শরীয়তপুরে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ
Published: 9th, June 2025 GMT
শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে শহরে বিক্ষোভ করেছেন সংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার মাদারীপুর-শরীয়তপুর সড়কে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
ছাত্রদল সূত্র জানায়, ২০২১ সালে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর ৪ বছর জেলা ছাত্রদলের কোনো কমিটি ছিল না। ৩ জুন ছাত্রদলের শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের ৩৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জাকিরকে। তিনি শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী। সদস্যসচিব হয়েছেন শরীয়তপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল তালুকদার। পরে ওই কমিটির ৫ জন যুগ্ম আহ্বায়কসহ একটি পক্ষ কমিটি বাতিলের দাবি জানায়।
কমিটি বাতিলের দাবিতে একটি পক্ষ বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। নতুন কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও হয়েছে।
আজ দুপুরে ছাত্রদলের একটি পক্ষ শরীয়তপুর সরকারি কলেজ মাঠে জড়ো হয়। এরপর তাঁরা সাদা কাপড় পরে ও মাথায় বেঁধে বিক্ষোভ শুরু করেন। সরকারি কলেজ থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি মাদারীপুর-শরীয়তপুর সড়ক হয়ে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। ঘণ্টাব্যাপী মিছিলের সময় সড়কটির দুই প্রান্তে যানবাহন আটকা পড়ে। তখন শহরে যানজটের সৃষ্টি হয়।
কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল খান প্রথম আলোকে বলেন, কমিটিতে বয়স্ক, বিবাহিত ও পেশাজীবীদের স্থান দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি বাতিল করতে হবে।
আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইসহাক সরদার বলেন, ‘ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। আমরা তৃণমূলের অসন্তোষের কথা কেন্দ্রীয় কমিটি ও বিএনপির জেলা নেতাদের জানিয়েছি। কেউই বিষয়টির সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছেন না। ওই বিতর্কিত কমিটি বাতিল করা না হলে আরও কঠিন আন্দোলন করা হবে।’
তবে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক এস এম জকির প্রথম আলোকে বলেন, ‘সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করতে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। আমরা সবার সহযোগিতায় একটি নতুন কমিটি উপহার দিয়ে বিদায় নেব। কমিটি ঘোষণার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণে অনেকে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। কেউ আবার তাঁদের উসকে দিচ্ছেন। আমরা তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছি। দু-এক দিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র
এছাড়াও পড়ুন:
গিল-সুন্দর-জাদেজার সেঞ্চুরিতে ভারতের জয়ের সমান এক ড্র
ম্যান্ডেটরি শেষ এক ঘণ্টার খেলা যখন শুরু হবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস এগিয়ে গেলেন ভারতীয় দুই ব্যাটসম্যানের দিকে। উদ্দেশ্য ড্র মেনে নিয়ে করমর্দন করা। কিন্তু রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দর ফিরিয়ে দিলেন স্টোকসকে। না, ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্ট জয়ের কোনো সম্ভাবনাই ছিল না জাদেজা-সুন্দরের ভারতের। ৮৯ ও ৮০ রানে দাঁড়ানো দুই ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরির এত কাছে থেকে ফিরতে চাননি বলেই ফিরিয়ে দিয়েছেন স্টোকসের প্রস্তাব।
এরপর যা হলো সেটিকে হাস্যকর বলাই ভালো। প্রায় অন্ধকার হয়ে আসা মাঠে বল করলেন হ্যারি ব্রুক ও জো রুটের মতো অনিয়মিত স্পিনাররা। আর জাদেজা ও সুন্দর মেরেকেটে দ্রুতই তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। প্রথমে সেঞ্চুরিতে পৌঁছালেন জাদেজাই। ব্রুককে ছক্কা মেরেই পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিলেন।
প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা সুন্দর তিন অঙ্ক ছুঁলেন ১৫ বল পর ব্রুকের বলেই ২ রান নিয়ে। এরপরই দুই দলের খেলোয়াড়েরা হাত মিলিয়ে ড্র মেনে মাঠ ছাড়েন। আর তাতে ওভালে সিরিজের শেষ ম্যাচটাই হয়ে গেল সিরিজ নির্ধারণী। চার ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ড এগিয়ে ২-১ ব্যবধানে।
শেষটা অদ্ভুতুড়ে হলেও জাদেজা ও সুন্দরের অবশ্য সেঞ্চুরি পাওনা হয়েই গিয়েছিল। সকালে লোকেশ রাহুল ও শুবমান গিলের বিদায়ের পর শেষ দুই সেশনে কী প্রতিরোধটাই গড়েছেন দুজন। ইনিংস হারের শঙ্কা উড়িয়ে ম্যাচটা ড্র করে ভারতকে সিরিজে টিকিয়ে রাখার পুরস্কারই তো সেঞ্চুরিতে পেলেন দুজন।
ম্যাচটা যখন শেষ হলো ভারতের স্কোর ৪২৫/৪। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে চেয়ে দলটি এগিয়ে গিয়েছিল ১১৪ রানে। স্টোকস যখন প্রথমবার ড্রর প্রস্তাব দিলেন তখন দলটি এগিয়ে ছিল ৭৫ রানে। পঞ্চম উইকেটে ২০৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়া জাদেজা ১৮৫ বলে ১০৭ ও সুন্দর ২০৬ বলে ১০১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আজ শেষ দিনটা ভারত শুরু করে ২ উইকেটে ১৭৪ রান নিয়ে। ৩১১ রানের ঘাটতি নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা দলটি গতকাল শূন্য রানেই প্রথম ২ উইকেট হারিয়ে ইনিংস ব্যবধানে হারার শঙ্কায় পড়ে। তবে গিল-রাহুল সেদিন আর উইকেট পড়তে দেননি। দলটি তৃতীয় উইকেট হারায় ১৮৮ রানে। ভারতের ওপেনার লোকেশ রাহুলকে এলবিডব্লু করেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরির পাননি রাহুল। তবে ১৮৮ রানের জুটিতে তাঁর সঙ্গী শুবমান গিল সেঞ্চুরি তুলেই ফিরেছেন, করেছেন ১০৩ রান। এই সিরিজে যা ভারত অধিনায়কের চতুর্থ সেঞ্চুরি। তাতে এক সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডে দুই কিংবদন্তি স্যার ডন ব্র্যাডম্যান ও সুনীল গাভাস্কারের পাশে বসেছেন গিল।
গিল ফেরেন ২২২ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে। ভারত তখন পিছিয়ে ৮৯ রানে। এরপর আর উইকেট হারায়নি ভারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোরভারত: ৩৫৮ ও ১৪৩ ওভারে ৪২৫/৪ (গিল ১০৩, জাদেজা ১০৭*, সুন্দর ১০১, রাহুল ৯০; ওকস ২/৬৭, স্টোকস ১/৩৩, আর্চার ১/৭৮)।ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৬৬৯।
ফল: ড্র
সিরিজ: ৫-ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ২-১-এ এগিয়ে।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বেন স্টোকস।