গাইবান্ধায় অপহৃত সেই পল্লিচিকিৎসক তিন দিন পর বগুড়া থেকে উদ্ধার
Published: 5th, May 2025 GMT
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর থেকে অপহৃত পল্লি চিকিৎসক তরিকুল ইসলামকে (৩৫) বগুড়া থেকে উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। র্যাব-১৩ গাইবান্ধা ক্যাম্প ও সাদুল্লাপুর থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে আজ সোমবার দুপুরে তাঁকে উদ্ধার করে।
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার আজ সোমবার বিকেল চারটায় পল্লিচিকিৎসককে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযান চালিয়ে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। তাঁকে বগুড়া থেকে গাইবান্ধা সাদুল্লাপুরে আনা হচ্ছে। তবে কোথা থেকে কীভাবে উদ্ধার হলো, সেটা তাৎক্ষণিক বলা যাচ্ছে না।
এ দিকে অপহৃত পল্লিচিকিৎসক উদ্ধার হলেও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ঘটনার সময়ের ভিডিওটি দেখে আসামি শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, তরিকুল ইসলাম সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর কুটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। গত শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ভাতগ্রাম বাজারে ওষুধের দোকানে যাচ্ছিলেন তিনি। হাতি চামটার ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁর পথরোধ করে। তাঁরা তাকে জোর করে অটোরিকশা ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
এই ঘটনায় পরদিন শনিবার বিকেলে সাদুল্লাপুর থানায় মারধর ও অপহরণের মামলা করা হয়। পল্লিচিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া এই মামলা করেন। মামলায় আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং সাত থেকে আটজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
আরও পড়ুনগাইবান্ধায় পল্লিচিকিৎসক অপহরণ: নতুন ভিডিওতে পুলিশের পোশাক পরা ব্যক্তির উপস্থিতি২১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় ব্যবসায়ীকে রাতে ফেলে গেছে অপহরণকারীরা
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী মো. জাহা বক্সকে বাড়ির সামনে ফেলে গেছেন অপহারণকারীরা। সোমবার (১৬ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে দুইজন ব্যক্তি জাহা বক্সকে চোখ ও মুখ বেঁধে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় বলে পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। তাকে মারধর করা হয়েছে। অসুস্থ থাকায় জাহা বক্সের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পরিবারের সদস্যরা জানান, জাহা বক্স জীবিত ফিরে এসেছেন, এতেই তারা সন্তুষ্ট। কারো বিরুদ্ধে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। জাহা বক্স উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের মৃত কুদ্দুস আলীর ছেলে। তিনি বাড়ির পাশে প্রান্ত স্টোর নামে একটি পাইকারি মুদি দোকান চালাতেন। গত রবিবার (১৫ জুন) দিবাগত রাত ১টার দিকে নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ টাকাসহ জাহা বক্সকে অপহরণ করার অভিযোগ ওঠে। অপহরণকারীরা চিঠিতে লিখে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পাঁচ দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট ঠিকানায় টাকা না পৌঁছালে লাশ গুম করার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল ৮টায় জাহা বক্সের ছেলে প্রান্ত বলেন, ‘‘বাবা ফিরে এসেছেন। রাত ১২টার দিকে বাড়ির বারান্দায় কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পাই। বাইরে বেরিয়ে দেখি, অচেতন অবস্থায় বাবা পড়ে আছেন। তার মুখ ও চোখ বাঁধা ছিল। পরে জানতে পারি, দুইজন ব্যক্তি মোটরসাইকেল করে বাড়ির সামনে তাকে নামিয়ে দিয়ে গেছেন। বাবাকে মারধর করা হয়েছে। মাথায় একটু দাগও আছে। তিনি কারো সঙ্গে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।’’
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, ইউপি চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ
র্যাব পরিচয়ে অপহরণ: চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার
প্রান্ত আরো বলেন, ‘‘অপহরণের রাতে যে ব্যক্তি স্যালাইন নেয়ার জন্য বাবাকে বাড়ি থেকে ডেকে দোকানে নিয়ে যান, তাকে বাবা পরিচিত কেউ মনে করেন। বাইরে বেরিয়ে দেখেন তিনি অপরিচিত। প্রথমে একজন থাকলেও পরে আরো একজনকে দেখতে পান। দোকান খোলার সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে বাবাকে মুখ, চোখ ও হাত বেঁধে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যান। এরপরের আর কিছু বাবা বলতে পারেননি।’’
প্রান্ত আরো বলেন, ‘‘দোকানে ক্যাশ বক্সের নিচে যে টাকা ছিল তাও নিয়ে গেছে। আব্বা বাড়ি আসার পর রাতেই বাড়িতে পুলিশ এসে কথা বলে গেছে। আমাদের আর কিছু দরকার নেই। কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগও নেই। বাবা জীবিত ফিরে এসেছেন, এটাই যথেষ্ট।’’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, জাহা বক্স অসুস্থ। পুলিশের তত্ত্বাবধানে আছেন। সুস্থ হলে তাকে সার্বিক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আটক হওয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিষয়ে ওসি জানান, তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে। তাকে অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল