দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পেল জামায়াত
Published: 24th, June 2025 GMT
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরে পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর আগে উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ জুন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসি।
ইসির প্রজ্ঞাপনে উচ্চ আদালতের রায়ের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে জারি করা প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন দলীয় প্রতীকসহ পুনর্বহাল করা হলো।
৪ জুন বৈঠক করে জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সেদিন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো.
২০০৮ সালের নভেম্বরে জামায়াতকে নিবন্ধন সনদ দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে ইসির দেওয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট করেন সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি।
চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেন, যা ওই বছরই আপিল হিসেবে রূপান্তরিত হয়। পাশাপাশি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে দলটি।
হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে জামায়াত আবেদন করে, যা ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের তৎকালীন চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। এরপর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দলটির করা আপিল ও লিভ টু আপিল ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর খারিজ করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আপিলকারীর পক্ষে সেদিন কোনো আইনজীবী না থাকায় আপিল বিভাগ ওই আদেশ (ডিসমিসড ফর ডিফল্ট) দেন।
পরে দেরি মার্জনা করে আপিল ও লিভ টু আপিল পুনরুজ্জীবিত চেয়ে দলটির পক্ষ থেকে পৃথক আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ অক্টোবর আপিল বিভাগ আবেদন মঞ্জুর (রিস্টোর) করে আদেশ দেন।
এরপর জামায়াতের আপিল ও লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। গত ৩ ডিসেম্বর শুনানি শুরু হয়। আর প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে দলটি একটি আবেদন করে, যা গত ১২ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন আদালত আপিল ও লিভ টু আপিলের সঙ্গে শুনানির জন্য আবেদনটি ট্যাগ (একসঙ্গে) করে দেন। আগের ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে ১ জুন রায় দেন আপিল বিভাগ।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত বছরের ১ আগস্ট জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে জারি করা আগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপ ল ও ল ভ ট আপ ল ব ভ গ ২০১৩ স ল ব ত ল কর আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
স্নাতকের ফলাফল ছাড়াই স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নিল চবির ফিন্যান্স বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফিন্যান্স বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে গত ১৯ জুন। এর ১ মাস পূর্বে গত ১৯ মে বিভাগটির ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
এ ঘটনায় হতভম্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে সেশনজট দূর করতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি বিভাগটির।
জানা গেছে, বিভাগটির ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা গত ১৯ মে শুরু হয় । ইতোমধ্যে ২৭ মে ও ১৮ জুন আরও দু’টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের অনানুষ্ঠানিক ফলাফল প্রকাশ করা গত ১৯ জুন।
আরো পড়ুন:
চাকসু নির্বাচনের দাবি বিপ্লবী ছাত্রসমাজের
চবির প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ১ জুলাই
তবে ১৯ জুনের পূর্বেই বিভাগটির স্নাতকের অনানুষ্ঠানিক ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সালেহ্ জহুর।
তিনি বলেন, “সপ্তম সেমিস্টারে কিছু রিটেক, ইম্প্রুভ থাকার কারণে অষ্টম সেমিস্টারের ফলাফল প্রস্তুত থাকা সত্বেও আমরা দিতে পারিনি। তবে রেজাল্ট প্রস্তুত থাকায় সেটা খসড়া করে শিক্ষার্থীদের ১৯ জুনের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে ফিন্যান্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নেছারুল করিম বলেন, “আমরা মূলত সেশনজট দূর করতে ফল প্রকাশের পূর্বে স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছি। আর স্নাতকের অষ্টম সেমিস্টারের পরীক্ষার পরই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা মাস্টার্সে প্রভিশনাল এডমিশন পান। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে রয়েছে। তবে সেখানে শর্ত রয়েছে, অষ্টম সেমিস্টারে কোনো শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হলে তিনি স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা দিতে পারবেন না।”
এদিকে বিভাগের অষ্টম সেমিস্টারে একটি কোর্সে অকৃতকার্য হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এক নারী শিক্ষার্থী। অথচ স্নাতকোত্তরের পরীক্ষায় তিনিও অংশ নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী বলেন, “স্নাতকের ফলাফল প্রকাশের পূর্বে স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। কেউ যদি সেশনজট দূর করতে চান, তাহলে কেনো তিনি দ্রুত ফল প্রকাশ করছেন না?”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী