এই মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ (ইপিএল) টেবিলের ১৬তম স্থানে অবস্থান করছে টটেনহ্যাম হটস্পার। বিগত ৪৮ বছরের মধ্যে অর্থৎ ১৯৭৬-৭৭ মৌসুমের পর এরচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স ছিল না নর্থ লন্ডনের দলটির। এই মৌসুমে ইপিএলের শেষ তিনটা দল যদি খুব বাজে পারফরম্যান্স না করত, তাহলে স্পার্স হয়ত অবনমিত হয়ে যেত। অথচ এই দলটাই ইউরোপায়ের ক্লাব লড়াইয়ের মঞ্চে চমক দেখিয়েই যাচ্ছে।

ইউরোপা লিগের সেমি ফাইনালের প্রথম লেগে নরওয়েজিয়ান ক্লাব গ্লিমটকে বৃহস্পতিবার (১ মে) দিবাগত রাতে ৩-১ গোলে হারিয়েছে টটেনহ্যাম। যা এই মৌসুমে নর্থ লন্ডনের ক্লাবটির অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স। খুব বড় অঘটন না ঘটলে স্পার্স ফাইনাল খেলবে, যা ২০০৮ সালের পর তাদের প্রথম শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

আরো পড়ুন:

‘ফুটবল ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে নেই’- স্পার্স কোচ

গোলখরা কাটাতে মনোবিদের শরণাপন্ন রিচার্লিসন

ইউরোপে যাই ঘটুক টটেনহ্যামের অস্ট্রেলিয়ান কোচ অ্যাঞ্জ পোস্টেকোগলু হয়ত চাকরি হারাবেন। তবে একটি শিরোপা জয় দিয়ে মৌসুম শেষ করা হবে দারুণ সম্মানের। অন্যদিকে ১৭ বছর শিরোপা ক্ষরায় থাকা স্পার্স সবশেষ ইংলিশ লিগ কাপ জিতেছিল। এরপর মরিসিও পোচেত্তিনো, জোসে মরিনহো কিংবা আন্তোনিও কন্তের মতো ইউরোপের বিখ্যাত ম্যানেজাররাও তাদের শিরোপা এনে দিতে পারেননি। ইউরোপা লিগ জিততে পারলে লন্ডনের ক্লাবটি আগামী মৌসুমে সরাসরি চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে পারবে।

ঘরের মাঠ টটেনহ্যাম হটস্পার স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথম মিনিটেই গোল করে স্বপ্নের মতো শুরু করে ইংলিশ ক্লাবটি। পেড্রো পোরোর ক্রস থেকে ব্রেনান জনসন মৌসুমের ১৭তম গোলটি করেন। এরপর জেমস ম্যাডিসন ম্যাচের ৩৪তম মিনিটে পোরোর আরেকটি পাস থেকে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তিনজন ডিফেন্ডারের মাঝে দিয়ে সেটি জালে জড়িয়ে দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।

বিরতিতে যাওয়ার আগে আরও একটি গোল আসতে পারত যদি না রদ্রিগো বেনটাকুরের ভলি গ্লিমট গোলকিপার হাইকিন ঠেকিয়ে না দিতেন। তৃতীয় গোল আসে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির হস্তক্ষেপে। রোমেরোকে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা। স্ট্রাইকার ডমেনিক সোলাঙ্কি স্পট কিক থেকে ব্যবধান ৩-০ করতে ভুল করেননি। 

দ্বিতীয়ার্ধে গ্লিমট ৭০ শতাংশ বলের দখল রেখেও কোনো বড় সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। শুধুমাত্র উলরিক সাল্টনেসের একটি শট বেনটানকুরের গায়ে লেগে স্পার্সের জালে ঢুকে যায়। 

স্পার্সের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ এখন ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে তাদের দুই স্কোরার ম্যাডিসন ও সোলাঙ্কির চোটে পড়ে মাঠ ছাড়াটা। অন্যদিকে দ্বিতীয় লেগটা হতে যাচ্ছে খুবই কঠিন। গ্লিমট যে এই মৌসুমে ঘরের মাঠে পোর্তো, বেসিকতাস, অলিম্পিয়াকোস ও লাৎসিওর মতো দলকে হারিয়েছে। অন্যদিকে ২০২২-২৩ মৌসুম থেকে ইউরোপা লিগে তাদের ঘরের মাঠে জয় ৭০ শতাংশ আর অ্যাওয়ে ম্যাচে তা মাত্র ৯ শতাংশ।

আগামী বৃহস্পতিবার আর্কটিক সার্কেলে অ্যাস্পমিরা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় লেগে অনুষ্ঠিত হবে। স্পার্স বড় কোন কোনো বিপর্যয় না পড়লে, ১৯৮৪ সালের পর আবারও এই আসরের ফাইনাল খেলবে। তেমনটা হলে ফুটবল বিশ্ব বিলবাওয়ে দেখতে যাচ্ছে একটি অলইংলিশ ফাইনাল হতে পারে। আরেক সেমিফাইনালে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে অ্যাথলেতিক বিলবাওকে। 

স্পার্স আগে ১৯৭২, ১৯৭৪ ও ১৯৮৪ সালে ইউরোপা লিগের ফাইনাল খেলেছে। প্রথম ও শেষবার শিরোপা জিতেছিল।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউর প য় ন ফ টবল এই ম স ম ফ ইন ল ইউর প প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

‘বাজপাখি’ মার্তিনেজের বাজে ফর্ম, আর্জেন্টিনার জন্য কতটা দুশ্চিন্তার

২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ থেকে ‘বাজপাখি’ বিশেষণটা নিজের নামের সঙ্গে জুড়ে নিয়েছেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। গোলপোস্টের নিচে কখনো কখনো মার্তিনেজের সামর্থ্য ছাড়িয়ে গেছে বাজপাখির ক্ষিপ্রতাকেও। বিশেষ করে পেনাল্টি শুটআউটে পোস্টের নিচে মার্তিনেজ রীতিমতো তুলনাহীন।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ এবং টানা দুবার কোপা আমেরিকা জয়ের অন্যতম নায়কও মার্তিনেজ। শুধু আর্জেন্টিনার হয়েই নয়, অ্যাস্টন ভিলাকেও অসংখ্য ম্যাচে একাই উদ্ধার করেছেন এই গোলরক্ষক। এমন পারফরম্যান্সের স্বীকৃতিস্বরূপ পরপর দুবার ব্যালন ডি’অরের সেরা গোলরক্ষকের লেভ ইয়েশিন ট্রফিও উঠেছে মেসির এই প্রিয় সতীর্থের হাতে।

সব ভালো কিছুই অবশ্য কখনো না কখনো শেষ হয়। মার্তিনেজের সেই ভালো সময়টা কি শেষ হতে চলল কি না, সেই প্রশ্নও এখন উঠেছে। সাম্প্রতিক সময়ে অ্যাস্টন ভিলার হয়ে করা কিছু ভুলের পরই মূলত মার্তিনেজের ছন্দ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যা বিশ্বকাপের ১৩ মাস আগে নতুন করে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের জন্যও।

আরও পড়ুনমার্তিনেজ আর্জেন্টিনার ‘নায়ক’, ভিলার কি ‘খলনায়ক’২৩ এপ্রিল ২০২৫

মার্তিনেজ শুধু নিজের গোলকিপিং দক্ষতার কারণেই নয়, নিজের দৃঢ় ও হার না–মানা মানসিকতার কারণেও ভক্ত–সমর্থকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। একইভাবে যেসব আচরণের জন্য ভক্তদের কাছে তিনি জনপ্রিয়, একই আচরণ তাঁকে অজনপ্রিয় করেছে প্রতিপক্ষ সমর্থকদের মধ্যে। তবে ব্যক্তি মার্তিনেজ যেমনই হোক, পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগই দেননি এই গোলরক্ষক।

তবে সেই সময়টা বোধ হয় পেছনে ফেলে এসেছেন মার্তিনেজ। সাম্প্রতিক সময়ের করা কিছু ভুল সেই ইঙ্গিতই বারবার দিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরতি লেগে পিএসজির বিপক্ষে তাঁর পারফরম্যান্সের কথা।

সেদিন পিএসজির ফরোয়ার্ড ব্রাডলি বারকোলার ক্রস খুব বাজেভাবে ঠেকান মার্তিনেজ। বলটি নিজের নিয়ন্ত্রণেও রাখতে পারেননি। যার ফলে আশরাফ হাকিমির পায়ে চলে যায় বল এবং মার্তিনেজের এই ভুল কাজে লাগিয়ে পিএসজির হয়ে গোল করেন হাকিমি।

এরপর ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচে করা ভুলটি তো আরও বাজে। সেদিন ম্যাচের শুরুতে বের্নার্দো সিলভার গোল এগিয়ে দেয় সিটিকে। কিন্তু সেই গোল খাওয়ার পুরো দায় মার্তিনেজরই। যেভাবে সেদিন মার্তিনেজ গোল হজম করেছেন, তা বেশ দৃষ্টিকটু।
ম্যাচের ৭ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ভিলার বক্সে ঢুকে পড়েন সিটি তারকা ওমর মারমোশ।

এরপর মারমোশের ক্রস ভিলার লেফটব্যাক লুকাস দিনিয়ের পায়ে লেগে চলে আসে বক্সের মধ্যে ফাঁকা জায়গায়। এমন সুযোগ কাজে লাগাতে ছুটে এসে শট নেন সিলভা। শটে যে অনেক জোর ছিল, তা–ও নয় এবং মার্তিনেজও ছিলেন বলের লাইনে। যাঁর নাম ‘বাজপাখি’, তাঁর জন্য এই গোল বাঁচানো নৈমিত্তিক কাজ হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু মার্তিনেজ পারেননি সেই শট ঠেকাতে। তাঁর হাতে লেগেই বল ঢুকে যায় ভেতরে।

তবে এই দুটি উদাহরণই শুধু নয়, সাম্প্রতিক সময়ে আরও একাধিক ম্যাচে বাঁচানোর সুযোগ থাকার পরও পারেননি মার্তিনেজ। এর মধ্যে কিছু হয়তো ক্ষেত্রে হয়তো তাঁর সরাসরি ভুল ছিল না। কিন্তু বিশ্বসেরা স্বীকৃতি পাওয়া যেকোনো গোলরক্ষকের এ ধরনের গোল সহজেই বাঁচানো উচিত ছিল।

আরও পড়ুনশাস্তি মেনে নিয়ে ক্ষমা চাইলেন আর্জেন্টিনার গোলকিপার মার্তিনেজ০১ অক্টোবর ২০২৪

তেমনই একটি গোল মার্তিনেজ হজম করেছিলেন নিউক্যাসলের বিপক্ষে অ্যাস্টন ভিলার ৪–১ গোলে জেতা ম্যাচে। সেদিন ১৮ মিনিটে ফাবিয়ান শরের গোলে সমতায় ফেরায় নিউক্যাসল। হার্ভে বার্নসের ক্রসে শর যখন হেড করছিলেন, তখন বলের লাইনেই ছিলেন মার্তিনেজ। কিন্তু ক্লোজ রেঞ্জের সেই শটটি শরীর এলিয়ে দিয়েও রুখতে পারেননি মার্তিনেজ।

একইভাবে উল্লেখ করা যায় ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ওয়েম্বলিতে এফএ কাপ সেমিফাইনাল হজম করা গোলের কথা। সেদিন ৩১ মিনিটে প্যালেসের হয়ে প্রথম গোলটি করেন এবেরেচি এজে। অসাধারণ গোল ছিল, কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু লক্ষ করলে দেখা যাবে মার্তিনেজ একেবারেই মনোযোগী ছিলেন না, ছিলেন না নিজের যথাযথ পজিশনেও। এমনকি শটের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখানোর ক্ষেত্রেও দেরি করেছেন। যার ফলাফল হচ্ছে প্রথম গোলটি। এই গোলের পেছনে মার্তিনেজের দায় দেখেছেন ফুটবল–বিশ্লেষক ইয়ান রাইটও।

এমিলিয়ানো মার্তিনেজ হতাশায় মুখ ঢাকছেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে গত বছরের তুলনায় ১৬ ধাপ এগোল বাংলাদেশ
  • ইংলিশ লিগে ব্যর্থ ইউনাইটেড ইউরোপার ফাইনালের পথে
  • শ্রমজীবী মানুষের জীবনসংগ্রাম নিয়ে টেরাকোটার রঙ্গোত্তর প্রদর্শনী
  • ‘সময় পাল্টে গেছে, একটা ভিডিও ক্লিপ দিয়েও এখন জাতীয় দলে ডাক পাওয়া যায়’
  • সেয়ানে সেয়ানে টক্করে বার্সা ও ইন্টারের কে কত নম্বর পেলেন
  • সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
  • মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের
  • আজিজুল হাকিমের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স, কলম্বোয়ও হেসেছে বাংলাদেশ
  • ‘বাজপাখি’ মার্তিনেজের বাজে ফর্ম, আর্জেন্টিনার জন্য কতটা দুশ্চিন্তার