ইন্দোনেশিয়ায় পাথরখনি ধসে নিহত ১০, ধ্বংসস্তূপে আটকা অনেকে
Published: 31st, May 2025 GMT
ইন্দোনেশিয়ায় পাথরের খনি ধসে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। দেশটির পশ্চিম জাভা প্রদেশের সিরেবন অঞ্চলের গুনুং কুদা খনিতে শুক্রবার সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে। অন্তত ১০ জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত করে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, কতজন নিখোঁজ রয়েছে তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। খবর-আলজাজিরা
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, উদ্ধারকারীরা বিধ্বস্ত এলাকা থেকে মরদেহ টেনে বের করার চেষ্টা করছেন। লোকজন আতঙ্কে দৌড়ে পালাচ্ছেন। বড় বড় পাথর সরাতে সেখানে খননযন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে উদ্ধার অভিযান চলছে। তিনটি খননযন্ত্রসহ ভারী যন্ত্রপাতি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। শনিবার পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চলবে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, এরই মধ্যে আহত ১২ জনকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধসের কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। খনি মালিক ও শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। নতুন করে ধসের ঝুঁকি রয়েছে।
পশ্চিম জাভার গভর্নর ডেডি মুলিয়াদি বলেছেন, ঘটনাস্থলটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। জীবন ও পরিবেশের জন্য হুমকি, পশ্চিম জাভার এমন চারটি খনি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইন দ ন শ য
এছাড়াও পড়ুন:
বরগুনায় বন উজাড় করে মাছের ঘের, ঝুঁকিতে উপকূল রক্ষা বাঁধ
ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো নানা দুর্যোগ মোকাবিলায় উপকূলে ঢাল হিসেবে কাজ করে শ্বাসমূলীয় (ম্যানগ্রোভ) বন। বরগুনার তালতলী উপজেলায় সেই জীবন্ত রক্ষাকবচ নিজেই এখন বিপন্ন। আন্ধারমানিক নদের দুই তীরে প্রায় ২০ কিলোমিটার বাঁধের ঢালে শ্বাসমূলীয় প্রজাতির সৃজিত বনাঞ্চল সাবাড় করে গড়ে তোলা হয়েছে অর্ধশতাধিক মাছের ঘের, এতে বাঁধটি হুমকিতে পড়েছে।
স্থানীয় ব্যক্তি ও পরিবেশকর্মীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকায় একটি–দুটি করে ঘের গড়ে তোলা হলেও সম্প্রতি ঘের তৈরির প্রবণতা বেড়েছে। বনের ওপর এমন অনাচারের মাধ্যমে শুধু বনভূমির পরিমাণই কমছে না, হুমকিতে পড়ছে জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ এবং উপকূলীয় এলাকার বাঁধ। এসব ঘেরের পাড়ে বাঁধের ওপর নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় পরিবেশ বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়ছে। একই সঙ্গে বাঁধের নিরাপত্তায় নদের পাড় (রিভার সাইড) ও অভ্যন্তরের (কান্ট্রি সাইড) ২০ ফুটের মধ্যে পুকুর-দিঘি বা ঘের খনন নিষিদ্ধ হলেও এই নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না এসব ঘেরমালিকেরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাঁধঘেঁষা এলাকায় ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে খনন বা জলাধার তৈরি করাও বাঁধের গঠনগত ভারসাম্য বিনষ্ট করে, যা ভবিষ্যৎ দুর্যোগের সময় ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।
সম্প্রতি সরেজমিন ওই এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তালতলীর শারিকখালী ইউনিয়নের নিওপাড়া থেকে চাউলাপাড়া পর্যন্ত আন্ধারমানিক নদের তীরের ২০ কিলোমটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে চরে সৃজিত শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল কেটে মাছের ঘের তৈরি করেছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। নতুন করে আরও কয়েক ব্যক্তিকে গাছপালা কেটে খননযন্ত্র দিয়ে ঘেরের জলাধার নির্মাণ করতে দেখা যায়। এতে একদিকে যেমন বনাঞ্চল সাবাড় হয়েছে, তেমনি বাঁধ ঘেঁষে এমন জলাধার খনন করায় বাঁধের স্থায়িত্ব হুমকিতে পড়েছে।
ওই এলাকার আঙ্গারপাড়া গ্রামে দেখা যায়, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঘেঁষে প্রায় ১৫০ মিটার এলাকাজুড়ে গাছ কেটে উজাড় করা হয়েছে। সেখানে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে মাটি কেটে ঘেরের জলাধার নির্মাণ করা হচ্ছে।
আবদুল খালেক মিয়া নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা এই ঘের বানাচ্ছেন বলে জানান এলাকার বাসিন্দারা। জানতে চাইলে আবদুল খালেক মিয়া বলেন, ‘এই জমি আমার রেকর্ডীয়। এখানে সরকারি জমি নেই।’ নদের চরের জমি কীভাবে ব্যক্তিমালিকানার হয়, এমন প্রশ্নে বলেন, ‘একসময় আমাদের জমি নদে ভেঙে যায়। বহু বছর পর পুনরায় চর জেগে ওঠে।’ তবে গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর দেননি।
বনাঞ্চল সাবাড় হয়েছে, তেমনি বাঁধ ঘেঁষে এমন জলাধার খনন করায় বাঁধের স্থায়িত্ব হুমকিতে পড়েছে