ক্ষোভে ফুঁসছে দেশ, মধ্যরাতে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 9th, March 2025 GMT
নির্যাতন, ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতার প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। গতকাল শনিবার সারাদেশে কর্মসূচির মাধ্যমে নিপীড়কদের শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার দাবি তুলেছে নানা শ্রেণি-পেশার ক্ষুব্ধ মানুষ।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন, নারী ও কন্যার উন্নয়ন’। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ‘অদম্য নারী, শক্তিতে অজেয়’ শীর্ষক সমাবেশ করে ছাত্রদল। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। এগুলো রোধ করা না গেলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার রহস্য উন্মোচন করুন। এসব নির্যাতনের ঘটনায় পতিত ফ্যাসিস্টদের চক্রান্ত আছে কিনা, তা বের করুন। বাংলাদেশকে কোনোভাবে অস্থিতিশীল করা যাবে না।’
সমাবেশে বক্তৃতা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, সমবায়বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, আওয়ামী লীগ আমলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভুক্তভোগী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত নাফিসা হোসেন মারয়ার মামা হযরত আলী প্রমুখ। সমাবেশের সঙ্গে বইমেলা ও উদ্যোক্তা মেলা করে ছাত্রদল।
গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নারী হেনস্তার ঘটনায় উগ্রবাদী গোষ্ঠীর মদদ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, নারীর পোশাক নিয়ে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
দিবসটি উপলক্ষে কার্যালয়ের সামনে মহিলা দলের র্যালিপূর্ব সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, সমাজে মব জাস্টিসের নামে নারী নির্যাতন অব্যাহত থাকলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বিনষ্ট হবে। হেনস্তায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে।
গতকাল রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে দিবসটি উপলক্ষে বিক্ষোভ সমাবেশ করে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সমাবেশে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব সামান্তা শারমীন বলেন, ‘মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের যে ঘটনা ঘটেছে, তার বিচার দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছি। এটিই প্রমাণ করে, আমরা যে ফ্যাসিস্ট কাঠামোর বিলোপ চেয়েছিলাম, তা হয়নি।’
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, ‘বর্তমান সরকার নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। গণঅভ্যুত্থানের সময় সামনের সারিতে ১০০ নারী দাঁড়ালে, তা আমাদের কাছে হাজারো মানুষের সমান অনুপ্রেরণা জোগাত। কিন্তু এখন তারাই যখন রাজনীতিতে আসছেন, তাদের টার্গেট করে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।’
সমাবেশে বক্তৃতা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মাসুদ রানার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস সাফা, মোহাম্মদ সোহাগের স্ত্রী রিমা আক্তার, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম প্রমুখ।
দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সমাবেশে নারীর মর্যাদা ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরদার, একই কাজে সমমজুরি, কর্মক্ষেত্রে নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত, নারীবিদ্বেষী সব কর্মকাণ্ড বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ, গণপরিবহনসহ ঘরে-বাইরে নারী-শিশু ধর্ষণ এবং নির্যাতনে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানানো হয়। একই স্থানে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের ব্যানারে মানববন্ধনে কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং আইএলও কনভেনশন অনুসমর্থনের দাবি জানানো হয়।
গতকাল বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে ‘নারী সহিংসতার বিরুদ্ধে নারী’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে মানববন্ধন হয়। নারীদের এ সমাবেশ থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ, সাইবার বুলিং বন্ধ, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ব্যবস্থা এবং গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, নারী দিবস উপলক্ষে জেলায় ধর্ষণ, নিপীড়ন ও সহিংসতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে সর্বস্তরের মানুষ। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনে চার শতাধিক মানুষ অংশ নেয়। ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম চট্টগ্রাম’ এবং ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস, ২০২৫ উদযাপন পরিষদ-চট্টগ্রাম’ যৌথভাবে এ মানববন্ধন করে।
নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, দিবসটি উপলক্ষে দুপুরে আয়োজিত সোনাপুর-চৌমুহনী আঞ্চলিক মহাসড়কের নোয়াখালী টাউন হল এলাকায় মানববন্ধনে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়। নোয়াখালী নারী অধিকার জোট এ মানববন্ধন করে।
ঢাবি প্রতিবেদক জানান, ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানিয়ে মশাল মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হলের ছাত্রীরা। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হলের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ভিসি চত্বর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় হলের সামনে আসে। সেখানে মাগুরায় এক শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তারা এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। মাগুরায় শিশু ধর্ষণে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীরা। পরে এতে অন্য হলের ছাত্রীরাও যোগ দেন। দেড়টার দিকে তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।
এদিকে, দেশব্যাপী সংঘটিত ধর্ষণ, নারীবিদ্বেষী মবের আগ্রাসন এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে রাতে রাজু ভাস্কর্য থেকে ধর্ষণবিরোধী গণপদযাত্রা করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ।
রাবি প্রতিনিধি জানান, নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের আয়োজনে গতকাল প্যারিস রোডের এ কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন রাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান মারুফ, উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আফরিনা আফরিন প্রমুখ। এদিকে নারীসহ সব মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় শুরু হয়ে রাত পৌনে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে এ কর্মসূচি শেষ হয়।
ইবি প্রতিনিধি জানান, মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মানববন্ধন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। গতকাল প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধনে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ র উপলক ষ র স মন গতক ল সরক র দ বসট
এছাড়াও পড়ুন:
অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
নিরাপত্তার অজুহাতে গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির ছয়জন সমন্বয়ককে। আটক থাকার এক পর্যায়ে তাঁরা অনশন শুরু করেন। ৩২ ঘণ্টা অনশনের পর ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) দুপুরে ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের দুটি গাড়িতে করে যাঁর যাঁর ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও আবু বাকের মজুমদারকে ছয় দিন; সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে পাঁচ দিন এবং নুসরাত তাবাসসুমকে চার দিন ডিবি কার্যালয়ে তখন আটক রাখা হয়েছিল। এই ছয় সমন্বয়কের মধ্যে নাহিদ এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক। আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। সারজিস, হাসনাত ও নুসরাত এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আবু বাকের এখন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক।
ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পাওয়ার সেই ঘটনা সম্পর্কে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আমার বোনের বাসার লোকেশন (ঠিকানা) দিয়েছিলাম ডিবিকে। ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) ডিবি তাদের তত্ত্বাবধানেই আমাদের ছয়জনকে যার যার গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। বোনের বাসায় পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর আমি প্রথমে আসিফ ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে মানিকনগরের একটা জায়গায় দেখা করি। আমরা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করি। কীভাবে এক দফার (সরকার পতনের) ঘোষণায় যাওয়া যায়, সে বিষয়েও সেদিন আমরা চিন্তা করি।’
সেদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচির আওতায় গণসংগীত, পথনাটক, দেয়াললিখন, স্মৃতিচারণা ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয় রাজধানী ঢাকাসহ অন্তত ১৬টি জেলা ও মহানগরে। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কিছু জায়গায় শিক্ষক ও আইনজীবীরা অংশ নেন। তবে কোথাও কোথাও কর্মসূচিতে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অনেক জায়গায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়।
প্রতিবাদ, বিক্ষোভসেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উদ্যোগে পৃথক সমাবেশ-মানববন্ধন ও মিছিল করা হয়। পাশাপাশি সেদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্র-জনতা।
‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যা’র প্রতিবাদে ১ আগস্ট বেলা ১১টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদের সামনে সমাবেশের কর্মসূচি ছিল শিল্পী ও কলাকুশলীদের। ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’-এর ব্যানারে তাঁরা প্রথমে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ–সংলগ্ন ইন্দিরা রোডের প্রান্তে সমবেত হন। সেদিন সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিল্পীরা ব্যানার-পোস্টার নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।
পরে শিল্পীরা ইন্দিরা রোড দিয়ে শোভাযাত্রা করে ফার্মগেটে আনন্দ সিনেমা হলের কাছে সমবেত হন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই তাঁরা সেখানে সড়কের পাশে ব্যানার-পোস্টার নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীরা ছাত্র-জনতার হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, যে বর্বর পন্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে দমন করা হচ্ছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে ঘটতে পারে না।
দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীদের সমাবেশ থেকে সেদিন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের বিচার, গণগ্রেপ্তার, মামলা ও হয়রানি বন্ধের দাবি করা হয়। সমাবেশ থেকে আরও জানানো হয়, শিল্পীরা তাঁদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।
সেদিন বিকেলে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে মানববন্ধন করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। মানববন্ধনে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছিলেন, গুলি করে শিশুসহ নির্বিচার মানুষ হত্যার তদন্ত জাতিসংঘের অধীনে করতে হবে।
সেই মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল (এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) বলেন, হত্যার বিচার করতে হবে। হুকুমদাতাদেরও বিচার করতে হবে।
কূটনীতিকদের ‘ব্রিফ’জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে ১ আগস্ট বিকেলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সেদিন বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়। সেই ব্রিফিংয়ে বিদেশি কূটনীতিকেরা সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের দাবি জানান।