অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাবেচায় যাঁরা অভ্যস্ত, তাঁদের কাছে ‘লাইভ ওয়েট’ শব্দটা বেশ পরিচিত। এর অর্থ হলো পশুকে জীবন্ত ধরে সেটার কেজিপ্রতি ওজন বিবেচনা করা। অনলাইনে কোরবানির পশুর বিজ্ঞাপনে পশুর ছবির সঙ্গে ওজন, গায়ের রং, মোট দাম, ওজন অনুযায়ী কেজিপ্রতি মাংসের দাম ইত্যাদি তথ্য যুক্ত করে দেওয়া হয়। তাতে দেখা যায়, লাইভ ওয়েটে প্রতি কেজি মাংসের যে দাম পড়ে, বাজারে বা দোকানে তার চেয়ে বেশি দামে মাংস বিক্রি হয়।

এবারের পবিত্র ঈদুল আজহার আগে ফেসবুক আর নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিভিন্ন অ্যাগ্রো ফার্ম কিংবা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কোরবানির পশুর যেসব বিজ্ঞাপন দিয়েছে তাতে দেখা গেছে, লাইভ ওয়েটের হিসাবে গরুর মাংসের কেজি মানভেদে ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা ধরা হয়েছে। অন্যদিকে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে, মাংসের দামের এই তারতম্য কেন?

সহজ করে উত্তর দিলেন গাইবান্ধার দীপ্ত অ্যাগ্রোর কর্ণধার নকীব মাহফুজ। তিনি লাইভ ওয়েটে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৩৯০ টাকা দরে প্রচার চালাচ্ছেন। নকীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি জীবন্ত গরু যখন ওজন দেওয়া হয়, তখন মাংস ছাড়াও গরুর পুরো অংশকেই ধরা হয়। কিন্তু একটি গরুর ৬০ শতাংশের মতো মাংস থাকে, বাকি ৪০ শতাংশ বাদ যায় বা অন্যান্য অংশ থাকে। সেই হিসাবে, কোরবানির পশুর দাম বাজারের মতোই হয়।’

নকীব মাহফুজ আরও বলেন, গ্রাহকেরা হয়তো শুরুতে দামের এই তারতম্য বুঝতে পারেন না। তাঁরা গ্রাহকদের সেটা বুঝিয়ে দেন।

আরও পড়ুন‘ডিজিটাল হাট’ থেকে সরে গেল সরকার, অনলাইনে পশু কেনাবেচায় ব্যক্তি উদ্যোগ৭ ঘণ্টা আগে

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য এবং মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গরুর মোট ওজনের ৫৫ শতাংশের মতো মাংস ও হাড়। বাকি ৪৫ শতাংশ কলিজা, চামড়া, ভুঁড়ি, রক্ত, মাথা, পা ইত্যাদির ওজন। বাজারে যে দাম ধরা হয়, সেটা ওই ৫৫ শতাংশের। কিন্তু লাইভ ওয়েটে দাম নির্ধারণে আস্ত একটি গরুকে ধরা হয়।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মাংস ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ৪০০ কেজির একটি গরু থেকে ২১০ থেকে ২২০ কেজি মাংস হয়। সে ক্ষেত্রে কোরবানির পশুর লাইভ ওয়েটের প্রচারে কেজিপ্রতি দাম ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা হয়।

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, প্রথমে অনেকে লাইভ ওয়েট প্রচার করে গরু বিক্রি করেছিলেন। এই প্রবণতা এখন কমে এসেছে। কয়েকজন খামারি জানান, লাইভ ওয়েটে বিক্রি করা হলেও গরুর ওজন ও দাম উল্লেখ করে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনঢাকায় কোরবানির পশুর হাটে ছোট ও মাঝারি গরু বিক্রি বেশি০৪ জুন ২০২৫

মাংস ব্যবসায়ী ও খামারিরা জানান, জীবন্ত অবস্থায় ৫০০ টাকা কেজি দরে ১০০ কেজি ওজনের একটি গরুর মোট দাম দাঁড়ায় ৫০ হাজার টাকা। গরুটি থেকে মাংস ও হাড় পাওয়া যাবে ৫৫ কেজির মতো। দাম পড়বে প্রায় ৪৪ হাজার টাকার মতো (কলিজা, পা, মাথা ইত্যাদির দাম বাদ দিয়ে)। এর ফলে জীবন্ত অবস্থায় ৫০০ টাকা কেজিতে কেনা গরুর মাংসের প্রকৃত দাম পড়ছে ৮০০ টাকার মতো।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গরুর ওজন মাপা হয় ডিজিটাল স্কেলে। লাইভ ওয়েট পদ্ধতিতে কেজির হিসাব যদি ক্রেতাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, তাতে ক্রেতাদের আর ঠকার আশঙ্কা থাকে না।

আরও পড়ুন১৭ মণের কালো মানিক, অনলাইনে ছবি দেখে খামারে ভিড় করছেন লোকজন০৩ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ বন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত, দোয়া কামনা

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৭ জুন) সকাল ৭টায় এই জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে ইমামতি করেন তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান মাদানী। বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত এই মসজিদে মোট ৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ঈদের প্রথম জামাতে মুকাব্বির ছিলেন মসজিদের অবসরপ্রাপ্ত মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান। জামাত শেষে খুতবা পাঠ করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় দোয়া ও মোনাজাত। মোনাজাতে দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন ছোট-বড় সব বয়সী মুসল্লিরা। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা করা হয় দোয়ায়। 

মোনাজাতে সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহসহ সব মানুষের গুনাহ মাফ চেয়ে দোয়া কামনা করা হয়। যে কোনো বিপদ থেকে দেশকে হেফাজতের জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ঈদুল আজহা শান্তি, ত্যাগ ও সাম্য শেখায়: প্রধান উপদেষ্টা

ঈদুল আজহা: সারা দেশে র‌্যাবের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা জোরদার

এদিকে, আজ সকালে ঈদুল আজহার প্রথম জামাতে অংশ নিতে বিপুলসংখ্যক মুসল্লিদের ঢল নামে। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট-বড় নানান বয়সের মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করতে দল বেঁধে ছুটে আসেন মসজিদে। ঈদের নামাজ শেষে মুসল্লিরা একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। 

ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জানানো হয়েছে, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায়, তৃতীয় জামাত ৯টায় ও চতুর্থ জামাত ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বেলা পৌনে ১১টায়।

ঢাকা/এনটি/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ