দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা-ভাঙচুরে ১০ মামলা, গ্রেপ্তার ৭২
Published: 9th, April 2025 GMT
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে গত সোমবার বিক্ষোভ চলাকালে কয়েকটি শহরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাটের ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ১০টি মামলা করা হয়েছে। আরও তদন্ত চলছে। এসব নিন্দনীয় কাজে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আরও মামলা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৮টা নাগাদ এই ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, খুলনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩৩ জন, সিলেটে ১৯, চট্টগ্রামে ৫, গাজীপুরে ৪, নারায়ণগঞ্জে ৪, কুমিল্লায় ৩ ও কক্সবাজারে ৪ জনকে।
ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ থেকে কিছু দুর্বৃত্ত হামলা, লুট ও বিশৃঙ্খলা ঘটাতে পারে– এমন আগাম তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে ছিল না। ফলে প্রস্তুতি না থাকায় অনেক স্থানে কেএফসি, ডোমিনোজ, বাটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নির্বিচারে হামলা হয়েছে। ‘মব’ সৃষ্টি করে প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ ও শঙ্কা দেখা যাচ্ছে। হামলার শিকার অনেক প্রতিষ্ঠান গতকাল মঙ্গলবার বন্ধ করে রাখে কর্তৃপক্ষ। কোনো প্রতিষ্ঠানের সামনে ছিল পুলিশি নিরাপত্তা।
এদিকে গেল সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাটে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬০ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ দপ্তর। মামলা হয়েছে একাধিক। গতকালও নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে কোকা-কোলার গুদামে হামলার চেষ্টাকালে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সোমবার জুতাসহ অন্য মালপত্র লুটপাটের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকে নিন্দা জানান। গতকাল বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি এক বিবৃতিতে হামলার নিন্দা জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে। পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পুলিশের টহল বাড়ানোর কথা বলেছেন তারা।
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক মুহাম্মদ নুরুল হুদা সমকালকে বলেন, পর্যাপ্ত তথ্য ছিল না, এটি স্পষ্ট। দৃশ্যমান ছিল না প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। এক ধরনের নির্লিপ্ততা দেখা গেছে। যখন বিনিয়োগ সম্মেলন চলছে, সে সময়ে এমন ঘটনা ভুল বার্তা যাবে। যে কেউ প্রতিবাদ জানাতে পারেন, তবে সেখানে সহিংসতা কেন হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড.
পুলিশ সদরদপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। কয়েকটি স্থানে মব থেকে দোকান ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ জড়িতদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে। এরই মধ্যে অনেককে ধরা হয়েছে। ভিডিও এবং ছবি দেখে অন্যদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। কেন এই নৈরাজ্য ঠেকানো গেল না– এমন প্রশ্নে পুলিশের মুখপাত্র বলেন, বিক্ষোভ থেকে তাৎক্ষণিক এটি হয়েছে। আগামীতে এ ধরনের কর্মসূচিতে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।
গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সতর্ক রয়েছি। তবে যারা আয়োজক, তাদের কর্মসূচি থেকে কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ড হলে দায়দায়িত্ব এড়াতে পারেন না তারা।
এদিকে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা এখানে লক্ষণীয়। উচিত ছিল আগে থেকেই এখানে সতর্কতা নিশ্চিত করা।
গতকাল এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বলেছে, ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে যেসব উচ্ছৃঙ্খল যুবক বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে, তারা আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্টদের দোসর।
এদিকে পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জড়িতদের গ্রেপ্তার ও এ ধরনের লুটপাটের পুনরাবৃত্তি রোধে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। সাইবার ইউনিটসহ একাধিক টিম ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনা থেকে ৩১, সিলেট ১৬, নারায়ণগঞ্জ ৪, গাজীপুর ৪, কুমিল্লা ৩, চট্টগ্রাম ১ ও কক্সবাজার থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, লুট করে নেওয়া জুতা বিক্রি করতে অনেকে ফেসবুকে ‘বিজ্ঞাপন’ দেন। সেই সূত্র ধরেই গতকাল কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর গতকাল যারা গ্রেপ্তার হন, তাদের অনেকে বয়সে তরুণ। স্বেচ্ছায় নাকি কারও ইন্ধনে তারা লুটপাটে অংশ নিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আটক গ র প ত র কর এক ধরন র ল টপ ট র এ ধরন র ইসর য় ল গতক ল ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে ইসলামী আন্দোলনের পরিচিতি সভা ও শপথ গ্রহণ
মুক্তির মূলমন্ত্র ইসলামী শাসনতন্ত্র, শুধু নেতা নয় নীতির পরিবর্তন চাই পীরসাহেব চরমোনাই এই স্লোগানকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন কমিটির পরিচিতি সভা ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান (৩০ জুলাই) বুধবার বিকেলে মোগড়াপাড়া গোহাট্রা অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মুহা আব্দুল লতিফ এর সভাপতিত্বে মুহা. জয়নাল আবেদিন এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (নারায়ণগঞ্জ -৩) সোনারগাঁও আসনের হাতচপাখা মার্কার পদপ্রার্থী মুহা ফারুক আহমাদ মুন্সি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন মুজাহিদ কমিটির সদর হাজী মুহা আলী আহম্মদ মুন্সি, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সহ-সভাপতি মাওঃ আবুল কালাম আজাদী।
এসময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের কমিটিকে সপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান অতিথি।