ভোক্তাদের শোষণ করার জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে করা চুক্তিগুলোতে বাড়তি দাম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই ট্যারিফ পর্যালোচনা করতে একটি কমিটি কাজ করছে। ‘জ্বালানি–সংকট: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে শনিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এসব কথা বলেন। তিনি আশ্বাস দেন এবারের গ্রীষ্মে লোডশেডিং সীমিত রাখার চেষ্টা করা হবে।

রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এ সেমিনারের আয়োজন করে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স, বাংলাদেশ (এফইআরবি)।

বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, বকেয়া বিল নিষ্পত্তি করা হয়েছে। তাই কয়লা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), জ্বালানি তেলের মতো প্রয়োজনীয় জ্বালানি আমদানি করা যাবে। আশা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি সামলানো যাবে। তবে খরচও কমাতে হবে। লোডশেডিংয়ে গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্য থাকবে না।

বকেয়া শোধ করতে গিয়ে ভর্তুকি বেড়েছে, এটি আরও বাড়বে কি না; সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, চলতি অর্থবছরে বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পে কাটছাঁট করা হয়েছে। এতে অনেক অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো হয়েছে। সাশ্রয় করা অর্থ বকেয়া শোধে কাজে লেগেছে। আগামী বছর তো বকেয়ার দায় নেই। তাই যতটুকু আমদানি হবে, ততটুকুর বিল। ভর্তুকি বাড়বে না, আরও কমবে।

সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, সমুদ্রে তেল–গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র জমা না দেওয়ার বিষয়ে কয়েকটি বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে পেট্রোবাংলার কমিটি কথা বলেছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে উৎপাদন অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি) সংশোধন করা হচ্ছে। এরপর নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে।

কাতারের জ্বালানিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, বকেয়া শোধ করায় দাম কমানোর বিষয়ে বলা হয়েছিল। কাতার বলেছে, বিদ্য মান চুক্তিতে কিছু করা যাবে না। তবে ভবিষ্যতে আরও এলএনজি আমদানি করা হলে, তারা কম দামে দেবে।

শিল্পে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বেশি দামে গ্যাস নেওয়ার জন্য ৬০০ থেকে ৭০০ আবেদন জমা পড়েছে। তারা প্রতি ইউনিট ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দিয়ে গ্যাস নিতে চায়। অথচ সবাই বলেছে, বিনিয়োগ ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। আর বলছে বৈষম্য, কিসের বৈষম্য। যার প্রয়োজন সে যদি বেশি দামে নেয়, তাহলে কিসের বৈষম্য। গ্যাসের দাম বেশি হলে তারা বিকল্প জ্বালানি দেখবে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, পুরোপুরি আমদানির দিকে চলে যাচ্ছে জ্বালানি খাত। কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের পুরো সক্ষমতা ব্যবহার না করে বেশি খরচের তেলচালিত কেন্দ্র চালানো হচ্ছে। জ্বালানি শুধু উন্নয়নের বিষয় নয়, ন্যায়ের বিষয়, যা প্রতিষ্ঠা করা যুদ্ধের মতো।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, জ্বালানি নীতির সংস্কার দরকার। যেখানে জ্বালানি রূপান্তরের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে থাকবে।

সেমিনারে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পিডিবির চেয়ারম্যান মো.

রেজাউল করিম ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ব ল ন উপদ ষ ট উপদ ষ ট আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পায়রা বন্দরসহ দুই প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

পায়রা বন্দরের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রস্তাব দুটিতে ব্যয় হবে ৪৫০ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ২৫৪ টাকা।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সদস্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা যায়, পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং স্থাপন কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) এইচপি এবং (২) এনজে, চায়না প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১৬২ কোটি ২ লাখ ১১ হাজার ৫৬৮ টাকা।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর দুইয়ের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স এবং (২) এসএস রহমান ইন্টারন্যানাল লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৮৮ কোটি ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮৬ টাকা।

ঢাকা/হাসনাত//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল
  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কহার নিয়ে তৃতীয় দফা আলোচনা শুরু
  • কনটেইনার ওঠানো-নামানোর দুটি যন্ত্র কেনা হচ্ছে ১৬২ কোটি টাকায়
  • গ্যাস অপচয়ে বছরে ক্ষতি ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি: পেট্রোবাংলা
  • পায়রা বন্দরসহ দুই প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
  • ৯৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হবে ২ কার্গো এলএনজি
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঠিকাদারকে দরপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ
  • কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর ও সাভার থেকে ভাটারা পথে মেট্রোর ব্যয় দাঁড়াবে ২ লাখ কোটি টাকা