শুধু ট্রফি জেতাই নয়, সেটা নিয়ে উৎসব করাটাও যে একধরনের শিল্প তা যেন আরও একবার প্রমাণ করল বার্সেলোনা।
কাতালান ক্লাবটি যখন স্পেনের ঘরোয়া ফুটবলের তিনটি শিরোপাই নিজের করে নেয়, তখন সেটাকে উদযাপন করতে হয় একটু ভিন্নভাবেই। তাই তো লা লিগা জয়ের পর কাতালুনিয়ায় ছাদখোলা বাসে চড়ে উদযাপনে নামে ইয়ামাল-পেদ্রি-রাফিনিয়রা।
স্প্যানিশ সুপার কাপ, কোপা দেল রে ও সর্বশেষ লা লিগা সবক’টি শিরোপাই এখন বার্সার ঘরে। ইউরোপিয়ান মঞ্চে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে হোঁচট খেলেও ঘরোয়া ট্রেবল জিতে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে ক্লাবটি। এই অনন্য অর্জনের আনন্দ শুধু খেলোয়াড়দের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকেনি। বার্সার প্রতিটি সাফল্যে অবিচ্ছেদ্য অংশ যে তাদের প্রাণপ্রিয় সমর্থকরা, তাদের সঙ্গেও এই জয় ভাগাভাগি করে নিতে ছাদখোলা বাসে চড়েছে বার্সার পুরো স্কোয়াড।
বাসে করে ইয়ামাল পেদ্রিরা ঘুরেছে কাতালান অঞ্চলের ব্যস্ততম সড়কগুলো। সেই রাস্তাগুলো যেন রূপ নিয়েছিল এক বিশাল উৎসবমুখর জনসমুদ্রে। রাস্তার দুই ধারে হাজারো সমর্থকের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস, গলায় ছিল জয়ধ্বনি। তাদের হাত ছুঁয়ে যাচ্ছিল ঘরোয়া ট্রেবলের তিনটি ট্রফি।
বাসে থাকা ফুটবলাররা পরেছিলেন বিশেষ জার্সি। নেচেছেন, গেয়েছেন, সমর্থকদের উদ্দেশে দিয়েছেন ধন্যবাদ ও ভালোবাসা জড়ানো বার্তা।
কোচ হ্যান্সি ফ্লিকও ছিলেন উৎসবের প্রাণভোমরা। বিজয় প্যারেড সম্পূর্ণ করলেও এই মৌসুমে বার্সার এখনও দুটি ম্যাচ বাকি। এরপর তারা যাবে বিশ্রামে।
ছাদখোলা বাসে উদযাপনের মধ্যেও আগামী মৌসুমেও দাপটের সঙ্গে খেলার আশ্বাস দিয়েছেন রাফিনিয়া, ইয়ামাল ও পেদ্রিরা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মাছবোঝাই পিকআপ খাদে, এলাকাবাসীর মাছ ধরার ‘উৎসব’
ফরিদপুরের নগরকান্দায় মাছবোঝাই একটি পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়। এরপর খাদে ছড়িয়ে পড়া মাছ ধরতে স্থানীয় লোকজন ভিড় করেন। আজ শুক্রবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের যদুরদিয়া এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পশ্চিম পাশে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাবদা মাছবোঝাই পিকআপটি গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গার দিকে যাচ্ছিল। রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যদুরদিয়া এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি খাদে পড়ে যায়। এতে গাড়িতে থাকা মাছের ঝুড়িগুলো পানিতে তলিয়ে যায় এবং মাছ ছড়িয়ে পড়ে।
দুর্ঘটনার দুই ঘণ্টা পর ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে রেকার দিয়ে পিকআপটি তোলা হয়। ওই সময় গাড়ির লোকজন যতটা সম্ভব মাছ উদ্ধার করে গাড়ি নিয়ে চলে যান। এরপর সকাল ছয়টা থেকে আশপাশের গ্রাম থেকে মানুষ মাছ ধরতে খাদে নামেন। নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ—সবাই মাছ ধরায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মহাসড়কের ধারে দাঁড়িয়ে বহু মানুষ এ দৃশ্য উপভোগ করেন। কেউ খ্যাপলা জাল, কেউ গামছা, আবার কেউ হাত দিয়ে মাছ ধরতে থাকেন।
সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় যেন কেউ কারও থেকে পিছিয়ে থাকতে চান না। এক বালতি মাছ হাতে খাদ থেকে উঠলেন ফাতেমা বেগম (২৮)। তিনি জানান, প্রায় ১০ কেজি মাছ ধরতে পেরেছেন। হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমার থেকে অনেক বেশি মাছ ধরেছে অনেকে।’
স্থানীয় বাসিন্দা হারুন অর রশিদ (৫৫) বলেন, খবর পেয়ে গ্রামের মানুষ ছুটে আসে। এরপর শুরু হয় মাছ ধরার ধুম।
মাছ ধরার খবর শুনে সেখানে এসেছিলেন ভাঙ্গার মহেশ্বর্দী গ্রামের মাইনুদ্দীন আহমেদ (৩৫)। তিনি বলেন, সবাই পাবদা মাছ ধরছেন। কেউ খালি হাতে ফেরেননি। কেউ ১৫ কেজি, কেউ আধা মণ পর্যন্ত মাছ পেয়েছেন।
পিকআপটি কোথা থেকে এসেছিল, কোথায় যাচ্ছিল কিংবা মাছের পরিমাণ ও মালিকের পরিচয় জানা যায়নি। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রকিবুজ্জামান বলেন, আজ ভোরে নগরকান্দার যদুরদিয়ায় মাছবোঝাই একটি পিকআপ খাদে পড়ে যায়। তবে এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।