যেসব অভিযোগে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিএসইসি
Published: 7th, March 2025 GMT
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে অশোভনীয় আচরণের অভিযোগে ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান পুলিশ সদস্য মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এবং কমিশনার মো.
আরো পড়ুন:
ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার কারসাজি, জড়িতদের ৫৩.২৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ড
শেয়ার কারসাজি, ২৮ বিওধারীকে ১.৮২ কোটি টাকা অর্থদণ্ড
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে ও এসির রিমোট চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের লক্ষ্য করে ছুড়ে মারে এবং বিভিন্নভাবে পেশি শক্তির মাধ্যমে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। একই সঙ্গে তারা কমিশনের চেয়াম্যানের একান্ত সচিব (সরকারের সিনিয়র সহকারী সচিব) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে লাঞ্চিত করে। আসামিরা কমিশনের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের বাধ্যতামূলক অবসরের আদেশ প্রত্যাহার, কমিশনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কারণ দর্শানোর আদেশ প্রত্যাহার এবং গঠিত তদন্ত কমিটি রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ না করার দাবিতে সন্ত্রাসী কায়দায় সরকারি অফিস কক্ষ ভাঙচুর করে, সরকারি কাজে বাধা দেয় ও প্রজাতন্ত্রের সম্পতির ক্ষতি সাধন করে।
এজাহারে আরো বলা হয়, বিগত দিনের পুঁজিবাজারের অনিয়ম অনুসন্ধানে বিএসইসি পুঁজিবাজারে অভিজ্ঞ পাঁচ জনের সমন্বয়ে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর একটি অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির অনিয়মে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। কমিশন সেই অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও রিপোর্টের সুপারিশের সূত্রে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পদক্ষেপ নেয়। তারই অংশ হিসেবে কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। কমিশনের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকায় কমিশন তাকে চাকুরি থেকে অবসর দিয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধান চলমান আছে। সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম, নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম, পরিচালক শেখ মাহবুব-উর-রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, অতিরিক্ত পরিচালক এস কে মো. লুৎফুল কবির ও যুগ্ম পরিচালক মো. রশীদুল আলমের বিরুদ্ধে শেয়ার কেলেঙ্কারিসহ পুঁজিবাজারে লুটপাটের সহায়তা করে অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগে তাদের পাসপোর্ট বাতিল করে দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
এরই ফলে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে বিভিন্ন অশোভন স্লোগান, অকথ্য ভাষা ব্যবহার এবং পেশি শক্তির মাধ্যমে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। এ ভীতিকর পরিস্থিতি প্রায় ৪ ঘণ্টা চলে। কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা অবরুদ্ধ থাকার খবরে ও বিএসইসি একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো প্রতিষ্ঠান (সিআইআই) হওয়ায় প্রথমে পুলিশ ও পরবর্তীতে সেনাবাহিনী বিএসইসিতে অবস্থান নিয়ে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমান কমিশন পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় বিএসইসির উশৃঙ্খল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বর্ণিত অপরাধের মাধ্যমে পুঁজিবাজার ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাক্রমে এজহার দায়ের করতে সামান্য বিলম্ব হয়েছে।
শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে শেরেবাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম আজম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখছেন।”
ঢাকা/এনটি/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স এসই কর মকর ত ব যবস থ ল ইসল ম ব এসইস
এছাড়াও পড়ুন:
নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে সময় বাড়াল বিএসইসি
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানিতে এক-পঞ্চমাংশ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে একজন নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে সময় বেধে দিয়েছিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে অনেক কোম্পানি ব্যর্থ হওয়ায় এবং ওইসব কোম্পানির আবেদনের আলোকে সময়সীমা বাড়িয়েছে বিএসইসি।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল প্রকাশিত গেজেটে এক বছর সময় দিয়ে গত ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিটি তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে কমপক্ষে এক জন করে নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের জন্য সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক কোম্পানি এ শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ওইসব কোম্পানি থেকে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। যার আলোকে নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।