপিবদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা শিথিল করার অনুরোধ জানানো হয়েছে ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে। সংস্থাটি বলেছে, এতে খেজুরের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে।
ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন বলেছে, প্রতিবছর রোজার সময় খেজুরের চাহিদা বাড়ে। এ সময় পণ্যটির সরবরাহ সহজলভ্য করতে খেজুর আমদানিতে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ও আমদানি শুল্ক যৌক্তিক করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে খেজুরের চাহিদা ১ লাখ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টন। এর মধ্যে রমজান মাসে ৬০–৭০ হাজার টন খেজুরের চাহিদা থাকে। এসব খেজুর মূলত সৌদি আরব, আরব আমিরাত, তিউনিসিয়া, মিসর, জর্ডান, ইরাক, ইরান ও পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়।
ট্যারিফ কমিশনের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সব ধরনের খেজুর আমদানিতে সব মিলিয়ে ৫৭ দশমিক ২০ শতাংশ শুল্ক-কর রয়েছে। এর মধ্যে সিডি ২৫ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, অগ্রিম কর ১০ শতাংশ ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩ শতাংশ। খেজুর আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলার পর থেকে প্রায় তিন মাস সময়ের প্রয়োজন হয়। যেহেতু আগামী রোজা শুরু হতে তিন মাসের কম সময় রয়েছে, তাই যত শিগগির সম্ভব এ বিষয়ে এনবিআর ব্যবস্থা নিতে পারে।
উল্লেখ্য, খেজুরের দাম সহনীয় রাখতে গত বছর রোজা শুরুর তিন মাস আগে খেজুরের শুল্ক-কর কমানো হয়। তাতে আমদানিতে খরচ কমে এবং আমদানি বাড়ে। ফলে দাম স্থিতিশীল ছিল। এবারও একইভাবে খেজুরের শুল্ক-কর কমিয়ে দাম স্থিতিশীল রাখার সুপারিশ করেছে ট্যারিফ কমিশন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: খ জ র আমদ ন ত শ ল ক কর বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
রমজান উপলক্ষে ১০ পণ্যের আমদানিতে নগদ মার্জিন ন্যূনতম রাখার নির্দে
পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১০টি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ঋণপত্র (এলসি) খোলার সময় নগদ মার্জিন ন্যূনতম রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক নিখোঁজ
বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সরকার বিবেচনা করতে পারে: বাংলাদেশ ব্যাংক
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যাংকার–গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে চাল, গম, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, মটর, মসলা ও খেজুর-এই ১০টি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নগদ মার্জিন সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখতে হবে। এ নির্দেশনা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে এবং ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, রমজান মাসে এসব পণ্যের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। তাই আমদানি সহজীকরণের মাধ্যমে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ বজায় রাখা ও মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এর আগে রমজান মৌসুমে কিছু ভোগ্যপণ্যের আমদানিতে ১০০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণের নির্দেশনা ছিল। পরে আমদানি পরিস্থিতি ও বাজারের চাহিদা বিবেচনায় ব্যাংকার–গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সেই হার ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার সুযোগ দেওয়া হয়, যা সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ বাজারে এসব পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যাংকগুলোকে সংশ্লিষ্ট আমদানি ঋণপত্র স্থাপনে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ