নদীভাঙন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষায় মানববন্ধন
Published: 24th, May 2025 GMT
নদীভাঙন থেকে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর আট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষায় মানববন্ধন হয়েছে।
শনিবার (২৪ মে) বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া, মাসকাটা, কালাবাদর নদীভাঙন থেকে রক্ষা পেতে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধন করে।
তীব্র নদীভাঙনের ফলে ইতোমধ্যে এই দ্বীপ উপজেলার তেরশ পরিবারসহ অনেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাজারসহ প্রায় ২ হাজার একর কৃষি জমি নদীর্গতে বিলীন হয়ে গেছে।
আরো পড়ুন:
শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে তিতুমীর কলেজে গণস্বাক্ষর
ইবিতে অন্যের ভরসায় চলছে তদন্ত প্রক্রিয়া
মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা রক্ষার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করছি। ইতোমধ্যে নদী ভাঙনের ফলে আমাদের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন যে কয়টি আছে তা যদি ভেঙে যায় তাহলে আমাদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ আমাদের পরিবারের শহরে গিয়ে লেখাপড়া করার মত সামর্থ্য নেই। তাই সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের আমাদের স্কুল রক্ষার বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি।
মানববন্ধনে লেংগুটিয়া মুসলিম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, “আমার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি অত্র এলাকায় ঐতিহ্যবাহী স্কুল। ৯৪ বছর ধরে এই অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করে আসছে। আমার প্রতিষ্ঠানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী আছে। এখন এই প্রতিষ্ঠানটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। তাই সরকারকে কাছে আবেদন এই দ্বীপ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে শিক্ষার্থীদে শিক্ষা জীবনে যাতে কোন ধরনের সমস্যা না হয় সেই ব্যবস্থা করার।”
লেংগুটিয়া আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন নুরুনবী বলেন, “দ্বীপ উপজেলা মেহেন্দিগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দারা বৈষম্য শিকার। ২০০ বছরের পুরানো এই এলাকা দিন দিন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে। এই বর্ষায় আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষায় জন্য অতিদ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষা করুন।”
স্থানীয় বাসিন্দা ও যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, “আমাদের এই অঞ্চলের ২২ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার হুমকিতে রয়েছে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করার জন্য সরকারের অতিদ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.
ঢাকা/রায়হান/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রক ষ য আম দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘নারীবিষয়ক সংস্কার প্রতিবেদনে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি’
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছে রামপুরা ও হাতিরঝিল থানা ইমাম-খতিব-উলামা পরিষদ। কমিশনের প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত কোরআনবিরোধী সুপারিশগুলো বাতিলসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে রাজধানীর রামপুরায় নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোরআনবিরোধী প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধন এসব দাবি জানানো হয়। কোরআনপ্রেমী তাওহীদি জনতা ও রামপুরা-হাতিরঝিল থানা ইমাম-খতিব-উলামা পরিষদের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নূর মসজিদের খতিব মাওলানা খুরশীদ আলম কাসেমী।
সমাবেশ থেকে জানানো অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে নির্বাচিত শীর্ষ মুফতিদের মাধ্যমে সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো যাচাই-বাছাই করা; সর্বক্ষেত্রে নারীর জানমাল, সম্মান ও সম্ভ্রমের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; যৌনকর্মী, ছিন্নমূল, বিধবা, অসহায় ও এতিম কন্যাসন্তানের সম্মানজনক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি বিধবা ও অসহায় বয়স্ক নারীদের যৌক্তিক আর্থিক ভাতা প্রদান; গুম-খুন, ধর্ষণ ও শিশু ধর্ষণের মতো পৈশাচিক অন্যায়ের প্রতিকারে শরিয়াভিত্তিক বিচারব্যবস্থা চালু এবং যৌতুক, উত্ত্যক্তকরণসহ যৌন হয়রানিমূলক অপরাধের শাস্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর করা।
মানববন্ধনে রামপুরা নূর মসজিদের ইমাম মাওলানা এনায়েত কবির বলেন, নারী সংস্কার কমিশনে বিভিন্ন ধর্মের পণ্ডিত ব্যক্তিদের জায়গা দেওয়া যেত। কিন্তু এখানে অন্য কোনো ধর্মের প্রতিনিধিদেরও রাখা হয়নি। অথচ এটাকে সর্বজনীন আইন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
মাওলানা এনায়েত কবির বলেন, ‘আমরা বারবার শুনি নারী-পুরুষের সমান অধিকার। কোরআনে বাবার সম্পত্তিতে ছেলে মেয়ের দ্বিগুণ পায়। এই ধারাকে বিলুপ্তের দাবি প্রতিবেদনে করা হয়েছে। অথচ নারীকে যতটুকু সম্পত্তির ভাগ দেওয়া হয়েছে, ততটুকু বাস্তবায়নের প্রশ্ন, দাবি তাঁরা তোলেন না।’
মাওলানা এনায়েত কবির বলেন, এই সমাজ একটা মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। প্রতিবেদনে যৌনপেশাকে শ্রমের মর্যাদা দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। অথচ তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার দাবি নারী সংস্কার কমিশনে তোলা হয়নি। তিনি বলেন, শুধু ইসলাম ধর্মেই নয়, পৃথিবীর কোনো ধর্মই যৌনপেশাকে সমর্থন করে না।
মানববন্ধনে ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক এফ এম এ হায়দার বলেন, ‘স্বৈরাচার হাসিনার পতনের জন্য ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমেছিল। এই বেহায়াপনা বাস্তবায়ন করার জন্য রক্ত দেওয়া হয়নি। এ দেশে কোনো কোরআনবিরোধী আইন বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।’