ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ, রায় যেকোনো দিন
Published: 24th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এখন মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার শুনানি গ্রহণ শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। যেকোনো দিন রায় ঘোষণা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
ওই মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়, যেটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
ফৌজদারি কোনো মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কারও মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যেটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করতে পারেন। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও এসব আপিলের ওপর একসঙ্গে হাইকোর্টে শুনানি হয়ে থাকে।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেল আপিল ও আপিল করেন। পৃথক জেল আপিল গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে ওঠে। সেদিন আদালত তা শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। পাশাপাশি নিয়মিত আপিল করেন কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা। আসামিদের এই ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি হয়।
গত বছরের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু করে। আজ শুনানি গ্রহণ শেষ হলো।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
শুনানি শেষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে মধ্যে এক দিন ছাড়া প্রতি কার্যদিবসে শুনানি গ্রহণ করেন আদালত। মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এখন যেকোনো দিন মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য কার্যতালিকায় আসবে। যেদিন কার্যতালিকায় আসবে, সেদিন রায় ঘোষণা করা হবে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এখন যেকোনো দিন রায় ঘোষণা হতে পারে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত
খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত করেছে এডহক কমিটি। সমিতির সদস্য সচিব শেখ নুরুল হাসান রুবা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শেখ নুরুল হাসান রুবা বলেন, ‘‘৯৪ জন আইনজীবী নির্বাচন ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্থগিতের আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে দুপুর ২টায় বিশেষ সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়। সভায় নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
আরো পড়ুন:
তৃতীয় খসড়া তালিকা প্রকাশ, বাড়ল ভোটার
যারা সংস্কারের পক্ষে, তাদের সঙ্গে এনসিপির জোট হবে: হাসনাত
নির্বাচন স্থগিতের সংবাদে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ আইনজীবীরা।
আজ রবিবার (২ নভেম্বর) বিকালে খুলনা প্রেস ক্লাবে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদ জানান জামায়াত সমর্থিত বাংলাদেশ ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল ও এনসিপি সমর্থিত স্বতন্ত্র আইনজীবী পরিষদের প্রার্থীরা।
ল’ ইয়াস কাউন্সিলের সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সেক্রেটারি মনিরুল ইসলাম পান্না বলেন, ‘‘এর আগেও মনোনয়ন বিক্রির শেষ দিনে কথিত সাধারণ সভার নামে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল। আজ একই কায়দায় আবারো এডহক কমিটি নির্বাচন স্থগিত করল। এটা অগণতান্ত্রিক, নব্য ফ্যাসিস্টের বহিঃপ্রকাশ।’’
তিনি বলেন, ‘‘দেশে অনেক আইনজীবী সমিতিতে নির্বাচন হয়েছে এবং হচ্ছে। আইনজীবী সমিতির বর্তমান এডহক কমিটি পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে, যা নতুন বিপ্লবের সঙ্গে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।’’
স্বতন্ত্র আইনজীবী পরিষদের সভাপতি প্রার্থী আকতার জাহান রুকু বলেন, ‘‘২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরে জেলা আইনজীবী সমিতিতে যে এডহক কমিটি গঠন করা হয়, তার মেয়াদ ছিল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু এডহক কমিটি টালবাহানা করে সাধারণ সভা দিয়ে মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। অনিচ্ছাসত্ত্বেও আমরা তা মেনে নিয়েছিলাম।’’
তিনি নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি জানান।
নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ২৪ থেকে ২৭ অক্টোবর ছিল মনোনয়নপত্র জমা ও উত্তোলনের শেষ দিন।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল