আওয়ামী লীগে একজনও মুক্তিযোদ্ধা নাই : মামুন মাহমুদ
Published: 12th, January 2025 GMT
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে একজনও মুক্তিযোদ্ধা নাই। তারা ভারতের মুক্তিযোদ্ধা। ভারতের হোটেলে থেকে স্বাধীনতার পর দেশে এসে কাগজে কলমে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। বিএনপি হলো রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা। দেশকে তারাই বেশি ভালোবাসবে যারা রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছে।
যারা ভারতে বসে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে তারা দেশকে ভালোবাসবে না। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারাই প্রকৃত দেশপ্রেমিক। বিএনপিই হলো সেই রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা। বিএনপিই প্রকৃত দেশপ্রেমিক আওয়ামী লীগ নয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নয়াআটি মুক্তিনগর এলাকায় রোববার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪ টায় অধ্যাপক মামুন মাহমুদের ব্যবস্থাপনায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
মামুন মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ বিপদ দেখলেই দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যায়। বিএনপি বিপদ দেখে পালায় না। অত্যাচার নির্যাতন ও মৃত্যু যন্ত্রনা সহ্য করেও বিএনপি দেশের মানুষের পাশে থেকেছে। জনগণের সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। বিপদ দেখে দেশের মানুষকে ছেড়ে বিএনপি পালিয়ে যাবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে দেশের প্রতিটি এলাকায় গডফাদার তৈরি করেছিল। তারা জনগণের রক্ষক সেজে ভক্ষক হয়ে জনগণের সম্পদ লুট করেছে। যাদের ভয়ে মানুষ কথা বলার সাহস পায়নি। তারা জনগণকে ভোট দিতে দেয়নাই।
তিনটি নির্বাচনে বিনা ভোটে তারা নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রকে দখল করে চুরি, ডাকাতি, ব্যাংক লুট করে দেশের মানুষের উপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে কোটি কোটি নিয়ে দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে। আজ সবাই মুক্ত ও স্বাধীন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আর বিএনপির মধ্যে প্রার্থক্য হলো, আওয়ামী লীগ নেত্রী জনরোষের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, আর বিএনপি নেত্রী লাখা লাখ মানুষের ভালোবাসা ও দোয়া নিয়ে চিকিৎসার জন্য সম্মানের সাথে বিদেশে গেছেন।
তিনি বলেন, বিগতদিনে বিএনপির যারা দলের জন্য কাজ করেছে। জনগণের পাশে থেকেছে। তারাই জনগণের ভোটে এমপি মন্ত্রী হয়ে জনগণের সেবা করবে। কোন সুবিধাবাদীর জায়গা বিএনপিতে হবে না। আমাদের এলাকায় যারা বিগত দিনে লুটপাট ও ভূমিদস্যুতার সাথে যুক্ত ছিল তারা বিএনপিতে ঢুকার জন্য উঁকিঝুকি মারে। এদের কোন স্থান বিএনপিতে হবে না।
এসময় সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা থানা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Narayanganj Times
এছাড়াও পড়ুন:
স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।
তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।”
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ঢাকা/এএএম/রফিক