ছোট্ট ফুটবল মাঠ, দুই পাশে দুই গোলপোস্ট। মানুষ নয় বরং এ মাঠের খেলোয়াড় দুই রোবট। ছোট্ট বল নিয়ে সকার বট নামে দুই যন্ত্রমানবের খেলা তুমুল সাড়া ফেলেছে দর্শনার্থীদের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত খেলায় কেউ না জিতলেও বিশেষ এই ফুটবল ম্যাচ ঘিরে যেন আগ্রহের কমতি ছিল না। পাশেই আরেকটি ট্র্যাকে বিশেষ লাইন ধরে ছুটছে রোবট নিয়ন্ত্রিত গাড়ি। তুমুল উত্তেজনাকর সে প্রতিযোগিতায় কোনো গাড়ি সফলভাবে পার হচ্ছে বাঁক, কোনোটি আবার মাঝপথেই খাচ্ছে হোঁচট। তাতেও অবশ্য দর্শকরা তুমুল করতালি দিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ক্যাম্পাসে জাতীয় রোবটিক্স ও প্রযুক্তি উৎসবে দেখা গেছে রোবটদের এসব ধুন্ধুমার লড়াই। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকাট্রনিক্স
অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং (এমআইই) বিভাগের উদ্যোগে গত বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হয়েছে তিন দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ
আব্দুল মতিন ভূঁইয়া উৎসবের উদ্বোধন করেন। দেশের ৪১টি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে সাত শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন এই রোবটিক্স ও প্রযুক্তি উৎসবে।
আয়োজকরা জানান, একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পথ সুগম করতে প্রয়োজন কারখানাগুলোতে স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। পাশাপাশি প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ব্যবস্থাপনা, যা শিল্পকারখানার উৎপাদন বৃদ্ধি করবে এবং ব্যয় কমাবে। শিল্পকারখানার কাজে রোবটিক্সের ব্যবহার এ ক্ষেত্রে অসাধারণ ভূমিকা রাখতে পারে। এই লক্ষ্য সামনে রেখে চুয়েটে আয়োজন করা হয়েছে জাতীয় রোবটিক্স ও প্রযুক্তি উৎসব ‘এমআইই রোবল্যুশন ১.
গতকাল উৎসবের দ্বিতীয় দিনে রোবটিক্স বিষয়ে সেমিনার ছাড়াও ছিল রোবটের ফুটবল খেলা, লাইন ফলোয়ার রোবট, হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যারের সমন্বয় তৈরি করার বিশেষ প্রতিযোগিতা টেকাথন।
আজ শনিবার উৎসবের শেষদিনে থাকছে পোস্টার প্রেজেন্টেশন, ক্যাড প্রতিযোগিতা এবং রোবটের দাবা খেলা। সবশেষে পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের উৎসব।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
এক স্কুল থেকেই গ্র্যাজুয়েট হলেন ৩০ জোড়া যমজ
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের একটি হাইস্কুলে এবারের গ্র্যাজুয়েশন ডে-তে যেন যমজের উৎসব বসেছিল।
আইল্যান্ডের প্লেইনভিউ-ওল্ড বেতপেজ জন এফ কেনেডি হাইস্কুল থেকে এবার প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ৩০ জোড়াই যমজ!
এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে কয়েকজন একে অপরকে চেনেন সেই কিন্ডারগার্টেনে পড়ার সময় থেকে। তাঁদের মা–বাবারা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলেন স্থানীয় যমজ ক্লাবের মাধ্যমে। তাঁদের কারও কারও মধ্যে এত অটুট বন্ধন গড়ে উঠেছে যে এখনো পরিবার নিয়ে তাঁরা একসঙ্গে ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা করেন।
তবে একই পদবি ছাড়া অন্য কিছু দেখে গত রোববার গ্র্যাজুয়েশন মঞ্চে হাঁটা যমজ জোড়াদের আলাদা করে চেনা বেশ কঠিন ছিল। কারণ, এই যমজদের কেউই ‘আইডেন্টিক্যাল’ নন, বরং সবাই ‘ফ্র্যাটারনাল’ যমজ। অর্থাৎ আলাদা ডিম্বাণু ও শুক্রাণু থেকে তাঁদের জন্ম। অনেক যমজই ভিন্ন লিঙ্গের। কিন্তু এতে তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা একটুও কমেনি, বলেন বারি কোহেন। তিনি আগামী শরতে ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছেন। তাঁর ভাই ব্রেইডন কোহেন যাচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গে।
বারি কোহেন বলেন, ‘বিশেষ করে ছেলে-মেয়ে যমজদের ক্ষেত্রে অনেকেই ভাবেন যে আমরা কেবল ভাই–বোন। আসলে এটা তার চেয়ে বেশি। কারণ, আমরা একই সময়ে একই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাই।’
যমজ শিক্ষার্থীদের একজন সিডনি মঙ্কা বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে থাকলে পুরো ঘর যেন আলোয় ভরে যায়।’
প্লেইনভিউ-ওল্ড বেতপেজের এই স্কুলে প্রতিবছর বেশ কয়েক জোড়া যমজের একসঙ্গে লেখাপড়া করার বিষয়টি নতুন নয়। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে স্কুলটিতে ১০ জোড়া করে যমজ শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট হয়েছিলেন। এ বছর নতুন ব্যাচেও রয়েছেন ৯ জোড়া যমজ।
স্কুলে গ্র্যাজুয়েশনের পর বেশির ভাগ যমজই আলাদা হয়ে ভিন্ন ভিন্ন কলেজে চলে যান। তবে ব্যতিক্রমও আছে। যেমন আইডেন ও ক্লোয়ি মাঞ্জো—দুজনই যাচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডায়। এমনকি তাঁরা থাকবেন একই ডরমে।
অন্যদিকে, কিছু যমজ আলাদা হওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন।
তেমন যমজ শিক্ষার্থীদের একজন কায়লা জাসার। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় একসঙ্গে ছিলাম, এবার আলাদা অভিজ্ঞতা নেওয়ার সময়।’ কায়লা যাচ্ছেন ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটিতে আর তাঁর যমজ বোন সিডনি যাচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অব ডেলাওয়ারে। এই যমজ উৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে তাঁদের একসঙ্গে বেড়ে ওঠার এক যুগান্তকারী অধ্যায়।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ইলিনয়ের উইনেটকার নিউ ট্রিয়র হাইস্কুল থেকে একসঙ্গে ৪৪ জোড়া যমজ এবং ১টি ত্রয়ী গ্র্যাজুয়েট হয়েছিলেন।