রাজনৈতিক পক্ষগুলোর ন্যূনতম ঐকমত্যে আসা দরকার: জোনায়েদ সাকি
Published: 2nd, May 2025 GMT
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রাজনৈতিক পক্ষগুলোর ন্যূনতম ঐকমত্যে আসা দরকার বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, সংস্কার ও নির্বাচনপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সে জন্য পদ্ধতিগত জায়গাগুলোতে রাজনৈতিক পক্ষগুলোর ন্যূনতম ঐকমত্যে আসা দরকার।
আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তিনি।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের মধ্যে অনেক দ্বিমত থাকবে। তবে যেসব জায়গায় ঐক্য আছে, সেটি সংহত রেখেই আমরা যাতে দ্বিমতের জায়গায় লড়াই করি। দ্বিমত নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়া দরকার।’
পদ্ধতিগত জায়গা গ্রহণ করতে পারলে আগামী নির্বাচন কখন হবে, এই নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটবে বলে মনে করেন সাকি। অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার এবং নির্বাচনের দ্রুত রোডম্যাপ দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্কের অবসান ঘটাবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ ১১ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন ও এবি পার্টির ঐকমত্য
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনপদ্ধতি চালুসহ ১১টি বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে এবি পার্টি। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছে দল দুটি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এবি পার্টির মধ্যে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। আজ বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার পরিবেশ তৈরি হবে। সম্প্রতি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা ধর্মবিরোধী, ইসলামবিরোধী ও দেশবিরোধী। কমিশনের প্রস্তাবগুলো বাতিল করতে হবে। এ বিষয়ে এবি পার্টিও একমত।
বৈঠক সম্পর্কে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, তাঁরা এই বৈঠকের মাধ্যমে দেশবাসীকে বার্তা দিতে চান, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন। বাংলাদেশকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বানানো পর্যন্ত এই ঐক্য টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
দুই দলের বৈঠকে আরও যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত স্বাধীন–সার্বভৌম টেকসই কল্যাণকর বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা; দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা; ভোটাধিকারসহ সব নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা; দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করে নিয়ে আসা; আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে দেশ পুনর্গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা; আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে আঘাত করে কথা না বলা এবং প্রশাসনে এখনো বিদ্যমান আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্রুত অপসারণ করা; আগামীতে যাতে আওয়ামী লীগের মতো আর কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা; দেশের স্থায়ী শান্তি ও মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে সংবিধানে বিদ্যমান শরিয়াহবিরোধী আইন বাতিল এবং ইসলামসহ সব ধর্মের প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য পরিহার করা, কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে কোনো কথা বা বক্তব্য না দেওয়া।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতেয়াজ আলম, মাওলানা সৈয়দ এসহাক মু. আবুল খায়ের ও মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম।
অপর দিকে এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম ও বি এস নাজমুল হক, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ ভূইয়া, আবদুল্লাহ আল মামুন, আনোয়ার সাদাত, এ বি এম খালিদ হাসান, শ্যাডো অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি আব্বাস ইসলাম খান, সংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) গাজী নাসির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।