জয়া আহসান। বরেণ্য অভিনেত্রী ও মডেল। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আসছে ২৮ মার্চ ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ে মুক্তি পাবে জয়া অভিনীত নতুন সিরিজ ‘জিম্মি’। প্রথমবার ওটিটিতে ‘২ষ’ সিরিজে জয়া হাজির হয়েছিলেন অতিথি চরিত্রে, ডাইনিরূপে। জিম্মিতে এবার তাঁকে দেখা যাবে রুনা লায়লা নামে সরকারি নিম্নপদস্থ এক কর্মচারীর ভূমিকায়। এই সিরিজ ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো তাঁর সঙ্গে–
শনিবার প্রকাশ হলো ‘জিম্মি’র ট্রেলার। জানতে চাই ‘জিম্মি’র গল্পটা কী ধরনের?
জয়া আহসান:‘জিম্মি’ একটি সামাজিক, হিউমারধর্মী ও বাস্তবসম্মত গল্প। এই গল্পে এমন কিছু বিষয় আছে, যা দর্শককে ভাবাবে। যদিও গল্পটি কোনো শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি নয়। তবুও এতে কিছু ঘটনাপ্রবাহ আছে, যা দর্শককে সচেতন করবে এবং জীবন সম্পর্কে নতুনভাবে চিন্তা করতে উৎসাহিত করবে। সিরিজের গল্পে দেখা যাবে, রুনা লায়লা সরকারি নিম্নপদস্থ এক কর্মচারী। যে ১০ বছর ধরে কোনো প্রমোশন পায় না। স্বামী-স্ত্রীর টানাটানির সংসার। উচ্চাকাঙ্ক্ষী রুনা একদিন অফিসের স্টোররুমে বাক্সভর্তি টাকা পায়। হঠাৎ পাওয়া এই টাকা নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। শেষ পর্যন্ত লোভের কাছে
জিম্মি হয়ে পড়ে সে।
এই সিরিজে আপনি অভিনয় করেছেন রুনা লায়লা চরিত্রে। এই নামটি শুনলেই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীর কথা মাথায় আসে।
জয়া আহসান: হ্যাঁ। এটি আমার কাছেও মনে হয়। নাটক, সিনেমা বা ওটিটি– যে কোনো গল্পেই চরিত্রের নাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক, যা অনেকেই অবহেলা করেন। কিন্তু এই সিরিজের নির্মাতা আশফাক নিপুণ এটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছেন এবং পরিচিত ও শক্তিশালী একটি নাম বেছে নিয়েছেন, যা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। চলতি বছরের শুরুতে সিরিজটির শুটিং হয়। ঈদে মুক্তি পাচ্ছে ‘জিম্মি’। এর আগে অন্তরাতে ক্যামিও চরিত্রে দেখা গেলেও জিম্মি বাংলাদেশে অভিনয় করা আমার প্রথম ওয়েব সিরিজ। নিপুণের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ, দারুণ এক গল্পের সিরিজ। সব দিক থেকে এটি আমার কাছে স্পেশাল।
ঈদ উৎসবে নিজের প্রথম সিরিজ নিয়ে আসতে পেরে কেমন লাগছে?
জয়া আহসান: ঈদের উৎসবে দর্শক সিরিজটি দেখবে, এটি খুব ভালো লাগার। এতে আমার সঙ্গে ভালো ভালো অভিনয়শিল্পী কাজ করেছেন। হইচই প্ল্যাটফর্ম থেকে সিরিজটি আসছে। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে অনেক ভালো কাজ হয়েছে, দর্শকও পছন্দ করেছে। আশা করছি, এবারও দর্শকের ভালো লাগবে। এখানে কাজ করে ব্যক্তিগতভাবে আনন্দ পেয়েছি। বাকিটা দর্শকের ওপরে। দর্শককে এটুকু বলব, জিম্মি ভালো লাগলে সবাইকে দেখার জন্য বলবেন।
আশফাক নিপুণের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল?
জয়া আহসান: নির্মাতা হিসেবে নিপুণ তো পরীক্ষিত। সব নির্মাতার আলাদা সিগনেচার থাকে। নিপুণের সিগনেচারও আলাদা। ও যেভাবে বলে, সেভাবে যদি আর্টিস্ট শোনে, তাহলে আর্টিস্ট এবং প্রজেক্ট দুটোর জন্যই ভালো।
অনেক বছর ধরেই দেশে ওটিটির কাজ হচ্ছে। আপনার এত দেরি হলো কেন?
জয়া আহসান:একটা ভালো কাজের অপেক্ষায় ছিলাম। চারদিকে এত এত পুরুষের গল্প। যেমন দেখুন, এবারের ঈদে দেশের সিনেমা হলগুলোতে যেসব সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে, সবকটিই পুরুষকেন্দ্রিক। নারীকেন্দ্রিক গল্পও হওয়া উচিত। নিপুণ একটি নারীকেন্দ্রিক গল্প বানাতে চেয়েছে এবং একটি চরিত্র তৈরি করতে চেয়েছে, এটাই আমাকে আগ্রহী করেছে। আমি যে কোনো কাজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় মাথায় রাখি। সেটি হলো গল্প, চরিত্র ও পরিচালক। ‘জিম্মি’র ক্ষেত্রে সব মনমতো মিলে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে আমার ওয়েব সিরিজের শুরুটা করছি হইচইয়ের সঙ্গে, মুক্তি পাবে ঈদে। সব মিলিয়ে আমার জন্য বিষয়টি বেশ রোমাঞ্চের।
আপনার অভিনীত সিনেমাগুলোর কী খবর?
জয়া আহসান:ভারতে ‘ডিয়ার মা’, ‘কালান্তর’, ‘ওসিডি’ করেছি। এসব সিনেমা মুক্তির বিষয়ে প্রযোজকরা বলতে পারবেন। আমি তো কাজ সম্পন্ন করে রেখেছি। এর মধ্যে ‘ডিয়ার মা’ হয়তো শিগগিরই আসবে। এ ছাড়া দেশে একাধিক ছবি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
ফিল্মফেয়ারে ‘ট্র্যাডিশনাল কুইন অব দ্য ইয়ার’ খেতাব জিতলেন.
..
জয়া আহসান: ঐতিহ্যবাহী গ্ল্যামার অ্যান্ড স্টাইল অ্যাওয়ার্ডে ‘ট্র্যাডিশনাল কুইন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার পেয়ে আমি দারুণ খুশি। এই স্বীকৃতির জন্য ফিল্মফেয়ারের পুরো টিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ফিল্মফেয়ার সব সময় আমাকে বিশেষ অনুভূতি দিয়েছে। এটি আমার দীর্ঘ যাত্রায় একটি নতুন সংযোজন হয়ে থাকবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।
রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।
অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা।
বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো।
বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া।
আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না।
বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’
বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা।
উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।
ঢাকা/টিপু