জাল সনদে চাকরির অভিযোগ, শিক্ষককে মাউশি’র নোটিশ
Published: 25th, June 2025 GMT
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় এক প্রভাষকের জাল সনদের কারণে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
অভিযুক্ত প্রভাষক সামছুজ্জোহা রঞ্জু ভেড়ামারা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের কম্পিউটার শিক্ষক। তিনি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দিয়েছেন।
এ নিয়ে অধ্যক্ষ ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতির সাথে রেষারেষি চরমে পৌঁছেছে। প্রভাষক সামছুজ্জোহার বিরুদ্ধে কম্পিউটার শিক্ষা সনদ তদন্তে জাল অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর কেন বেতন বন্ধ করা হবে না জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, ২০০২ সালের ১ অক্টোবর তারিখে জাল কম্পিউটার সনদ দেখিয়ে তিনি কলেজে প্রভাষক পদে নিয়োগ পান এবং পরবর্তীতে এমপিওভুক্ত হয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সরকার থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। সম্প্রতি তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ জোর করে বাগিয়ে নেন।
বিষয়টি নিয়ে কলেজেরই অপর প্রভাষক মো.
তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার পর মে ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত এমপিও কমিটির সভায় (১২ মে ২০২৫, ক্রমিক ২৩) সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তে প্রভাষক সামছুজ্জোহা রঞ্জুকে জাল সনদের কারণে (স্টে পেমেন্ট) বেতন/ভাতা বন্ধ করার বিষয়ে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়। জবাবের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
মাউশির নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর ১৭.৯ এবং ১৮.১(৬) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেন তার এমপিও স্থগিতসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না-তা জানতে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে হবে। পাশাপাশি কলেজের বৈধ অধ্যক্ষকে লিখিত ব্যাখ্যা এবং গভর্নিং বডির সভাপতিকে মতামত প্রদান করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রভাষক সামছুজ্জোহা রঞ্জু বলেন, “আমার কম্পিউটার সনদ জাল নয়, এটি ষড়যন্ত্র।”
কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, “মাউশি কর্তৃক নোটিশ পেয়েছি ওই শিক্ষকের কম্পিউটার সনদ জাল। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ প্রমাণ পেয়েছে। তবে কলেজে এই শিক্ষকের জল সনদে চাকরি করার বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কানাঘুষা চলে আসছে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল জ র ল সনদ এমপ ও
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা সঠিক মানুষকে সঠিক সম্মান দিতে পারি না: ইমরুল
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাছে ১২ হাজার টাকায় দুই রুমের বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছেন। যদিও শুরুর দিকে বিসিবি আমিনুলকে নিজেদের ব্যবস্থায় একটি পাঁচ তারকা হোটেলে রেখেছিল। পরবর্তীতে বিদেশি কোচরা যেখানে থাকেন সেখানে থাকার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।
কিন্তু আমিনুল নিজের ইচ্ছাতে বিসিবির কোনো ব্যবস্থায় না থাকার সিদ্ধান্ত নেন। অস্ট্রেলিয়ায় থাকে তার পুরো পরিবার। ঢাকার গেণ্ডারিয়াতে তার বেড়ে ওঠা। এখন সেখানে থাকার সুযোগ নেই। ঢাকায় অল্প কয়েকদিনের জন্য এলে আত্মীয়দের বাসাতেই উঠেন। এবার দেশে আসার পর তাকে দেওয়া হয় বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব। ফলে স্থায়ীভাবেই তাকে কয়েকমাস কাটাতে হচ্ছে বাংলাদেশে।
বিসিবি তার আবাসনের ব্যবস্থা করছে, এমন কথা শোনার পর নিজ থেকে সরে আসেন তিনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কম কথা হয়নি। পরবর্তী ১২ হাজার টাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপাক সাড়া ফেলেছে।
তবে এসবের আড়ালে একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে অসম্মান করা হয়েছে বলে মনে করছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে ইমরুল নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
দীর্ঘ স্ট্যাটাসে ইমরুল লিখেছেন, ‘‘গত কয়েকদিন ধরে একটা বিষয় হয়তো আপনারা অনেকেই দেখেছেন—যে বিসিবি সভাপতি বর্তমানে মাত্র ১২ হাজার টাকার ভাড়ার একটি বাসায় থাকছেন। এই ব্যাপারটা আমার কাছে কোনোভাবেই স্বাভাবিক মনে হয়নি।’’
‘‘একজন মানুষ, যিনি নিজের স্থায়ী ঠিকানা ছেড়ে, এক দেশ থেকে আরেক দেশে এসে, শুধুমাত্র বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এবং দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন, তাঁকে যদি এমন একটি বাসায় থাকতে হয়—তাহলে সেটা কতটা যুক্তিসঙ্গত, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।’’
‘‘আমার জানা মতে, বিসিবি শুরুতে তাঁকে ভালো মানের একটি থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ এবং কিছু দুষ্টচক্র সেই বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি শুরু করে, যা তাঁর আত্মসম্মানে আঘাত করে। আর সেই সম্মানের খাতিরেই তিনি আজ এত সাধারণভাবে থাকছেন।’’
‘‘আমরা দেখে থাকি বিসিবি কত টাকা খরচ করে বিদেশি স্টাফ এবং কোচদের পেছনে, যার হিসাব কোটি টাকায় গড়ায়। অথচ, অন্যদিকে একজন সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমান বোর্ড সভাপতিকে মাত্র ১২ হাজার টাকার একটি হোটেলে রাখা হচ্ছে। আমরা না হয় ব্যক্তি বুলবুলকে মূল্যায়ন না-ই করলাম, কিন্তু তাঁর মেধাকে তো অন্তত মূল্যায়ন করা উচিত, তাই না? নাকি আগের মতো যেভাবে সব কিছু চলেছে, সেভাবেই চলবে?’’
‘‘আসলে আমরা কবে শিখব একজন ভালো মানুষ কিংবা ভালো কিছুর সঠিক মূল্যায়ন করতে? কবে আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেশের উন্নয়নে যারা কাজ করছে, তাদের পাশে দাঁড়াব?’’
‘‘এমন কিছু সংখ্যালঘু মানুষ সব সময়ই থাকে—যারা শুধু দেশের ক্রিকেট নয়, বরং গোটা দেশেরই ক্ষতি করে। যেমনি করে বুলবুল ভাই নিজেই বলেছেন, কিছুদিন পর তিনি চলে যাবেন।’’
‘‘দুঃখের বিষয়, আমরা অনেক সময় সঠিক মানুষকে সঠিক সম্মান দিতে পারি না।’’
ঢাকা/ইয়াসিন