আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে। বিদ্যমান করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বেড়ে হচ্ছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তবে করমুক্ত সীমার পর করদাতাদের জন্য আয়ের যেসব স্তর রয়েছে, সেখানে পরিবর্তন আসছে এবং করহার বাড়ানো হচ্ছে। এ পরিবর্তনে বর্তমান করদাতাদের ওপর চাপ বাড়বে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

বর্তমানে নিত্যপণ্যের সরবরাহ পর্যায়ে ১ শতাংশ উৎসে কর পরিশোধ করতে হচ্ছে। আগামী বাজেটে এটি কমিয়ে অর্ধেক অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারি ট্রেজারি বিল বা বন্ডে বিনিয়োগ করলে তার ওপর উৎসে কর বাড়তে পারে। এ খাতে বিনিয়োগের ওপর বিদ্যমান উৎসে কর ৫ থেকে বেড়ে ১০ শতাংশ হতে পারে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে করমুক্ত আয়সীমার পরবর্তী ১ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ৫ শতাংশ কর দিতে হয়। আগামী বাজেটে ১ লাখ টাকার পরিবর্তে এই আয়সীমা বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং করহার বাড়িয়ে ১০ শতাংশ হচ্ছে। পরবর্তী ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর বর্তমানে কর দিতে হয় ১০ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে তা বেড়ে হচ্ছে ১৫ শতাংশ। পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর এখন কর রয়েছে ১৫ শতাংশ, যা আগামী অর্থবছরে বেড়ে হচ্ছে ২০ শতাংশ। এর পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত একটি স্তর চলতি অর্থবছরে রয়েছে, যা থাকছে না। এই স্তরে ২০ শতাংশ হার ছিল। পরবর্তী ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর কর থাকবে ২৫ শতাংশ। এর বেশি আয় হলে তার ওপর কর দিতে হবে ৩০ শতাংশ।

সূত্র আরও জানায়, প্রথম স্তরের পরিবর্তনে পরবর্তী সময়ের স্তরগুলো এখনকার মতো থাকবে না। ফলে উল্লেখযোগ্য অঙ্কের বিদ্যমান করদাতার ওপর প্রযোজ্য হার বাড়বে। প্রত্যক্ষ কর থেকে রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আয়ের ওপর বর্তমানে সাতটি স্তর রয়েছে। আগামী বাজেটে ছয়টি স্তর হচ্ছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে যারা যে স্তরে রয়েছেন, তার একটি বড় অংশ সেখানে থাকবেন না। ফলে তাদের এখনকার চেয়ে বাড়তি কর দিতে হবে। 

জানা গেছে, নারী, মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য করদাতাদের ক্ষেত্রেও করমুক্ত আয়সীমায় পরিবর্তন আসছে। বর্তমানে নারী করদাতা এবং ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা এখন ৪ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছরে এই করমুক্ত আয়সীমা বেড়ে হচ্ছে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা এবং প্রতিবন্ধী করদাতার করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, যা আগামী বাজেটে বেড়ে হচ্ছে ৫ লাখ টাকা। গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা থেকে বেড়ে হচ্ছে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা। 

ন্যূনতম কর অপরিবর্তিত থাকছে

আগামী অর্থবছরে ন্যূনতম কর অপরিবর্তিত থাকছে। ব্যক্তির মোট আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করলে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় ন্যূনতম কর দিতে হয় ৫ হাজার টাকা। এটি বহাল থাকছে। অন্যান্য সিটি করপোরেশনের আয়করদাতাদের ন্যূনতম কর ৪ হাজার টাকা অপরিবর্তিত থাকছে। আর সিটি করপোরেশনের বাইরের এলাকার জন্য ন্যূনতম কর ৩ হাজার টাকাই থাকছে। 

পারকুইজিটে করমুক্ত সীমা বাড়ছে 

বেসরকারি চাকরিজীবীদের প্রতি কিছুটা সদয় হচ্ছে সরকার। বর্তমানে যারা বেসরকারি চাকরি করেন, তাদের পারকুইজিট বা পারিতোষিক (বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত ও মহার্ঘ ভাতা, বাসস্থান সুবিধা, গাড়ি সুবিধা ইত্যাদি) ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত। আগামী অর্থবছরে এই সীমা দ্বিগুণ অর্থাৎ ২০ লাখ টাকা হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত ভাতা সাড়ে ৪ লাখ টাকা থেকে বেড়ে হচ্ছে ৫ লাখ টাকা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র করম ক ত আয়স ম করদ ত দ র র ওপর ব পরবর ত কর দ ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন প্রলম্বিত করতে মন খারাপের নাটক করেছে সরকার: ববি হাজ্জাজ

অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন প্রলম্বিত করতে মন খারাপের নাটক করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সরকারের সমর্থনপুষ্ট হঠাৎ গজিয়ে ওঠা একটি রাজনৈতিক সংগঠন কীভাবে সরকারের মুখপাত্র হয়? আবার অন্তর্বর্তী সরকার কিছু পছন্দের ব্যক্তিকে ডেকে সর্বদলীয় রাজনৈতিক বৈঠক বলে গণমাধ্যমে প্রচার করেছে। এই সরকার নির্বাচন প্রলম্বিত করতে এখন মন খারাপের নাটক মঞ্চস্থ করেছে। আমরা এর অবসান চাই। 

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এনডিএমের আগামী অর্থবছরের সংক্ষিপ্ত বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরতে এই আয়োজন করা হয়। 

এনসিপি নেতাকর্মীর সমালোচনা করে ববি হাজ্জাজ বলেন, তারা বলছেন, নির্বাচিত সরকার এলে বিচার করবে না। মানে নির্বাচিত সরকারের প্রতি কোনো আস্থা নেই। নির্বাচিত সরকারের প্রতি যাদের আস্থা নেই, তাদের জনগণের হয়ে কথা বলার অধিকার নেই। এই অধিকার যদি অর্জন করতে চান, ভোট দেন, ভোট নিয়ে আসেন। তখন তারা বলবেন, আমরা চুপ করে শুনব।  

এর আগে লিখিত বক্তব্যে ববি হাজ্জাজ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বিষয়ে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেন, আমরা চাই, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে এই সরকার এমন এক বাজেট প্রস্তাব করবে যা পরবর্তী নির্বাচিত সরকার মেয়াদের বাকি অংশে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে। আমরা চাই, বাজেটের জন্য জনগণ না হয়ে, জনগণের জন্য যেন বাজেট হয়।

এনডিএমের মহাসচিব মোহাম্মদ মমিনুল আমিনের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের উচ্চ পরিষদ সদস্য হুমায়ুন পারভেজ খান, ভাইস চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার সাইদুল আজম, যুগ্ম বিভাগীয় সম্পাদক সাকিব আহমেদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে পরিবর্তন আসছে
  • বাজেট কী এবং কীভাবে দেওয়া হয়
  • জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য থাকছে বরাদ্দ
  • শুল্কে বড় পরিবর্তন আসছে
  • নির্বাচন প্রলম্বিত করতে মন খারাপের নাটক করেছে সরকার: ববি হাজ্জাজ
  • সোমবার বিকেল চারটায় বাজেট দেবেন অর্থ উপদেষ্টা, বিটিভিতে সম্প্রচার হবে
  • বাজেটে টেকসই প্রবৃদ্ধির বার্তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের
  • বৈষম্য নিরসন ও নারীর ক্ষমতায়নে বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দাবি
  • চাপের মুখে রয়েছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি