ড্রোন প্রযুক্তি দিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে চীন
Published: 31st, May 2025 GMT
কৃষি ও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত চীন। বিশেষ করে স্মার্ট কৃষি ও ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি।
শনিবার ঢাকার একটি হোটেলে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও এর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল বৈঠক করে এ প্রতিশ্রুতি দেয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে বৈঠকে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে কৃষিখাতে ড্রোন প্রযুক্তির সহায়তা কামনা করেন শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি মনে করেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা জোরদার করতে এই সহায়তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে সার, বীজ বপন, কীটনাশক ছিটানো ও ফসল নিরীক্ষণে বিপ্লব আনা সম্ভব। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বাংলাদেশের কৃষিখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এ প্রেক্ষিতে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, চীন কৃষি ও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। বিশেষ করে স্মার্ট কৃষি ও ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে তারা সহযোগিতা করবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা থাকলেও আধুনিক ফিশিং জাহাজ ও প্রযুক্তির অভাবে এই খাতের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। চীনের সহায়তায় গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা ও প্রক্রিয়াকরণের সুযোগ বাড়লে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
ফিশিং জাহাজ ও প্রযুক্তি সহায়তা কামনা করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের জন্য অত্যাধুনিক ফিশিং জাহাজ ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি প্রয়োজন। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা আমাদের এই খাতকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।
চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের সাথে মৎস্য ও সমুদ্রসম্পদ খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের মৎস্য খাত ও সমুদ্রসীমার সম্পদ আহরণে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন বিশেষ করে এদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে চীন সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে- যার সুফল এদেশের জনগণ ভোগ করছে।
বৈঠকে চীনের প্রতিনিধি দলে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব আউটওয়ার্ড ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব দ্য ডিপার্টমেন্ট অব এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স এবং বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে বাণিজ্য সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য প্রসারে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন ও ই-কমার্স বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও চীনের পক্ষে সে দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও স্বাক্ষর করেন।
উল্লেখ্য, চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীর একটি দল নিয়ে আজ ৩১ মে তিন দিনের সফরে দুপুরে ঢাকায় পৌঁছান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট চ ন র ব ণ জ যমন ত র ব ণ জ য উপদ ষ ট সহয গ ত মৎস য
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসুর বিবৃতি: বিএনপি তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে
জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে, এমন বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। রোববার বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার সম্মিলিত বিপ্লব। শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ ও একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোনো প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।
ডাকসুর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে, যা সরাসরি ছাত্র-জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহাহিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়। কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে।