এখনো ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে: আমীর খসরু
Published: 29th, March 2025 GMT
এখন আরেক দল শেখ হাসিনার মতো ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ শনিবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এখন আবার আরেক দল নেমেছে। এরা বলছে, আমাদের এতগুলো কাজ করতে হবে, সংস্কার করতে হবে। ভোটের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তারা তো বুঝতে পারছে না, তারা যে শেখ হাসিনার ভাষায় জনগণের কাছ থেকে ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ভোটকে বিলম্বিত করে, দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।’
নগরের পাঁচলাইশ এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সংস্কার, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নতুন বাংলাদেশে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘দেশের পরিবর্তন আসবে ভোটের মাধ্যমে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার সংসদে গিয়ে দেশের সব পরিবর্তন আনবে। আর কাউকে পরিবর্তনের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি এখানে। তাই অতিসত্বর নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। তারাই ঠিক করবে দেশ কোন পথে যাবে। আর কেউ নয়।’
কিছু কিছু শক্তি জনগণকে ভয় পাচ্ছে মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, ‘আজকে কিছু কিছু শক্তি, যারা জনগণকে ভয় পায়, যাদের জনগণের ওপর আস্থা নেই, যারা নির্বাচনব্যবস্থাকে ভয় পায়, নির্বাচনে যেতেও ভয় পায়, তারা জানে নির্বাচনে গেলে তাদের হয়তো যে ফলাফল আসা দরকার, সেটা আসবে না। সে জন্য শেখ হাসিনা ১৫ বছর জনগণকে নির্বাচনে যেতে দেয়নি।’
আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি। গণতন্ত্র ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা গণতন্ত্র চাই, মানবাধিকার চাই, আইনের শাসন চাই। দেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত জনগণের মাধ্যমে একটি সংসদ চাই, সরকার চাই, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে। সবাই মিলে এটা বাস্তবায়ন করব।’
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, উচ্ছৃঙ্খল হলে চলবে না। নতুন রাজনীতি হচ্ছে শৃঙ্খলার রাজনীতি। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন এসেছে। সেই পরিবর্তনের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। মানুষের নতুন চিন্তা ধারণ করতে হবে, তাহলে বিএনপির রাজনীতি এগিয়ে যাবে।
শুলকবহর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী শামসুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাসান উসমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম, সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান।
মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ২৫ মার্চ যখন পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল, তখনো ৫ আগস্টের মতো আওয়ামী লীগ পালিয়েছিল। তখন বাঙালি যা পেয়েছে, তা-ই নিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র জনগণ র র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।
জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।
এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।
জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।
জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।