বেড়াতে গিয়ে হামলার শিকার দম্পতি, স্বামী আহত
Published: 16th, March 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় কুমারখালীতে রফিকুল (২৫) ও শাবনুর (২৩) নামের এক দম্পতির ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে কুমারখালী শহর-যদুবয়রা সড়কের গড়াই নদীর ওপর নির্মিত শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতুতে এ ঘটনা ঘটে।
হামলাকারীরা শাবনুরকে আঘাত না করলেও তার স্বামীর মাথা ও দুই হাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে। এতে গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন রয়েছেন রফিকুল।
আহত রফিকুল প্রামাণিক উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর ভবানী গ্রামের বৌ বাজার এলাকার তাবু প্রামাণিকের ছেলে। তিনি বৌ বাজার এলাকায় নরসুন্দরের কাজ করেন।
আজ রোববার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে দেখা যায়, পুরুষ ওয়ার্ডে বসে আছেন নরসুন্দর রফিকুল। তার মাথায় ও দুই হাতে সাদা ব্যান্ডেস। পাশে তার স্ত্রী শাবনুর, ভাবি কু্লসুম, দুলাভাই ইজারতসহ অন্যরা।
রফিকুল বলেন, ‘শনিবার রাতে স্ত্রী শাবনুরকে নিয়ে গড়াই সেতুতে ফুসকা খেতে গিয়েছিলাম। পরে আইসক্রিম কিনেছিলাম। সেতুর বাতিগুলো অকেজো থাকায় অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল। হঠাৎ একজন এসে আমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘তোমার সমস্যা কি? এইডা কিডা?’। আমি বলি, আপনারা যা ভাবতেছেন তা না। এটা আমার বউ। এরপর আরও চারজন আসেন। একজনের হাতে চাইনিজ কুড়াল এবং অপর তিনজনের হাতে হকিস্টিক। তারা কোনো কথা না বলেই মাথায় ও হাতে কোপাতে থাকে এবং হকিস্টিক দিয়ে মারধর করে দ্রুত চলে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি হামলাকারীদের চিনি না। কোনোদিন কথাও হয়নি। কেন হামলা করেছে, তা-ও জানি না। আমি থানায় মামলা করব।’
রফিকুলের স্ত্রী শাবনুর বলেন, ‘আমাদের দু’জনকে স্বামী-স্ত্রী না মনে করে তারা কয়েকজন আমার স্বামীকে মারধর শুরু করে। কেন এবং কারা আমার স্বামীকে হামলা করেছে, বলতে পারছি না।’
তবে রফিকুলের বড় ভাবি কুলসুম খাতুন ও দুলাভাই ইজারত আলী অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ছয় বছর আগে শাবনুরে সঙ্গে রফিকুলের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের ছয় বছরের এক ছেলে রয়েছে। তবুও বছরখানেক আগে এক ছেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ায় শাবনুর।
তারা জানান, শনিবার রাতে ঘুরে বেড়ানোর নাম করে রফিকুলকে গড়াই সেতুতে নিয়ে যান শাবনুর। আর পরকীয়ার প্রেমিক ও তার লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়েছে। তবে পরকীয়া প্রেমিকের পরিচয় দিতে পারেননি তারা।
তবে পরকীয়া প্রেম নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি রফিকুল ও শাবনুর।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’
সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’