জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহতদের তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে গতি আসছে না। এদিকে আহতদের চিকিৎসা ও সহায়তার জন্য করা ক্যাটেগরি নিয়ে অসন্তুষ্ট অনেকেই। কারও কারও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন হলেও অর্থ সংকটে বিদেশ পাঠাতে বিলম্ব হচ্ছে। 

আহতের অধিকাংশই ছিলেন উপার্জনক্ষম। তাদের কারও কারও পরিবারের অবস্থা এখন শোচনীয়। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ও মাসিক ভাতার কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় হতাশ তারা। বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন আড়াইশ আন্দোলনকারী। ছুটি দিলেও পুনর্বাসন তালিকা থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছেন না অনেকেই।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, জনবলের স্বল্পতা ও তথ্য যাচাইয়ে বিলম্ব হওয়ার কারণে তালিকা প্রস্তুত ও পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করায় বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। তবে হাসপাতালে আহতদের বিশেষ বিবেচনায় স্মার্ট জাতীয় পত্র দেওয়া হয়েছে। এ মাসেই মিলবে জুলাই যোদ্ধাদের মাসিক ভাতা। বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে হেলথ কার্ড। দ্রুত শুরু হবে পুনর্বাসন কার্যক্রম।
এমন পরিস্থিতিতে প্রতি বছরের মতো এবারও পালিত হচ্ছে বিশ্ব পঙ্গু দিবস। আজ শনিবার এই দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ক্ষতি প্রতিরোধ ও রূপান্তরিত জীবন’। তবে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে দিবসটি খুব একটা গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয় না।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদের চূড়ান্ত তালিকা করতে গত নভেম্বরে সরকার ‘গণঅভ্যুত্থান-সংক্রান্ত বিশেষ সেল’ করে। গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে আন্দোলনে আহত, নিহত বা নিখোঁজ, বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু কিংবা আন্দোলনে সম্পৃক্ত থেকে কোনোভাবে মারা গেছেন– এমন ব্যক্তিদের নাম তালিকাভুক্ত করার কথা বিশেষ সেলের। 
গত ২১ ডিসেম্বর এ সেল ৮৬২ শহীদ ও ১১ হাজার ৫৫১ আহতের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছে। তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন গড়ে ওঠে। গত ৪ মার্চ গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের সহায়তায় মোট ৮৩ কোটি ৬৩ হাজার টাকা ৫ হাজার ৪২৯টি পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা ৭০৫টি শহীদ পরিবারের মাঝে এবং ৪৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ৪ হাজার ৭২৪ আহত ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর মাহবুবুর রহমান (স্নিগ্ধ) গতকাল বলেন, ফাউন্ডেশনের জনবলের স্বল্পতা ও আবেদনকারী সবার তথ্য যাচাই করতে গিয়ে প্রকৃত ভুক্তভোগীদের সহায়তা দিতে বিলম্ব হচ্ছে। 

এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আড়াইশ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই আন্দোলনে আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও ২৫০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে রয়েছেন আরও ৩০ জন। বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরেছেন আটজন। দেশে চিকিৎসাধীনদের সবচেয়ে বেশি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) আছেন ১০৬ জন এবং জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১২০ জন চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ শতাংশের অবস্থা গুরুতর। 

চিকিৎসাসেবায় শ্রেণিকরণে অসন্তুষ্ট
আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে তিনটি ক্যাটেগরিতে ভাগ করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের ‘এ’, মাঝারি আহতদের ‘বি’ ও কম ঝুঁকিপূর্ণদের ‘সি’ ভাগে ভাগ করে তাদের চিকিৎসা চলছে। এসব ক্যাটেগরি তৈরির প্রক্রিয়া ও সমতা নিয়ে অসন্তোষও রয়েছে আহতদের মধ্যে। আহতরা বলছেন, এই ক্যাটেগরি ত্রুটিপূর্ণ। গতকাল দুপুরে পঙ্গু হাসপাতালে কথা হয় মো.

আরাফাত হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই ক্যাটেগরি নিয়ে একটি ঘোলাটে ভাব আছে। এক পা হারানোর পরেও আমাকে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে রাখছে। এটা সংশোধনের জন্য নতুন করে আবেদন করেছি। আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। কীভাবে বাকি জীবন চলবে, সে চিন্তায় ঘুমাতে পারি না। সুস্থ হয়ে ভবিষ্যতে গাড়ি চালাতে পারব বলে মনে হয় না। পঙ্গু হাসপাতালের একই ওয়ার্ডে চারজনকে দেখা গেল, যাদের একটি করে পা কেটে ফেলেছেন চিকিৎসকরা। তারা প্রত্যেকেই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ-সহিংসতার সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

চিকিৎসাধীন আতিক হাসান বলেন, ‘আমি আহত হয়েছিলাম মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে। ১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হই এবং সেদিনই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। প্রায় চার মাস ধরে পঙ্গু হাসপাতালে (নিটোর) অবস্থান করছি। এ পর্যন্ত কোনো তালিকায় আমার নাম আসেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাদের অবস্থা বেশি জটিল, তাদের বিদেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। তারা প্রশাসনের অবহেলা দেখছেন। অনেক সময় ভালোভাবে ফিজিওথেরাপি করা হয় না, প্রয়োজনীয় সেবাও দেওয়া হয় না।’
হাসপাতালটিতে আন্দোলনে আহত ৮৮৮ জনকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬৯৬ জন গুলিতে আহত। ২৯২ জন বিভিন্নভাবে আহত। ২২ জনের পা, কয়েকজনের হাত কেটে ফেলতে হয়েছে। আটজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ডা. মো. আবুল কেনান বলেন, জুলাই আন্দোলনে আহত ১০৬ রোগী ভর্তি আছেন। জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে জুলাই আন্দোলনের আহতদের জন্য বিশেষ কক্ষ রয়েছে। আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আহত অনেকের অবস্থা গুরুতর, দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন।

ছুটি দিলেও হাসপাতাল ছাড়ছেন আহতরা
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১২০ জন চিকিৎসাধীন। হাসপাতালটিতে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩ জনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ৫০৩ জনের চোখ নষ্ট হয়েছে। দুই চোখ নষ্ট হয়েছে ৪৫ জনের। আহতদের মধ্যে সুস্থ হওয়ায় গত মঙ্গলবার ৩২ জনকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। তবে একজন ছাড়া কেউই হাসপাতাল ছেড়ে যাননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চিকিৎসক বলেন, আন্দোলনকারীদের পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য হেলথ কার্ড প্রস্তুত হচ্ছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে এককালীন আর্থিক অনুদানের কথা রয়েছে। এই কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি। আহতরা মনে করছেন, এখনই হাসপাতাল ছেড়ে গেলে এসব তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন।
সার্বিক বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব সাইদুর রহমান বলেন, আহতদের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ দিচ্ছে সরকার। অন্য কার্যক্রমও দ্রুত শুরু হবে। এ মাসের মধ্যে জুলাই যোদ্ধাদের মাসিক ভাতা চালু করা হবে। 

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র র র অবস থ আহতদ র আর থ ক র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

৯ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ, জনভোগান্তি চরমে

জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং দ্রুত স্থায়ী বিধানে যুক্ত করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় ৯ ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রেখেছেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের (আহত) ব্যানারে তাঁরা এ ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করছেন।

রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়ে আশপাশের সড়কগুলোতে। এসব সড়কে দিনভর ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। ফলে বৃষ্টির মধ্যে জীবনের তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে চলে গণপরিবহন, অনেক যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে হেঁটে হেঁটে। বিশেষ করে অফিসফেরত মানুষকে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

বেলা ১১টায় শাহবাগ মোড়ের সঙ্গে যুক্ত সব সড়কের মুখ আটকে দিয়ে সড়কের মাঝখানে অবস্থান নেন অবরোধকারীরা। এ সময় তাঁরা জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবি জানান। অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুলাই যোদ্ধা সংসদ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম ওই কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়। এ সময় অবরোধকারীরা ‘জুলাই নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘জুলাইয়ের চেতনা দিতে হবে ঘোষণা’, ‘জুলাই সনদ দিতে হবে, দিতে হবে, দিতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।

বন্ধ হয়ে পড়ে শাহবাগ থেকে ফার্মগেট, সায়েন্স ল্যাব ও গুলিস্তানগামী প্রধান সড়কগুলোও। ফলে সকাল থেকেই এসব এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এসব সড়কে চলাচলকারী গণপরিবহনগুলো বিকল্প পথে চলাচল করে।

বেলা তিনটার দিকে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ–সংলগ্ন মূল সড়কে পুলিশের ব্যারিকেড ও বাঁশ ব্যবহার করে সড়ক আটকে রেখেছেন অবরোধকারীরা। শাহবাগ থানার সামনের সড়কেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন তাঁরা।

বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব নূরে আলম বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে যাব। কোনো বাস পাচ্ছি না। রিকশায় যে কিছু দূর যাব, তারাও ভাড়া বেশি চাচ্ছে।’ একপর্যায়ে হেঁটেই রওনা দেন তিনি।

এক পথচারী ইমরান হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুই দিন পরপর সড়ক অবরোধ হয়। এর ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের।’

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হতে দেখা যায় মোটরবাইক আরোহীদের। শাহবাগ থানার সামনে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে বাধা দিলে চালক বলেন, ‘এত দাবিদাওয়া এত দিন আছিলো কই।’ তবে গণপরিবহন আটকে দেওয়া হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যানবাহন এবং তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স শুরু থেকেই চলাচল করতে দেখা গেছে।

অবরোধকারীদের দাবি

অবরোধকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি; শহীদ পরিবার ও আহতদের আজীবন সম্মান; চিকিৎসা, শিক্ষা ও কল্যাণের পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের প্রতি দায়িত্ব গ্রহণ করা; আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান ও কল্যাণমূলক ব্যয় রাষ্ট্রকে বহন করা; আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য আজীবন সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বিশেষ আইনি সুরক্ষা ও সহায়তাকেন্দ্র গঠন করা; শহীদ ও আহতদের ওপর সংগঠিত দমন-পীড়নের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচারকাজ সম্পন্ন করা এবং একটি স্বাধীন সত্য ও ন্যায় কমিশন গঠন করা।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালিদ মনসুর বলেন, সকাল থেকেই শাহবাগে অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শাহবাগ থানা-পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে অবরোধকারীদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

তবে জুলাই যোদ্ধা সংসদের মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা জানান, তাঁদের আন্দোলন চলছে। সনদ ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তাঁরা এখানেই থাকবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাশিয়ার কাছাকাছি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের
  • জুলাই সনদের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ
  • হতাহতের ছবি-ভিডিও সরাতে ও ছড়িয়ে পড়া বন্ধে পদক্ষেপ চেয়ে রিট, আদেশ ৩ আগস্ট
  • ৯ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ, জনভোগান্তি চরমে
  • জুলাই সনদের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ 
  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা