দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সৌদি আরবের খেজুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কুয়েত প্রবাসী জাকির হোসেন। তার বাগানে ছয় প্রজাতির খেজুর চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি। বর্তমানে খেজুর ও চারা বিক্রিকরে বছরে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা উপার্জন করছেন প্রাক্তন এই প্রবাসী। 

ফুলবাড়ীর স্বজনপুকুর এলাকায় তিন বিঘা জমি নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে জাকির হোসেনের খেজুর বাগান। তার বাগানে বর্তমান প্রায় ৮০টি গাছ রয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি গাছে পর্যাপ্ত ফল ধরেছে। মরিয়ম, আজওয়া, খলিজি, মেডজুল, বাহির ও আম্বার জাতের গাছ আছে। প্রতিটি গাছে পর্যাপ্ত ফল এসেছে। এসব খেজুর এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে পাক ধরবে। সুস্বাদু এই খেজুর প্রতিকেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। 

বাগানের পাশে আরও এক একর জমিতে জাকির হোসেন তৈরি করেছেন খেজুর গাছের নার্সারি। নার্সারিতে তৈরি করেছেন প্রায় ১২ হাজার চারা। এখান থেকে সাধারণ চারা বিক্রি করছেন তিনি ১০০০ টাকা করে এবং কলমি চারা বিক্রি করছেন প্রতিটি ১৫ হাজার টাকা করে।

খেজুর চারার নার্সারি

১৯৯৯ সালে কাজের উদ্দেশ্যে কুয়েতে যান জাকির হোসেন। প্রায় ২০ বছর থাকেন তিনি প্রবাসে। সেখানে সৌদি আরবের বিভিন্ন জাতের খেজুরের বাগান দেখে উৎসাহিত হন তিনি। ২০১৭ সালে তিনি ১২ কেজি পাকা খেজুর দেশে আনেন। সেই খেজুর থেকে চারা তৈরিতে সফল হন জাকির। প্রথমে ১৯টি চারা তৈরি করে তার পরিচর্যা করেন। চার বছর ধরে গাছগুলোর যত্ন নেওয়ার পর ২০২২ সালে তিনটি গাছে প্রথমবারের মতো ফল আসে। পরের বছর আরও নয়টি গাছে ফল আসে। 

প্রথম তিনটি গাছে ৩০ থেকে ৩৫ কেজি করে খেজুর ধরেছিল। পরে নয়টি গাছে গড়ে ৮০-৯০ কেজি করে খেজুর ধরে। বর্তমান প্রতিটি গাছে ১৫০ থেকে ২০০ কেজি খেজুর ধরেছে। বর্তমানে বাগানটিতে তিন জন শ্রমিক কাজ করেন। 

এলাকাবাসী জিল্লুর রহমান বলেন, “আমাদের এলাকায় এই প্রথম সৌদি আরবের সুমিষ্ট খেজুর চাষ হচ্ছে। আমাদের দেশের মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি। আমি জাকির ভাইয়ের কাছ থেকে কয়েকটি চারা সংগ্রহ করেছি। গাছগুলো অনেকটা বড় হয়েছে। আশা করছি খেজুর চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারব।”

কাঁদি ভরা খেজুর

বাগানশ্রমিক রেজাউল করিম বলেন, “জাকির ভাইয়ের খেজুর বাগান তৈরির শুরু থেকে আমি কাজ করছি। গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার অনেক বেশি খেজুর ধরেছে। খেজুর খুবই সুস্বাদু এবং মিষ্টি। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন এই বাগান দেখতে। আমরা এই বাগানে তিন জন কাজ করি। এখান থেকে যা দিন হাজরা পাই তা দিয়ে সংসার ভালই চলে।”

খেজুর বাগানমালিক জাকির হোসেন বলেন, “আমি ১৯৯৯ সাল থেকে কুয়েতে ছিলাম। সেখানে সৌদি আরবের বিভিন্ন জাতের খেজুর চাষ করতে দেখেছি। অনেক বাগান আছে। তখন চিন্তা করি, কেন আমার দেশে এই খেজুর হবে না? দেশে ফিরে প্রথমে পরিত্যক্ত ২০ শতক জমিতে চারা তৈরি করে আবাদ শুরু করি। ভাল ফলনও হয়। বর্তমান তিন বিঘা জমিতে বাগান করেছি। আমি এখানে খেজুরের চারার নার্সারি তৈরি করছি। সাধারণ চারা এক হাজার টাকা এবং কলমি চারা ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। বর্তমান আমি বছরে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার খেজুর ও চারা বিক্রি করছি।”

ফুলবাড়ী উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মো.

শাহানুর রহমান বলেন, “ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রথমবারের মতো জাকির হোসেন নামে একজন কুয়েত ফিরত ব্যক্তি সৌদি আরবের সুমিষ্ট খেজুর চাষ করছেন। এটা এলাকাবাসীর জন্য গৌরবের। এই জেলা ধান ও লিচুর জন্য বিখ্যাত। আশা করছি, খেজুরের জন্যও বিখ্যাত হবে। আমরা নিয়মিত ওই খেজুরের বাগান পরিদর্শন করছি এবং মালিককে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছি।”

ঢাকা/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর খ জ র চ ষ কর করছ ন আরব র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাম্পিয়নরা পাবেন ৬১ কোটি টাকা—প্রাইজমানিতে রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে ইউএস ওপেন

২৪ আগস্ট শুরু হতে যাওয়া ইউএস ওপেন টেনিসে নতুন রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে। প্রথমবারের মতো কোনো গ্র্যান্ড স্লামজয়ী খেলোয়াড়কে দেওয়া হবে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৬০ কোটি ৮২ লাখা টাকা)। পুরুষ একক ও নারী একক—দুই বিভাগের চ্যাম্পিয়নই পাবেন এই পরিমাণের অর্থ।

ইউএস ওপেন কর্তৃপক্ষ বলছে, টেনিস ইতিহাসে এর আগে আর কোনো গ্র্যান্ড স্লামে এত বেশি অর্থ পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়নি। শুধু চ্যাম্পিয়ন নয়, প্রাইজমানি বেড়েছে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর জন্যই।

এবারের ইউএস ওপেনে মোট প্রাইজমানি ধরা হয়েছে ৯ কোটি মার্কিন ডলার বা ৬ কোটি ৭৪ লাখ পাউন্ড। এটি গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালে ইউএস ওপেনের মোট প্রাইজমানি ছিল সাড়ে সাত কোটি মার্কিন ডলার।

মোট প্রাইজমানির তুলনায় বেশি বেড়েছে চ্যাম্পিয়নের প্রাইজমানি। গত বছর পুরুষ একক ও নারী এককের চ্যাম্পিয়ন পেয়েছিলেন ৩৬ লাখ মার্কিন ডলার বা ২৮ লাখ পাউন্ড।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৫ ইউএস ওপেন যুক্তরাজ্যের উইম্বলডনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি প্রাইজমানি দিতে চলেছে। এ বছর উইম্বলডনের মোট পুরস্কার ছিল ৫.৩৫ কোটি পাউন্ড আর চ্যাম্পিয়নরা পেয়েছিলেন ৩০ লাখ পাউন্ড করে; যা ইউএস ওপেনে হতে যাচ্ছে ৩৭ লাখ পাউন্ড।

আরও পড়ুনটেনিসের স্কোরিং রহস্য: কেন ১৫, ৩০, ৪০... আর ‘লাভ’ মানে ‘শূন্য’৩১ জুলাই ২০২৫

চ্যাম্পিয়নের পাশাপাশি আগের তুলনায় বেশি অর্থ পাবেন বিভিন্ন রাউন্ড থেকে বাদ পড়ে যাওয়া খেলোয়াড়েরাও। যেমন ইউএস ওপেনের প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেওয়া খেলোয়াড়েরা পাবেন ১ লাখ ১০ হাজার ডলার, যা গতবারের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। আবার পুরুষ ও নারী দ্বৈতের পুরস্কার ২৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৭.৮০ লাখ মার্কিন ডলার।

২০২৫ ইউএস ওপেনের প্রাইজমানি (মার্কিন ডলারে)

ইউএস ওপেন কর্তৃপক্ষ প্রাইজমানি ঘোষণার বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ইতিহাসে প্রথমবারের মতো’ পুরুষ দ্বৈত, নারী দ্বৈত ও মিশ্র দ্বৈত বিভাগে বিজয়ী দলগুলো ১০ লাখ মার্কিন ডলার করে পুরস্কার পাবে।

২৪ আগস্ট শুরু হয়ে এবারের ইউএস ওপেন শেষ হবে ৭ সেপ্টেম্বর।

আরও পড়ুনপ্রতিবেশীদের কটূক্তি সইতে না পেরে টেনিস খেলোয়াড় মেয়েকে গুলি করে মারলেন বাবা১১ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাপাকে তিন কাজের পরামর্শ দিলেন জেপি মহাসচিব শেখ শহীদ
  • দুবার বিশ্বভ্রমণ করা এই তরুণের প্রিয় দেশের নাম জানলে অবাক হবেন
  • এ সপ্তাহের রাশিফল (৯-১৫ আগস্ট)
  • বিসিবির ১০০০ কোটি টাকা দেখভালের দায়িত্ব নিতে এক শর বেশি আবেদন
  • ‘সাইয়ারা’ সিনেমার সাফল্য: প্রথমবার মুখ খুললেন নায়িকা
  • অন্তর্বর্তী সরকার: এক বছরে সফলতা ও ব্যর্থতা
  • পোষা কুকুরে খেয়েছে পাসপোর্ট, প্রথমবার জাতীয় দলে ডাক পাওয়া খেলোয়াড়ের এ কী বিপদ
  • চ্যাম্পিয়নরা পাবেন ৬১ কোটি টাকা—প্রাইজমানিতে রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে ইউএস ওপেন
  • সার সিন্ডিকেটের যাঁতাকলে পিষ্ট বিরামপুরের কৃষক