চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে আসা সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর
Published: 15th, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে আসা নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার ছাত্রলীগের ওই নেতার নাম মো. মামুন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০০৭-২০০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন তিনি।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন ছিল। ২০১১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত স্নাতক পাস করা শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন। সমাবর্তনের প্রধান বক্তা ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মো.
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘যতটুকু জানতে পেরেছি, তিনি (মামুন) আমাদের মাসুদ বিন হাবিব আর মুজাহিদুল ইসলাম ভাইয়ের (শিবিরের সাবেক নেতা) হত্যাকারী। যাঁরা ওই সময় আমাদের সংগঠন করতেন, তাঁরা ক্যাম্পাসে তাঁকে দেখে ফেলেন। পরে ধরে ফেলে চড়–থাপ্পড় দেন। এরপর তাঁরাই মেডিকেলে নিয়ে গেছেন। পরে পরিবারের সদস্যরা এসে তাঁকে নিয়ে গেছে।’
মারধরের শিকার মামুনের ভাই মো. মাসুম প্রথম আলো বলেন, তাঁর ভাই প্রায় আট বছর আগে রাজনীতি ছেড়েছেন। সমাবর্তনে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে ভাইকে আহত অবস্থায় পান তাঁরা। এখন তাঁর ভাইকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুনপ্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডি–লিট ডিগ্রি দিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়৮ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম রধর র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)।
চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
আরো পড়ুন:
‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’
এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার
শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন।
সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’
সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’
সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে।
ঢাকা/বকুল