ময়মনসিংহে ছুরিকাঘাতে ইয়াসিন আলী স্বপন (৩৫) নামে এক যুবক খুন হয়েছে। এ ঘটনায় আমির হোসেন নামে আরও একজন আহত হয়েছে। হত্যায় জড়িত তিন বছর আগে নিহত স্বপনের চাচাকেও হত্যা করেছিল।
বৃহম্পতিবার (৮ এপ্রিল) রাত ৯ টার দিকে নগরীর আকুয়া মড়লবাড়ি গন্দ্রপা মালবাড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ইয়াসিন আলী স্বপন ওই এলাকার মৃত রজব আলীর ছেলে। সে আনন্দ মোহন কলেজের একাউন্টটিং বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে কর্মরত ছিলেন। পাশাপাশি ইয়াসিন আলী স্বপন ওই এলাকায় মুদি দোকান করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, ২০২২ সালে নিহত ইয়াসিন আলী স্বপনের চাচা পারভেজকে হত্যা করে স্থানীয় দিলীপ ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় মামলার পর দিলীপ দীর্ঘদিন জেলেখানায় ছিলেন। আনুমানিক একবছর আগে জামিনে ছাড়া পান দিলীপ। এরপর থেকে মাদক ব্যবসা ও এলাকায় এক আতঙ্কের নাম ছিল দিলীপ।
গত রাত ৯টার দিকে নিহত স্বপনের দোকানের সামনে আমির হোসেন নামে একজনকে কুপিয়ে আহত করে দিলীপ ও তার সহযোগীরা। পরে ইয়াসিন আলী স্বপন দোকান থেকে বের হতেই দিলীপ তাকেও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতে ইয়াসিন আলী স্বপন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। স্থানীয়রা আহত আমির হোসেনকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
ঢাকা/মিলন/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের নয় মাস পর দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
বুধবার (৭ মে) দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে তিনি দেশ ছাড়েন।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন আবদুল হামিদ।
এর আগে রাত ১১টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান আবদুল হামিদ। সেখানে যাওয়ার পর ইমিগ্রেশনে প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে দেশ ছাড়েন তিনি।
আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা থাকার তথ্য রয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় তার বিরুদ্ধে এই মামলাটি দায়ের হয়।
ইমিগ্রেশন বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, তাকে গ্রেপ্তারে বা দেশত্যাগে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ছিল না।
তিনি আরো বলেন, সংবিধানের ৩৪ ও ১০২ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশি কোনো নাগরিককে যাতায়াতে বাধা দেওয়া যাবে না। যদি আদালতের সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা না থাকে। তার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। কোনো মামলায় তাকে আটক বা গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকেও কোনো আর্জি বা আবেদন ছিল না।
১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল হামিদ।
হাজি মো. তায়েব উদ্দিন ও তমিজা বেগমের সন্তান হামিদ গুরুদয়াল কলেজ থেকে মানবিকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্মাতক ডিগ্রি নেন।
ঢাকার সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাস করার পর কিশোরগঞ্জ বারে আইন পেশায় যোগ দেন তিনি। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ সাল পরপর্যন্ত পাঁচবার জেলা বার সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে আবদুল হামিদের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৬১ সালে কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থাতেই যোগ দেন আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে। এক পর্যায়ে তাকে কারাগারেও যেতে হয়।
গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর ১৯৬৪ সালে কিশোরগঞ্জ সাব ডিভিশনের ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব নেন আবদুল হামিদ।
১৯৬৬-৬৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ১৯৬৯ সালে যোগ দেন আওয়ামী লীগে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। এরপর দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে শুরু হলে তিনি তাতে যোগ দেন।
মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে চলতি বছর আব্দুল হামিদকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ।
এরপর ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ, ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ, ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ এবং সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন।
সপ্তম সংসদে ১৯৯৬ সালের ১৩ জুলাই থেকে ২০০১ এর ১০ জুলাই পর্যন্ত ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালনের পর ২০০১ এর ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত স্পিকার হিসাবে সংসদ পরিচালনা করেন আবদুল হামিদ। আর নবম সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো স্পিকার হন।
ঢাকা/হাসান/ইভা