প্রেসিডেন্টের আদালতের আদেশ মেনে চলা উচিত বলে মনে করেন ৮২ শতাংশ মার্কিন: রয়টার্সের জরিপ
Published: 26th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সব সময় ফেডারেল আদালতের আদেশ মেনে চলা উচিত বলে মনে করেন বেশির ভাগ মার্কিন নাগরিক। বার্তা সংস্থা রয়টার্স/ইপসসের এক জরিপে এমনটা দেখা গেছে। যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শুরু থেকেই বিচারকদের সমালোচনা করছে, যাঁরা কিনা ট্রাম্পের কয়েকটি নির্বাহী আদেশ আটকে দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার বিষয়টি সামনে এলে সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা, বিশেষ করে ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির সদস্যরা তাঁর সিদ্ধান্তের প্রতি বেশি নমনীয় থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্পের শীর্ষ অগ্রাধিকারগুলোর একটি অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো।
গত রোববার শেষ হওয়া তিন দিনের এ সমীক্ষায় দেখা গেছে, এতে ৮২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী এই বিবৃতির সঙ্গে একমত যে না চাইলেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের ফেডারেল আদালতের রায় মেনে চলা উচিত। এ সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের বেশির ভাগ ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান।
যুদ্ধকালীন ক্ষমতার অধীনে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অভিবাসীদের বিতাড়ন সম্পর্কে বিশেষভাবে জিজ্ঞাসা করা হলে ৭৬ শতাংশ রিপাবলিকান তাঁর এ পদক্ষেপের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। যদিও আদালত তাঁর এই পদক্ষেপ স্থগিত করে দিয়েছেন। ওই রিপাবলিকানরা মনে করেন, আদালতের স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসীদের বিতাড়ন অব্যাহত রাখা উচিত। অন্যদিকে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
সমীক্ষার ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ট্রাম্পের দলের বেশির ভাগ সদস্য এখনো বিশ্বাস করেন, সাধারণত মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত করার এখতিয়ার থাকা উচিত আদালতের। তবে যেসব মানুষ দেশের জন্য হুমকিস্বরূপ, তাঁদের বিতাড়িত করার ক্ষেত্রে রিপাবলিকানরা আদালতের আদেশ অমান্য করার পক্ষে ট্রাম্পকে সমর্থন করবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প বল ক ন
এছাড়াও পড়ুন:
গণভোটে সংস্কার চায় নুরের গণঅধিকার
গণভোটের মাধ্যমে সংস্কারের বৈধতা চায় গণঅধিকার পরিষদ। দলটি জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, প্রধানমন্ত্রী পদ দুইবারে সীমাবদ্ধ রাখা ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের সুপারিশে একমত হয়েছে। সুপারিশ করেছে, গঠনের তিন বছর পর নিবন্ধন পাবে রাজনৈতিক দল।
সোমবার সংসদে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে এসব মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরে গণঅধিকার। দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, সংস্কার কিংবা জুলাই সনদকে ভবিষ্যতে যাতে কেউ চ্যালেঞ্জ বা বাতিল করতে না পারে, সে সিদ্ধান্ত গণভোটে চূড়ান্ত করতে হবে।
দ্রুত নির্বাচনের দাবি করা বিএনপি আগামী সংসদে সংস্কার বাস্তবায়ন চায়। নুরুল হক নুরও সম্প্রতি কয়েকবার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি তুলেছেন। গতকাল সংলাপের পর নুর বলেন, ‘গণভোটের পরে জাতীয় নির্বাচনের আশা করি। যেসব সুপারিশে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হবে, সেগুলো বর্তমান সরকারের অধীনেই বাস্তবায়ন চায় গণঅধিকার। বাকিগুলো নির্বাচিত সরকার এসে করবে।’
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা খর্বে এনসিসি গঠনের সুপারিশে গণঅধিকার একমত জানিয়ে নুর বলেন, কাউন্সিলের পরিবর্তে পরিষদ নামকরণের প্রস্তাব করেছি।
সুপারিশে বলা আছে, এনসিসি প্রধান বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, তিন বাহিনীর প্রধানগণ ও প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ দেবে। গণঅধিকার চায়, নির্বাচনকালীন উপদেষ্টা পরিষদও এনসিসির সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে হবে। পুলিশপ্রধানের নিয়োগও এনসিসির মাধ্যমে করার সুপারিশ করে গণঅধিকার।
কমিশন সুপারিশ করেছে, সংসদের প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষের আসন জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে বণ্টন হবে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ, আসন পেতে কমপক্ষে ৩ শতাংশ ভোট পেতে হবে। গণঅধিকার আনুপাতিক পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের নির্বাচনে একমত হলেও দলটি প্রস্তাব করেছে ১ শতাংশ ভোট পেলেই আসন পাবে রাজনৈতিক দল। একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, তত শতাংশ আসন পাবে।
বিএনপি এনসিসি, আনুপাতিক পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন এবং প্রধানমন্ত্রীর পদ দুইবারে সীমাবদ্ধ করার সুপারিশে একমত নয়। কমিশন এই তিন সুপারিশকে মৌলিক পরিবর্তন বলছে। জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি এই তিন সুপারিশে একমত। একই অবস্থান জানিয়েছে বিএনপির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত গণঅধিকার। একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা এবং দলীয় প্রধান হতে পারবেন না– কমিশনের এ সুপারিশেও একমত দলটি। যদিও বিএনপির এ সুপারিশে ঘোর আপত্তি আছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নবগঠিত এনসিপির সমালোচনায় মুখর হয়েছেন গণঅধিকারের নেতারা। যদিও এনসিপির উদ্যোক্তার বড় অংশই একসময় গণঅধিকার নেতাদের সঙ্গে ছিলেন। ২০২১ সালে গঠিত গণঅধিকার সভাপতি নুর বলেছেন, ‘মাসে গড়ে আটটি করে রাজনৈতিক দল গঠিত হচ্ছে। রাজনৈতিক শৃঙ্খলার জন্য নিবন্ধনের শর্ত বহাল রাখা উচিত। আমরা বলেছি, একটি রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন পেতে ন্যূনতম তিন বছর সক্রিয় কার্যক্রম চালাতে হবে।’
সংবিধানের মূলনীতিতে বহুত্ববাদের পরিবর্তে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি’ যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে গণঅধিকার। সংসদের মেয়াদ চার বছর, প্রার্থী হতে ন্যূনতম বয়স ২৩ বছর করারও প্রস্তাব দিয়েছে। সংবিধান সংশোধনে সংসদের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ সংশোধনে গণভোটের সুপারিশ করেছে। ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সুপারিশে একমত নয় গণঅধিকার। দলটি প্রস্তাব করেছে, অর্থবিল এবং আস্থা প্রস্তাব বাদে বাকি সব বিষয়ে এমপিরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন।
নুর বলেছেন, আস্থা ভোট দলের বাইরে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকলে এমপি কেনাবেচার নজির উপমহাদেশের রাজনীতিতে রয়েছে।
গণঅধিকার ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬ সুপারিশের ১২৭টিতে একমত জানিয়েছে। ১৫টিতে একমত নয়। বাকি ২৩টিতে আংশিক একমত বলে জানিয়েছে। গতকাল আরও আটটি সুপারিশে নতুন করে একমত হয়েছে। সংলাপে সভাপতিত্ব করা কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সবার লক্ষ্য জাতীয় সনদ তৈরি, যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে।