রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরে পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর আগে উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ জুন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসি।

ইসির প্রজ্ঞাপনে উচ্চ আদালতের রায়ের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে জারি করা প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন দলীয় প্রতীকসহ পুনর্বহাল করা হলো।

৪ জুন বৈঠক করে জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সেদিন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো.

সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অতিসত্বর জামায়াতে ইসলামী তাদের নিবন্ধন ফেরত পাবে, সে ব্যবস্থা ইসি গ্রহণ করছে। তবে দলীয় প্রতীকের ক্ষেত্রে একটি দাপ্তরিক প্রক্রিয়া আছে, এ জন্য একটু সময় লাগবে। জামায়াতে ইসলামী তাদের দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ইসির কাছে আবেদন করেছিল। ইসি বিশদভাবে আলোচনা করেছে। যে বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে আছে ‘স্ট্যাটাসকো এনটে’ বলতে কী বোঝায়, অর্থাৎ ২০১৩ সালে জামায়াতের দলীয় নিবন্ধনের সঙ্গে প্রতীক ছিল, সেটি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশ্লিষ্ট ধারাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

২০০৮ সালের নভেম্বরে জামায়াতকে নিবন্ধন সনদ দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে ইসির দেওয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট করেন সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি।

চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেন, যা ওই বছরই আপিল হিসেবে রূপান্তরিত হয়। পাশাপাশি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে দলটি।

হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে জামায়াত আবেদন করে, যা ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের তৎকালীন চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। এরপর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দলটির করা আপিল ও লিভ টু আপিল ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর খারিজ করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আপিলকারীর পক্ষে সেদিন কোনো আইনজীবী না থাকায় আপিল বিভাগ ওই আদেশ (ডিসমিসড ফর ডিফল্ট) দেন।

পরে দেরি মার্জনা করে আপিল ও লিভ টু আপিল পুনরুজ্জীবিত চেয়ে দলটির পক্ষ থেকে পৃথক আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ অক্টোবর আপিল বিভাগ আবেদন মঞ্জুর (রিস্টোর) করে আদেশ দেন।

এরপর জামায়াতের আপিল ও লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। গত ৩ ডিসেম্বর শুনানি শুরু হয়। আর প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে দলটি একটি আবেদন করে, যা গত ১২ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন আদালত আপিল ও লিভ টু আপিলের সঙ্গে শুনানির জন্য আবেদনটি ট্যাগ (একসঙ্গে) করে দেন। আগের ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে ১ জুন রায় দেন আপিল বিভাগ।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত বছরের ১ আগস্ট জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে জারি করা আগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপ ল ও ল ভ ট আপ ল ব ভ গ ২০১৩ স ল ব ত ল কর আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

পাঁচ বছর পর সিপিএলে পঞ্চম শিরোপা জিতল নাইট রাইডার্স

ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) ১৩তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স। আজ গায়ানায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে নিকোলাস পুরানের নেতৃত্বাধীন নাইট রাইডার্স।

প্রথমে ব্যাটিং করে গায়ানা করে ৮ উইকেটে ১৩০ রান। তাড়া করতে নেমে ১৮ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছায় ত্রিনবাগো। এটি সিপিএলে দলটির পঞ্চম শিরোপা। এর আগে সর্বশেষ ২০২০ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স।

প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামের ম্যাচটিতে রান তাড়ায় প্রথম দুই ওভারেই ২৫ রান তুলে ফেলেছিল নাইট রাইডার্স। এরপর আচমকার বিনা উইকেটে ৩৩ থেকে ৫৪/৩-এ পরিণত হয় দলটির স্কোর। সুনীল নারাইন পাঁচে নেমে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করলেও তাঁর ইনিংস খুব একটা স্থায়ী হয়নি। ২ ছক্কার ইনিংস থামে ১৭ বলে ২২ রান করে।

এরপর কাইরন পোলার্ড নেমে ইমরান তাহিরকে ইনিংসের ১৪তম ওভারে তিন ছক্কা মারলে জয় নাগালে চলে আসে রাইডার্সদের। পোলার্ড তাহিরের পরের ওভারে বোল্ড হলেও (১২ বলে ২১ রান) দলকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন কিসি কার্টি-আকিল হোসেনরা।

এর আগে গায়ানার হয়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন ইফতিখার আহমেদ। ডুয়াইন প্রিটোরিয়াসের ব্যাট থেকে আসে ২৫ রানের ইনিংস। নাইট রাইডার্সের হয়ে ২৫ রানে ৩ উইকেট নেন সৌরভ নেত্রবালকার। যা তার দলকে শেষ পর্যন্ত শিরোপাজয়ের ভিত তৈরি করে দিয়েছে।

২০১৭ সাল থেকে টানা চার মৌসুমে সিপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স। তবে টানা সাফল্যের পর টানা ব্যর্থতায় ডুবে যায় দলটি। ২০২১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত মাত্র একবার ফাইনাল খেলা নাইট রাইডার্স অবশেষে পাঁচ বছর পর দেখা পেল পঞ্চম শিরোপার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৩০/৮ (ইফতিখার ৩০, প্রিটোরিয়াস ২৫; নেত্রবালকার ৩/২৫, আকিল ২/২৬)।
ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স: ১৮ ওভারে ১৩৩/৭ (হেলস ২৬, মুনরো ২৩, নারাইন ২২; তাহির ৩/৩৪, শামার ২/৯)।
ফল: ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স ৩ উইকেটে জয়ী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সারা জীবনের লক্ষ্য হলো মৃত্যু’
  • ব্যালন ডি’অর জয়ে মেসির আর্জেন্টিনাকে ছুঁয়ে ফেলল ফ্রান্স
  • চরমোনাইকে ‘ভণ্ড’ বলায় ক্ষুব্ধ ইসলামী আন্দোলন, এ্যানিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি
  • আন্তর্জাতিক আদালতে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট দুতার্তে
  • বিএনপি নেতা এ্যানির বক্তব্যে ক্ষুব্ধ ইসলামী আন্দোলন, প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি
  • বিন্নি চালের পিঠার রেসিপি
  • বগুড়া আদালত চত্বর থেকে পালালেন জোড়া হত্যা মামলার আসামি
  • ফেনীতে দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ড ভ্যানের পেছনে ট্রাকের ধাক্কা, চালকের সহকারী নিহত
  • ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ এখন রড-সিমেন্টের কারবারি
  • পাঁচ বছর পর সিপিএলে পঞ্চম শিরোপা জিতল নাইট রাইডার্স