বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যৌক্তিক আন্দোলনে পুলিশ ও সেনাবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে লাঠিচার্জ ও হামলা চালিয়ে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারী মনে করেন, নিজ কর্মস্থলে লাঠিচার্জ ও হামলার শিকার হওয়া বিএসইসি তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।

বুধবার (৫ মার্চ) বিভিন্ন মিডিয়ায় বিষয়টি নানাভাবে উপস্থাপিত হওয়ায় ‘বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণের পদত্যাগ দাবি এবং কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের বক্তব্য স্পষ্টীকরণ প্রসঙ্গ’ শিরোনামে একটি বার্তা দিয়েছে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।

বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা (বুধবার) তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেছেন। দাবি-দাওয়ার কোন সুরাহা না করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যৌক্তিক আন্দোলনে পুলিশ ও সেনাবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে লাঠিচার্জ ও হামলা চালিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আহত করার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানোয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ কর্মস্থলে লাঠিচার্জ ও হামলার শিকার হওয়া বিএসইসি তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।

বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়ায় নানাভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে, যা পুরোপুরি সত্য নয়। তাই ঘটনার সঠিক বর্ণনা নিম্নে উপস্থাপন করা হলো-

জুলাই বিপ্লব ও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর অন্য সবার মতো বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও আশায় বুক বেঁধেছিল যে পুঁজিবাজার ও এর নিয়ন্ত্রক সংস্থায় সুদিন ফিরবে। কিন্তু তা হয়নি। এর আগের কমিশন যেভাবে আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জোর করে আইন-বহির্ভূত উপায়ে কাজ করতে বাধ্য করতো, এই কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনাররাও একইভাবে আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে আইন বহির্ভূত উপায়ে তাদের ব্যক্তিগত এজেন্ডা হাসিল করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে কাজ করতে বাধ্য করছে। তাদের মৌখিক নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ না করলে যেভাবে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে গালিগালাজ, দুর্ব্যবহার ও শোকজের মাধ্যমে প্রশাসনিকভাবে হয়রানি করা হয় তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এভাবে চলতে থাকলে আগের বাংলাদেশের সাথে নতুন বাংলাদেশের পার্থক্য কী হবে।

বার্তায় আরো উল্লেখ করা হয়, অতি সম্প্রতি কমিশনের একজন নির্বাহী পরিচালককে নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে যেভাবে বাধ্যতামূলকভাবে অবসরে পাঠানো হয়েছে, তা চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনারগণের স্বেচ্ছাচারী ও ব্যক্তিগত আক্রোশের স্পষ্ট উদাহরণ। কমিশনের যে কোন কর্মচারী-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে সেটার তদন্ত হতে পারে, প্রমাণসাপেক্ষে আইনানুযায়ী ও যথাযথ প্রক্রিয়ায় যে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু নিজেদের খেয়ালখুশি মতো স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত এক্সপেরিমেন্ট করার জায়গা পুঁজিবাজার না। কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের দাবি স্পষ্ট, আমরা কারো ক্রীড়নক না হয়ে, আইন কানুন মেনে দেশের মানুষের জন্য, বিনিয়োগকারীদের জন্য ও সর্বোপরি পুঁজিবাজারের উন্নতির জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাই। কিন্তু অত্যন্ত বেদনাদায়ক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো একটি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও, বাংলাদেশ ব্যাংক পেয়েছে দক্ষ ও অভিজ্ঞ নেতৃত্ব, আর পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি পেল একদল অনভিজ্ঞ অথর্ব। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবাই ইতোমধ্যে জানাই যে, বর্তমান কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদসহ অন্যান্য কমিশনারদের পুঁজিবাজারে নিয়ে ভালো ধারণা নেই, অভিজ্ঞতা নেই। এমনকি পুঁজিবাজারের উন্নতি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের কোন সদিচ্ছা নেই। এভাবে কাজ করা যায় না। তাদের অদক্ষতায় একদিকে যেমন পুঁজিবাজারে দুর্দিন যাচ্ছে, অন্যদিকে তাদের সীমাহীন দুর্ব্যবহার, স্বেচ্ছাচারী, স্বৈরাচারী ও আইন বহির্ভূত মনোভাব ও কাজে কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ হতাশ।

এমতাবস্থায় পুঁজিবাজারের উন্নতি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণসহ কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীগণের সুষ্ঠু ও স্বাধীনভাবে কাজ করার স্বার্থে ও কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের ওপর হামলার প্রতিবাদে চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও অন্যান্য কমিশনারগণের পদত্যাগ দাবি করছে। অন্যথায় আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ কর্মবিরতি পালন করবে বলে বার্তায় আরো জানানো হয়।

ঢাকা/এনটি/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র কর মকর ত ব এসইস র র জন য ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে সময় বাড়াল বিএসইসি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানিতে এক-পঞ্চমাংশ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে একজন নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে সময় বেধে দিয়েছিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে অনেক কোম্পানি ব্যর্থ হওয়ায় এবং ওইসব কোম্পানির আবেদনের আলোকে সময়সীমা বাড়িয়েছে বিএসইসি।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল প্রকাশিত গেজেটে এক বছর সময় দিয়ে গত ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিটি তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে কমপক্ষে এক জন করে নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের জন্য সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক কোম্পানি এ শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ওইসব কোম্পানি থেকে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। যার আলোকে নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএসইসির কমিশনার হিসেবে সাইফুদ্দিনের যোগদান
  • নেগেটিভ ইক্যুইটি বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা জমা দেওয়ার সময় বাড়াল বিএসইসি
  • নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে সময় বাড়াল বিএসইসি
  • সালমান, শিবলী ও সায়ান পুঁজিবাজারে ‘আজীবন অবাঞ্ছিত’
  • সালমানকে ১০০ কোটি, সায়ানকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা