গ্লোবাল স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ভিভো দেশের বাজারে উন্মোচন করেছে নতুন স্মার্টফোন ‘ভি৫০ লাইট’। জনপ্রিয় তারকা ও শুভেচ্ছাদূত তাহসান রহমান খানের উপস্থিতিতে এক জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে নতুন ফোনটি লঞ্চ করা হয়।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) লঞ্চ হওয়া এই ফোনে আল্ট্রা স্লিম ডিজাইনের সঙ্গে সেরা পারফরম্যান্স – দুটোই একইসাথে পাওয়া যাবে। মাত্র ৭.
হাই-গ্লস ফিনিশড মেটাল ফ্রেমের স্মার্টফোনটির অত্যন্ত সরু বেজেল- এর ৬.৭৭ ইঞ্চির এফএইচডি এবং ২.৫ডি পো-লেড স্ক্রিন ভিজ্যুয়াল এক্সপেরিয়েন্সকে করবে আরো প্রাণবন্ত।
আরো পড়ুন:
রেডমি সিরিজের নতুন দুই ফোন আনলো শাওমি
বাংলাদেশে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডধারী স্মার্টফোন আনলো অনার
দুটি ট্রেন্ডি কালার অপশনে এসেছে ভি৫০ লাইট। টাইটেনিয়াম গোল্ড, মরুভূমির গোধূলির আলো থেকে অনুপ্রাণিত এ সংস্করণটি। অন্যদিকে, ফ্যান্টম ব্ল্যাক উপস্থাপন করে এক রহস্যময় অথচ অভিজাত উপস্থিতি। আলট্রা ক্লিয়ার সানলাইট ডিসপ্লে সহ ১২০ হার্জ আল্ট্রা ভিশন রিফ্রেশ রেট থাকার ফলে স্ক্রলিং, গেমিং বা ভিডিও দেখা সবই হবে স্মুথ ও প্রাণবন্ত। তাছাড়াও ফোনটিতে আছে ১৮০০ নিট পর্যন্ত ব্রাইটনেস ও সার্টিফায়েড এসজিএস লো লাইট, যা দীর্ঘসময় ফোন ব্যবহারেও সুরক্ষা দিবে চোখকে।
শক্তিশালী ৬৫০০ এমএএইচ ব্লুভোল্ট ব্যাটারির সাথে ৯০ওয়াট ফ্ল্যাশচার্জ নিশ্চিত করে দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফ আর সুপারফাস্ট চার্জিং। মাত্র কয়েক মিনিটের চার্জেই পাওয়া যাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাকআপ। আরো থাকছে রিভার্স চার্জিং। ফলে আর দরকার পরবে না পাওয়ার ব্যাংকের। পাঁচ বছর পরও ব্যাটারি ৮০% এর বেশি সক্ষমতা ধরে রাখবে।
টেকসই নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করতে ফোনটিতে রয়েছে মিলিটারি-গ্রেড সুরক্ষা, ৫-স্টার ড্রপ রেজিস্ট্যান্স এবং শক্তিশালী শিল্ড গ্লাস, যা ২০% বেশি ধাক্কা সহ্য করতে পারে। আইপি৬৫ সার্টিফিকেশন থাকায় ফোনটি পানি ও ধুলাবালিতেও নিরাপদ। স্ন্যাপড্রাগন ৬৮৫ প্রসেসর দিয়ে কাজ চলবে দ্রুত, গেমিং বা ভিডিও সব কিছু হবে মসৃণভাবে।
৫০ মেগাপিক্সেল সনি আইএমএক্স৮৮২ সেন্সর ও অরা লাইট পোর্ট্রেট প্রযুক্তির ফোনটি দিয়ে কম আলোতেও প্রফেশনাল কোয়ালিটির ছবি তোলা যাবে। ৩২ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরায় সেলফিগুলোও হবে নিখুঁত ও স্টুডিও-লুকের।
ভিভো ভি৫০ লাইটের লঞ্চিং অনুষ্ঠানে ভিভো বাংলাদেশের মার্কেটিং ডিরেক্টর ডেভিড লি বলেন, “বাংলাদেশে উদ্ভাবনের প্রতি মানুষের দুর্দান্ত আগ্রহ ও প্রাণচঞ্চলতা দেখাটা সত্যিই আনন্দদায়ক। ভিভোতে আমরা সবসময় এমন প্রযুক্তি ও ডিজাইন দিতে চেষ্টা করি, যা প্রিমিয়াম হলেও ব্যবহারকারীদের জন্য দামের দিক থেকে যথার্থ। ভি৫০ লাইট তারই চমৎকার একটি উদাহরণ – এটি শক্তিশালী ফিচার, দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন এবং সৃজনশীলতাকে উজ্জীবিত করা ক্যামেরা এক্সপেরিয়েন্সের এক নিখুঁত সমন্বয়। স্মার্টফোনটি আল্ট্রা স্লিম এবং আগের চেয়েও বেশি শক্তিশালী।”
ভিভোর নতুন এ ফোনের ৮ জিবি+ ৮ জিবি এক্সটেন্ডেড র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টের দাম ২৯ হাজার ৯৯৯ টাকা, আর ২৫৬ জিবি ভ্যারিয়েন্টের দাম ৩২ হাজার ৯৯৯ টাকা।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
খেলার নামে আদম পাচার ঠেকাতে তৎপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ
বিদেশে খেলোয়াড় পাঠানোর নামে মানব পাচারের ঝুঁকি রোধ এবং যোগ্য খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নিশ্চিত করতে নতুন নিয়ম চালু করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। ৯ অক্টোবর এনএসসি এক চিঠিতে ফেডারেশনগুলোকে জানিয়েছে, এখন থেকে বিদেশে ক্রীড়া দল পাঠানোর আগে ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে ফ্লাইটের কমপক্ষে ১০ দিন আগে জিওর (সরকারি আদেশ) জন্য প্রস্তাব পাঠাতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচিত খেলোয়াড়দের ফিটনেস ও পারফরম্যান্স–সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্রও এনএসসিকে দিতে হবে।
অভিযোগ আছে, কিছু ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন অনেক বছর ধরেই দলের সঙ্গে ভুয়া খেলোয়াড়-কর্মকর্তা পাঠিয়ে আদম পাচার করে আসছে। দুই একটা ঘটনা সামনে এলেও এসবের বেশির ভাগই থেকে যায় আড়ালে। ছোট খেলাগুলো থেকেই এ ধরনের অভিযোগ বেশি আসে। এনএসসির একটি সূত্র জানিয়েছে, মূলত এ ধরনের অপকর্ম ঠেকাতেই বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে ফ্লাইটের অন্তত ১০ দিন আগে জিওর প্রস্তাব পাঠানোর নিয়ম করা হয়েছে। এনএসসির পরিচালক (ক্রীড়া) আমিনুল এহসান সরাসরি তা না বললেও তাঁর কথায়ও সে আভাস আছে, ‘আমি বলব না শুধু আদম পাচার রোধ করতে এই নিয়ম করেছি। তবে কোথাও কোথাও এসব খেলার নামে মানব পাচারের প্রশ্ন চলে আসে।’
অনেক সময় শুনি, কোনো কোনো ফেডারেশন ভুয়া খেলোয়াড় নিয়ে যায়। এনএসসির উদ্যোগটাকে তাই ভালোই বলব। এটা জবাবদিহির মধ্যে পড়ে।ফারহাদ জেসমিন, সাবেক অ্যাথলেট ও বিএও অ্যাথলেটস কমিশনের চেয়ারম্যানএনএসসির কাছে ফেডারেশন বা অ্যাসোসিয়েশন এত দিন জিওর জন্য খেলোয়াড়দের নামই শুধু পাঠাত। যাঁর নাম দেওয়া হতো, তিনি আসলেই খেলোয়াড় কি না বা খেলোয়াড় হলে তাঁর যোগ্যতা কী বা যোগ্য কাউকে বাদ দিয়ে অযোগ্য কাউকে নেওয়া হচ্ছে কি না, এসব যাচাই–বাছাই করা হতো না। এনএসসি তাই জানত না কিসের ভিত্তিতে একজন খেলোয়াড়কে দলে নির্বাচিত করা হয়েছে। নতুন নিয়মে এনএসসিকে এসব দিতে হবে।
জিওর জন্য আবেদনকারীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে সময় লাগে বলে ১০ দিন আগে তালিকা চাওয়ার যুক্তি আছে। কিন্তু পারফরম্যান্স আর ফিটনেসের তথ্যপ্রমাণও পাঠানোর নিয়মটা একটু অভিনবই, যা নিয়ে অবশ্যই নানা রকম প্রশ্ন তোলা যায়। তবে জিওর জন্য ফ্লাইটের ১০ দিন আগে নাম চাওয়ার নিয়মটাকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাথলেটস কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক অ্যাথলেট ফারহাদ জেসমিন লিটি বলেছেন, ‘অনেক সময় শুনি, কোনো কোনো ফেডারেশন ভুয়া খেলোয়াড় নিয়ে যায়। এনএসসির উদ্যোগটাকে তাই ভালোই বলব। এটা জবাবদিহির মধ্যে পড়ে।’
আরও পড়ুনবিশ্বকাপের আগে সৌদি লিগে খেলতে চেয়েছিলেন মেসি, সৌদি সরকারের ‘না’১১ ঘণ্টা আগেআদম পাচার যেহেতু সব ফেডারেশন করে না, ক্রিকেট-ফুটবলসহ অনেক ফেডারেশনের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের তথ্য এনএসসিকে দেওয়াটা বিব্রতকর হতে পারে। কারণ, এই ফেডারেশনগুলো একটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দল গড়ে। তাদের সব তথ্য চাওয়া ফেডারেশনের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ কি না, এমন প্রশ্ন আসেই।ক্রীড়াঙ্গনে স্বজনপ্রীতি ঠেকাতেও এ নিয়ম ভূমিকা রাখবে বলে ফারহাদ জেসমিনের আশা, ‘অনেক ফেডারেশন অনেক সময় যোগ্যতার বিচার না করে নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড় নিয়ে যায়। দেখে মনে হয়, বিদেশভ্রমণই মুখ্য, পারফরম্যান্স মুখ্য নয়।’ বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, ‘এটা ভালো উদ্যোগ। কারণ, এনএসসির জানার অধিকার আছে, বিদেশে টুর্নামেন্টে আমরা কাদের নিয়ে যাচ্ছি।’ সম্প্রতি হকি তারকা রাসেল মাহমুদকে বয়সের অজুহাতে বাদ দেয় হকি ফেডারেশন। এ নিয়ে সমালোচনা হলে এনএসসিকে বিষয়টি তদন্তও করতে হয়।
এনএসসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রিকেট-ফুটবলসহ সব খেলাতেই বিদেশে দল পাঠানোর জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। কিন্তু আদম পাচার যেহেতু সব ফেডারেশন করে না, ক্রিকেট-ফুটবলসহ অনেক ফেডারেশনের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের তথ্য এনএসসিকে দেওয়াটা বিব্রতকর হতে পারে। কারণ, এই ফেডারেশনগুলো একটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দল গড়ে। তাদের সব তথ্য চাওয়া ফেডারেশনের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ কি না, এমন প্রশ্ন আসেই।
আরও পড়ুনআগে চা পরে লাঞ্চ—বদলে যাচ্ছে ক্রিকেটের শতবর্ষ পুরোনো এক রীতি১৫ ঘণ্টা আগেএনএসসির পরিচালক আমিনুল এহসান অবশ্য তা মনে করেন না, ‘প্রায় প্রতিদিনই এনএসসির কাছে অনেক খেলোয়াড় অভিযোগ করেন, কোনো না কোনো কর্মকর্তার অপছন্দের কারণে নাকি তিনি দল থেকে বাদ পড়েছেন। এ কারণেই খেলোয়াড় নির্বাচনের তথ্যগুলো এনএসসির জানা থাকলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়কে একটা উত্তর দেওয়া যায়। এটা ফেডারেশনের কাজে হস্তক্ষেপ নয়। স্বচ্ছতার স্বার্থে এনএসসি তা জানতে চাইতে পারে।’