ভর দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণে হানা দিয়ে মারধর করে আইনজীবীদের সামনে থেকে দুই আসামিকে অপহরণ করে নিয়ে গেছেন কয়েকজন ব্যক্তি। বাদী পক্ষের লোকজন এই কাজ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান ঘটনার বিষয়ে তথ্য দিয়ে বলেন, বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুরের ৩ নম্বর জেলা দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে আসামিদের তুলে নিয়ে যাওয়ার এই ঘটনা ঘটেছে। 

দিনদুপুরে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে জামিন পাওয়া দুজন আসামিকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গাজীপুরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী-সতিন গ্রেপ্তার

সেনা কর্মকর্তা হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার

তুলে নেওয়া দুজনের নাম বাবুল ও মিলন। এ ছাড়া তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে তারা সম্পর্কে ভাই বলে জানিয়েছেন তাদের একজনের স্ত্রী দোলেনা আক্তার। তাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই তার। 

বাবুল ও মিলনের জীবন শঙ্কায় রয়েছে দাবি করে দ্রুত তাদের খুঁজে বের করে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার আকুতি জানিয়েছেন দোলেনা আক্তার।

নাজমুল করিম খান বলছেন, যারাই এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকুক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার একটি মামলায় বেশ কয়েকজন স্থায়ী জামিনের জন্য আদালতে আসেন। জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির পাওয়ার পর তারা আদালত প্রাঙ্গণে এলে বাদীর লোকজন হানা দিয়ে সেখান থেকে দুজনকে তুলে নিয়ে যান।

রাইজিংবিডি ডটকমের হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মামলার বাদীসহ বেশ কয়েকজন তখন আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। সেখানে তারা আকস্মিকভাবে লোকজনকে মারপিট শুরু করেন। এসময় আইনজীবীরা বাধা দিলে তাদের ওপরও আক্রমণ করেন তারা। 

এই মারধরের মধ্যে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি এসে জামিন পাওয়া বাবুল ও মিলন নামে দুই আসামিকে তুলে নিয়ে যান, যা ভিডিওতে দেখা গেছে।

আইনজীবী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, তাদের সামনেই আদালত প্রাঙ্গণে অতর্কিত হানা দিয়ে আসামিকে তুলে নিয়ে গেছেন কয়েকজন ব্যক্তি। যাওয়ার আগে বেশ কয়েকজনকে মারধরও করেন ওই ব্যক্তিরা। 

গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “৩ নম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল কোর্টে শ্রীপুর থানার একটি মামলার তারিখ ধার্য ছিল। ওই মামলায় ১৩ জন অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। বাদী তাদের জামিন বাতিলের আবেদন করেন। তবে আদালত তাদের জামিন বর্ধিত করেন। এরপর মামলার বাদী কিছু সশস্ত্র লোকজন নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে হামলা করেন। সেখান থেকে তারা দুজন আসামিকে অপহর করে নিয়ে গেছেন। এটি আমাদের আদালতের জন্য নিরাপত্তাহীনতা।” 

আদালত প্রাঙ্গন থেকে তুলে নেওয়া আসামির স্ত্রী দোলেনা আক্তার বলেন, “জামিন হওয়ার পর উকিল আমাদের দাঁড়াতে বলেন। এমন সময় মামলার বাদী নাজমুল ও বেশ কয়েকজন আসেন। এসেই আমাদের মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে আমরা উকিলের রুমে গিয়ে লুকাই। সেখানে গিয়ে আমার স্বামী ও দেবরকে তুলে নিয়ে গেছেন। এখন তারা কোথায় আছেন জানি না।”

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, “আজকে (বুধবার) যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা উদ্বেগের বিষয়। কিছু লোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তোয়াক্কা করছে না। এটি রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। এটি ফ্যাসিবাদেরই আরেকটি রূপ। দুপুরের পর থেকে পুলিশ এটি নিয়ে কাজ করছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।” 

ঢাকা/রেজাউল/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব ল কজন

এছাড়াও পড়ুন:

বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।

প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।

এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।

পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।

অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।

একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কক্সবাজারে অপহৃত রোহিঙ্গা উদ্ধার, আটক ৩
  • র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ: চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার
  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর
  • চাকরির নামে ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো চক্রের হোতা গ্রেপ্তার
  • কল্পনা চাকমার অপহরণের বিচার চেয়ে ফেরার পথে হামলার অভিযোগ, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির নিন্দা
  • আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার