গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজনীতিবিদরা। তবে এই দলের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করেছেন কেউ কেউ।

নানামুখী আলোচনার পর জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে আজ শুক্রবার। দলটির আহ্বায়ক হচ্ছেন সদ্য উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগকারী নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব হচ্ছেন আখতার হোসেন। যারা জুলাই অভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ প্রসঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার বর্ধিত সভার বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি সব নতুন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে স্বাগত জানায়। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রহণ কিংবা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে জনগণ।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সমকালকে বলেছেন, ‘নতুন দল যারা গঠন করছেন, তাদের আদর্শ-উদ্দেশ্য, লক্ষ্য এবং গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে কিছুই জানি না। তারা কী পুঁজিবাদ না-কি সমাজতন্ত্রের পক্ষে? শোষক না-কি মেহনতি শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে? এগুলোর কিছুই তারা পরিস্কার করেননি। আগামীদিনে তাদের পথচলার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হবে তারা কোন ধরনের রাজনীতি করতে চান। তারপরও আমি মনে করি, প্রতিটি নাগরিকের রাজনৈতিক দল করার অধিকার আছে। এই বিবেচনা ও রাজনীতির মানুষ হিসেবে আমি এটাকে স্বাগত জানাই।’

ডাকসুর সাবেক ভিপি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, নতুন দল গঠনের উদ্যোগকে একটা দিক দিয়ে ইতিবাচক বলবো। সেটা হচ্ছে- এতদিন যারা বলে এসেছেন, রাজনীতি ও রাজনীতিবিদরা খুবই খারাপ কিংবা তারাই দেশের বর্তমান দুর্দশার জন্য দায়ী, এখন তাদের মাধ্যমেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হচ্ছে। তারপরও আশা করবো- তারা যেন সাধারণ ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য রাজনীতি করেন এবং সেভাবে কর্মসূচি নেন। তাহলে জনগণও তাদের ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করবে।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক ভিপি ডা.

সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আমরা নতুন দল গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তারা দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমরা সেখানে যাবো। একইসঙ্গে তারা ইতিবাচক রাজনীতি করবেন বলেও আমরা প্রত্যাশা করছি।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও ডাকসুর আরেক সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘তারা যদি রাজনীতি করতে চান, তাহলে সেটা প্রকাশ্য হতে এতদিন লাগলো কেন, সেটা আমি বুঝতে পারি না। তাছাড়া তারা তো একটা নয়, ছাত্র সংগঠন ও রাজনৈতিক দল গঠন এবং আগের নাগরিক কমিটিকে বহাল রাখার মাধ্যমে একইসঙ্গে তিনটা সংগঠন গঠনের কথা বলছেন। আমরা যেভাবে ট্রাডিশনালি রাজনৈতিক দল গঠন করি, এটা তার সঙ্গে ঠিক যাচ্ছে না। তারপরও বলবো- আমি যেকোনো রাজনৈতিক উদ্যোগের পক্ষে। যত বেশি মানুষ রাজনীতি করবেন, ততই দেশের মঙ্গল। কিন্তু সেই রাজনীতিটা যেন ইতিবাচক হয়, সেটাই আশা করবো।’

তিনি বলেন, যারা এই দলটি গঠন করছেন, তাদের ন্যারেটিভ কী, রাজনৈতিক বক্তব্যটাই বা কী- সেটা এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি। আপাতত এটুকু বলবো- তারা যাত্রা শুরু করেছেন এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে শুভাকাঙ্খী হিসেবে তাদের সাফল্য কামনা করবো। একইসঙ্গে দেখতে থাকবো- তারা কীভাবে কতদূর যান।

নতুন ছাত্র সংগঠনের কমিটি ঘোষণা নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে সহিংসতার প্রশ্নে মান্না বলেন, দ্বন্দ্ব নিরসন করতে পারেননি তারা। এটাও একটা ভাববার বিষয় বটে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত স ব গত জ ন দল গঠন ইসল ম স গঠন গঠন র

এছাড়াও পড়ুন:

চাকসু নির্বাচন: ১১৬২ মনোনয়নপত্র বিতরণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) শেষ হয়েছে।

এতে কেন্দ্রীয় সংসদে ৫২৮টি ও হল সংসদে ৬৩৪টিসহ মোট ১১৬২টি মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

রাকসু নির্বাচন নিয়ে ৭ দাবি ছাত্রশিবিরের

সাজিদ হত্যার বিচারসহ ১৫ দাবি ইবি সংস্কার আন্দোলনের

একইসঙ্গে বুধবার চাকসুতে ১২৫টি ও হল সংসদে ২৪৬টিসহ মোট ৩৭১টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) শেষদিনের মতো মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা।

বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় তথ্যটি নিশ্চিত করেছে চাকসু নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. একেএম আরিফুল হক সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, “গতকাল মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মনোনয়নপত্র বিতরণের সর্বশেষ দিন থাকলেও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত মনোনয়ন বিতরণের সময় বাড়ানো হয়। একইসঙ্গে আজ ফরম জমা দেওয়ার সর্বশেষ সময় থাকলেও আগামীকাল (১৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে মোট ১১৬২টি মনোনয়নপত্র বিতরণ হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীরা খুব সহনশীল পরিবেশ বজায় রেখেছে। এজন্য তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।”

গত রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) শুরু হয় মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম। চারদিনে ২৬ পদের বিপরীতে চাকসুতে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও স্বতন্ত্র পদে মনোনয়নপত্র নেন প্রার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মনোনয়নপত্র গ্রহণের শেষদিন ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সাড়ে ১২টায় মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমাদানের সময়সীমা বৃদ্ধি করে নির্বাচন কমিশন।

বৃদ্ধি করা সময় অনুযায়ী, বুধবার শেষদিনের মতো মনোনয়নপত্র নেন প্রার্থীরা। আগামীকাল (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। সে হিসেবে বুধবার শেষদিনে কেন্দ্রীয় সংসদে ৩৯ জন ও হল সংসদে ৩৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র নেন।

এবারের হল সংসদ নির্বাচনে ১৪টি হল ও একটি হোস্টেল সংসদে ২০৬টি পদের বিপরীতে শেষদিন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৬৩৪টি ফরম। 

আগামীকাল ১৮ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এরপর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীদের বিষয়ে আপত্তি ও নিষ্পত্তির শেষ তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাকসু নির্বাচন: ১১৬২ মনোনয়নপত্র বিতরণ
  • ১৬ দিন ধরে অচলাবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ বাকৃবি ছাত্রশিবিরের
  • এই সরকারও পুরোনো পথে, প্রশাসনে পদ ছাড়াই পদোন্নতি